রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

গন্ধের ছোঁয়া - -

তোমার সীমাহীন অভিলাষ, আর নিশীথের
একটানা বৃষ্টি, দু জনের মিলন বিন্দুতে
ভেসে ওঠে শেষ রাতের ঘনীভূত
কুয়াশা, কাঁচা হলুদরঙ্গী
সকালের আলো,
জানালার
পারে
খুঁজে চলেছে কিছু অপ্রকাশিত কোণাগুলোর
কাহিনী।আনাচে কানাচে, এখনো ভেসে
আছে খুবই পরিচিত গন্ধ, অবশ্যই
হাসনুহানার সাথে মিলে মিশে,
তারা একাকার, ঝুলন্ত
ওই ফুল ওয়ালা
চাদরে
কোথায় যেন লুকিয়ে আছে সিক্ত ভাবনার
ভাঁজ ! পুরোনো খোলা আতরের শিশি
ও উদলা দেহের মাঝে সম্ভবত
আছে এক মৌন অনুবন্ধ।
গন্ধের ছোঁয়া ভাবটা
থেকেই যায়
অন্তত।
* *
- শান্তনু সান্যাল




শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬

নিরুদ্দেশ সকাল - -

বেলাশেষের যতটুকু আলো ছিল রেখেছি
বুকের পুরাতন পাঁজরে, কে জানে
কোথায় যে জীবনে, আঁধার
ঘনিয়ে আসে।অবশ্যই
তুমি আবার আজ
স্মরণ করিয়ে
গেছো
কিছু বিলুপ্ত অনুরাগের কাহিনী, নেপথ্যে
আবার শুনি, কার যেন চাপা কান্নার
শব্দ, অঝর বৃষ্টিতে প্রাণ খুলে
জীবন এখন বিদূষকের
ভূমিকায়, নামতে
চায় নিজের
ইচ্ছায়।
তুমিও যায় ফিরে, সবাই যায় ফিরে, এই
ফিরে যাওয়াটাই হলো নগ্ন সত্য,
এখানে নালিশের সংজ্ঞা
নিছক অর্থহীন,
শুধুই জোর
করে
একে অপরে অনিচ্ছায় বেঁধে রাখা, তাই
তুমিও, যতটুকু ভালোবাসা আছে
সামলিয়ে রাখো কিছু নিজের
বুকে একান্ত ভাবে, নিজের
জন্যে, কে জানে কত
যে দীর্ঘ এই ফিরে
আসার পথ,
এখনো
রাত পোহাতে অনেক বাকি, সকালের - -
দূর দূর নেই কোনো হদিশ।

* *
- শান্তনু সান্যাল






রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৬

ভেতরের নিঃসঙ্গতা - -

চলো আজ হেঁটে আসি, শিকলমুক্ত পায়ে।
জনাকীর্ণ শহর হতে বহু দূর যেখানে
পাখিরা বাসা বাঁধে, আকাশটা
ভেসে ওঠে ঝিলের গায়ে।
তোমার মুখচোরা
ওই নিঃশব্দ
আবেগ,
যেন মুখরিত হতে চায় পুনরায়ে।চলো
আজ ভুলে যাই সমস্ত মনের দ্বন্দ্ব,
পাওয়া না পাওয়ার যত সব
হিসেব - নিকেশ, যখন
সব কিছুই এখানে
নিমিষের
খেলা !
তখন কি বা হবে সাজিয়ে অভিলাষের
অফুরন্ত  মেলা।যদিও চারদিকে
ভিড়ের জমাট, তবুও তুমি
কিংবা আমি, নিজের
মাঝে আছি নিজে
খুবই একেলা।

* *
- শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

আঁধারের মলাটে - -

ফিরে গেছে অভিহত রাত্রি, যথারীতি আলোর
আঁশ নামিয়ে রাজপথে। নীরবতা ভেঙে
আবার শহর জেগে উঠছে, যেন
সিক্ত কাপড়ে, ঘাটের সিঁড়ি
বেয়ে উঠছে অজানা
কোনো এক
রমণী।
আবার, সব কিছু নিয়মমাফিক, নতুন দিনের
সূচনা, দেহের গন্ধ এখন আনকোরা,
তুলসী বা চন্দনের অনুভূতি।
সকাল যেন এক মহৎ
নদী, দুটি হাত
বাড়িয়ে
মুছে যায় সমস্ত মলিনতা, এখন যে যার মতন
মুক্তপথের যাত্রী, খুলে চলেছে মুখোশ হতে
শিকলের গিঁট, ওই থুত্থুড়ে পুরোহিত
হতে অসময়ের কচি বৈষ্ণবী,
সবাই যেন কাঁচা আলোয়
এখন নিখাদ সোনা।
ভালোবাসা নাকি
মেহেদির
টাটকা পাতা, না পিষলে রং ছড়ায় না কোনো
ভাবে, কিছু গোপনীয় কাহিনী নিত্যদিনের
মতোই থাক আঁধারের মলাটে, কিছু
উজ্জ্বল কিছু নিবিড় ঘোলাটে।
 
* *
- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬

সাক্ষী দিতে কেউ রাজি নয় - -

সে এখনো বহে যায় জ্বলন্ত পৃথিবীর বুকে,
এক অভিশপ্ত নদীর রূপে, যদিও
যুগ - যুগান্তর ধরে, ঝরেছি
আমি  শুধুই তার
অভিলাষে !
উন্মাদিত শ্রাবণের সাথে। তবুও সে যেন
চেয়ে রয় চির পিপাসিত নয়নে, বলে
যায় নিঃশব্দ চাহনির গভীরে,
জন্ম - জন্মান্তরের সেই
লুপ্তপ্রায় কাহিনী,
মেক্সিকোর
ওই ধ্বংসপ্রাপ্ত বেদিমঞ্চ হতে অধুনা ইরাকে,
আমি খুঁজেছি শুধুই তাকে, কখনো
নারীর চোখের করুণা ধারায়,
কখনো তার মৃত দেহে
নিরীহ শিশুর
অন্তহীন
জীবনের সন্ধান, দেখেছি তার কচি মুখের
ক্রমে ক্রমে ঝলসে যাওয়া। ওই মরু -
দেশ হতে ফিরেছি নিজের ভেজা
মাটির দেশে, ওই উঠোন
পেরিয়ে  পুরাতন
ভাঙা দেউলের
খুব কাছে
তুমি ছিলে যথারীতি ছদ্মবেশে, মুখোস  - -
পরিহিত, তাই চিনতে পারি নি বন্ধু,
খুলেছি মনের দ্বার উন্মুক্ত ভাবে,
সেটা অন্য ব্যাপার যে তুমি
আজ সাতসকালে গেছো
গভীর কুপিয়ে
আমারে।
এখন আমি খুঁজছি পাথরের শহরে একাকী
কাঁচ ভাঙনের সাক্ষী।

* *
- শান্তনু  সান্যাল




মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০১৬

বিস্মৃত খামের গভীরতা - -

নিঃশর্ত কিছুই নেই এই জগতে
তবুও ভালো লাগে মিথ্যে
প্রতিশ্রুতি, কিছু
আঠালো
আব্দার। একটু অদৃশ্য অন্তরে
যদি থাকে গ্রীষ্ম শেষের
অঝর বৃষ্টি, তাহলে
সোঁদা গন্ধের
সুখটা
যেন হয়ে ওঠে এক দীর্ঘকালীন
অনুভূতি। তারা নাকি খুব
কাছের  মানুষ, তাই
বহু দিন পরে
উঁকি দিয়ে
গেছে
উঠোন ছোঁয়া ছিঁটে বর্ষার রূপে,
যখন উদাসীন সন্ধ্যা ছিনে
নিতে চায় জীবনের
সজলতার বাদ
বাকি অংশ,
আমি
খুলে বসি অতীতের ছেঁড়া খাম,
আশ্চর্য্য বৈকি, তোমার
গায়ের ওই লেবু
ফুলের গন্ধ
আজ ও
ভেসে ওঠে আমার বুকের চার -
দিকে।

* *
- শান্তনু সান্যাল


শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬

উড়ন্ত আবেগ - -

তুমি শুধুই দেখেছো দিগন্ত রেখার
ব্যাপকতা, সমুদ্র, পৃথিবী,
অরণ্যের উপর দিয়ে
ভেসে যাওয়ার
আবেগ !
সেই
অনুভূতির পরেও আছে জীবনের
অপরিভাষিত জগৎ, কোনো
দিনে নিভৃতে, যদি সম্ভব
এসো আমার
বুকের
গহীন তলে, ঠিক খুঁজে পাবে তুমি
বিলুপ্ত প্রেমের মরুদ্বীপ, কিছু
মরিচিকার বাস্তবিকতা,
এক বিস্তৃত নোনা
জলের
জলাভূমি, যেখানে বহু কাল ধরে
ঘুমিয়ে আছে এক পাহাড়ি
নদী, জিজ্ঞাসু চোখে
সে চেয়ে রয়
প্রায়শ
উড়ন্ত মেঘের ছায়া, যদি কোনো
দিন ছুঁয়ে যায় ওই মায়াভরা
পরশের কয়েকটি জল
বিন্দু - -

* *
- শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৬

রেশমি আবেগ - -

আলোর স্রোত থামে না কোনো
দিন, আকাশ যতই না
হোক বিষন্নতায়
লিপ্ত, জীবনের
অসংখ্য
স্বপ্ন বহে যায় অবিরল বেগে - -
এক প্রান্ত হতে অন্য দিকে।
বলা বাহুল্য যে এটা
আরশি নগর,
সুদুর
পথে যদিও কোনো প্রতিবিম্ব নেই,
সমস্ত সুজন চেহারা ছিল
খুবই রহস্যময়,
আসুরিক,
অবশ্যই দূরে তারা ছিল মেঘে -
ছাওয়া নীলগিরি। শুধু
আমিই ছিলাম না
এখানে লুন্ঠিত
মুসাফির,
চোখ খোলা মাত্র দেখি সারা - -
আকাশই ছিল খালি, আর
চারদিকে ছিল ছড়ানো
কিছু বিখণ্ডিত
তারকের
অবশেষ। তবুও, চল এক বার
আবার বুনি শেষ রাতের
ওই সুরভিত স্বপ্ন
মালা ! কিছু
রঙীন
সুতো, বুকে রইলো তোমার, কিছু
রেশমি আবেগ, এখনো
চোখে আছে
আমার।

* *
- শান্তনু সান্যাল
 

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

নিরাপদ কোণা - -

জীবনের প্রবাহ যথারীতি বহে যায় আলো -
আঁধার পেরিয়ে সুদুর অজানা প্রান্তরে,
ওই নির্ঝর পথের দুই কিনারায়
শৃঙ্খলাবদ্ধ রয়েছে অসংখ্য
সাজানো সারি সারি
শোরুম আর
মায়াবী
জগতের প্রতিফলন। কিছু পরিচিত চেহারার
মাঝে, আবার দেখি ভেসে উঠছে নানান
ভাবভঙ্গিমার মুখোশ ! জীবন খুঁজতে
চায় ওই ভিড়ে নিজের হারানো
অস্তিত্ব, ঠিক মরুমৃগ সম
চির পিপাসিত টিকে
থাকার অনুভূতি,
জীবনের
লুপ্ত ধারা যখন অন্তঃবিন্দুর খুব কাছে তখন
দেখি তুমি দাঁড়িয়ে আছো, চিরাচরিত
পলাতক ভালবাসার রূপে, নিঃশব্দ
চোখে ভরে আছো, সজল
আবেগের মেঘলা
আকাশ !
এমন সমযে, আমার বেদুইন বৃত্তি, হ্রাসের -
দিকে যায় এগিয়ে, আর আমি ফিরে
যেতে চাই, তোমার হাত ধরে
পুনরায়, সেই ভাঙন -
ভরা জগতে,
যথারীতি
হৃদয় আবার বাঁধতে চায় ধ্বংস নীড়, তাই
জীবন, পুনরায় খুঁজে নিরাপদ কোণা।

* *
- শান্তনু সান্যাল




মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৬

চির দগ্ধতা - -

শেষ প্রহরে যখন গেছে ঝরে সমস্ত
নিশিপুষ্প, তখনও তুমি ছিলে
আবদ্ধ সাংঘাতিকভাবে,
আমার বুকের ওই
পল্লব - বিহীন
পিঞ্জরে !
গভীর রাতের উষ্ণ নিঃশ্বাসে তুমি
যেন মায়াভরা চন্দন বনের
সমীরণ, আহত জীবনে
ঢেলে চলেছ অদৃশ্য
কোনো জাদুর
বশীকরণ !
সুদুর বাঁশের বনে যখন দাবাগ্নির
উত্সন্নতা, তখন তুমি সহসা
প্রাক বর্ষার ধারা, ভিজিয়ে
যেতে চাও আমার
বুকের চির -
দগ্ধতা !

* *
- শান্তনু সান্যাল




রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৬

জাফরানী মুগ্ধতা - -

এটা নয় শেষ প্রান্ত, মরিচারঙ্গী দিগন্তে
এখনো আছে কিছু আলোর ছিঁটে,
সূর্যের ছিল যথারীতি যেন
তাড়াহুড়ো, তাই কিছু
আলোর পরিধান
ফেলে গেছে
সে আকাশের গায়ে। অভিলাষী মন - -
চায় তোমার অপ্রত্যাশিত ছোঁয়া,
এখনো বসন্তের নেশা কাটি
নি অরণ্যে, এখনো
গা ঢাকা দিয়ে
ওই জংলি
নালাটি বহে যায় আপন মনে, মহুয়ার 
বনে, এখনো ভেসে রয় তোমার
চোখের ওই মহাসাগরীয়
রহস্যভরা নীল -
গুঞ্জন, এখনো
পল্লব -
বিহীন বনে যেন লেগে আছে কুমকুম -
রঙ্গী আবেগ।

* *
- শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০১৬

খোলা আকাশের নিচে - -

তার চোখের গভীরে যেন আছে এক
অন্ত:শীল জলধার, তাই জীবনের
মরুপথে বহে যায় অদৃশ্য
এক জলভরা সমীরণ,
আর ক্লান্ত দেহে
সে করে
যায় প্রাণের নব সঞ্চার। তার প্রেমের
বৃত্তে লুকিয়ে রয় ক্রুসবিদ্ধ যিশুর
নীরব করুণা, অদৃশ্য ভাবে
সে বাড়িয়ে দিতে চায়
ত্রাণের দুটি হাত,
যেখানে
এসে সমস্ত স্রোত মিলে মিশে হয়ে ওঠে
বিস্তীর্ণ মানবিকতার প্রবাহিনী,
ওই পারদর্শী সলিলে সারা
জগৎ তখন ভেসে
ওঠে ঝলমল !
মানুষ
তখন শুধুই হাড় - মাংসের এক মানুষ
সংজ্ঞাবিহীন সে তখন এক নিরীহ
শিশু, খোলা আকশের নিচে
উলঙ্গ দেহে, দৌড়িয়ে
যেতে চায় সুদুর
মেঘ ভরা
দিগন্তে,
সম্ভবত, সে খুঁজতে চায় ভালবাসার - -
দীর্ঘস্থায়ী কোনো রঙ্গধনু !

* *
- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

নিজস্ব সম্পদ - -

আমি এখনো অপরাজিত, যদিও
পড়ে আছি বিধ্বস্ত রূপে
ভাঙা বাঁধের তীরে,
সময়ের হিংস্র
স্রোত কবে
গেছে ভাসিয়ে সমস্ত স্বপ্নের ভূমি,
সঠিক তা মনে নেই, তবুও
খোলা আকাশের নিচে
পুনরায় গড়তে
চাই এক
চিলতে প্রেমের পৃথিবী, যেখানে
জীবন, উন্মুক্ত ধারায় বহে
যায় অভিজ্ঞান - পত্র
বিহীন, যেখানে
তুমি আর
আমি অভিন্ন নিঃশ্বাসে যুক্ত এক
সাধারণ প্রাণী, যাদের বুক
এখনো বিশুদ্ধ, মোহর
বা স্ট্যাম্প বিহীন,
অবিরল লয়ে
তারা গেয়ে
যায় মানবিকতার গান, অবশ্যই
চারদিকে আজ, মানুষ নেই
আর মানুষের জন্য
সংবেদনশীল,
তবুও আমি
স্বপ্ন দেখে যাই, সেটাই আমার এক
মাত্র নিজস্ব সম্পদ যাকে কেউ,
কোনো ভাবেই কেড়ে
নিতে পারে না।
* *
- শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

নিঃশব্দ উচ্ছ্বাস - -

এখানে প্রতিধ্বনিরা করে আত্মঘাত,
এখানেই জীবনের প্রতিফলন 
যায় হারিয়ে, সে যেন
এক অবুঝ দ্বীপ
ভেসে যায়
কোন উজানমুখী স্রোতে, আর মৌন
ভাষায় করে যেন  চাপা অট্টহাস।
সন্ধ্যা যখন নেমে আসে
অরণ্য পথ হতে
বুকের অন্ধ -
গহ্বরে,
সম্ভবতঃ, অনিচ্ছায় আমি ফিরে যাই
তোমার হৃদয়ের খুব কাছে।
ওই বুড়ো অশ্বত্থ গাছের 
মাথায় ভরে ওঠে
ক্রমে - ক্রমে
আকাশব্যাপী কলরব, আর তুমি হয়ে
ওঠো নির্বিকার ঘাটে বাঁধানো
নৌকো, আর আমি খুঁজি
নিজের অস্তিত্ব,
তোমার
দেহের অভ্যন্তরীণ কোষ কেন্দ্রকে কিছু
অশোষিত জলের রূপে, যেন আমি
চাই বাঁচতে তোমার নিঃশব্দ
উচ্ছ্বাসে - -

* *








শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬

অন্তর্লিখন - -

এক অনি:শেষ তিয়াসা নিয়ে বুকে -
যখন ভেঙ্গে যায় মধ্যরাতের
গভীর ঘুম ! তখন আমি
খোলা জানালার
পারে খুঁজি
টুকরো টুকরো ভেসে যাওয়া উল্কার
আলো। রাত হটাৎ মনে হয়
খুবই অসহায় খুঁড়িয়ে
খুঁড়িয়ে হাঁটছে,
আর সুদুর
দিগন্ত রেখায় কে যেন দাঁড়িয়ে আছে
ঝাপসা আলোয়, এক মহাকায়
আকৃতি ! কৌতুহল কী
আত্মঘাতী প্রবৃত্তি,
বোঝা খুবই
মুশকিল,
তবুও জীবন ছুঁতে চায় সেই ক্ষিতিজ
পারের ফেকাশে প্রতিভাস ! আর
এই ভাবে আমি বহু রাতের
অন্ধকারে লিখে যাই
অসমাপ্ত
অন্তর্লিখন, রাখতে চাই আলোর বর্ণ -
মালা চির জীবন্ত !

-  শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৬

মরিচা - মুক্ত - -

এখনো ফুরায় নি পৃথিবীর আবর্তগতি,
এখনো তুমি বেঁধে রাখতে চাও
বাউণ্ডুলে মরশুম নিজের
উচ্ছ্বাসের সমীকরণে,
যদিও জীবনের
আরশি
কিছু মলিনতার পথে চলেছে এগিয়ে - -
ভাবনারা কিন্তু এখনো মরিচা -
মুক্ত, চাঁদের আলোয় হয়ে
ওঠে জীবন্ত, সব কিছু
হয় তো ফুরায়
সময়ের
সাথে, আবার ওই ফুরান বিন্দু হতে - -
নতুন যাত্রার সূচনা হয় বৈকি,
সাগরমুখী নদীর ওই ঊষর
বাঁকের ভূমি, যদিও
আজ ঝোপ
জঙ্গলে ভরা, তবুও সে দেখে যায় মহা
শ্রাবণের স্বপ্ন, মিলে যেতে চায়
ওই বিচ্ছিন্ন নদীর সাথে
ঠিক আগের মত
একাকার,
সাগরকুলে যাওয়ার অভিলাষ কী যায়
সহজে, এখানেই কচি আলোর কড়া
নাড়ার শব্দ, আর একরাশ
ফুলের গন্ধ ভরে যায়
বুকের শূন্যতা।

* *

- শান্তনু সান্যাল

 

বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৬

দিবা শেষে - -

এখুনি সন্ধ্যা নামবে পাহাড় হতে ঝপাস করে,
ওই গভীর ঝিলের বুকে, আর দিনের
শেষ আলোয়, জানি আবার
তুমি হয়ে উঠবে
অস্থির,
বেঁধে রাখতে চাইবে দেহের নৌকো, নিজের
রুক্ষ তীরে। আমিও তখন হারাতে
চাই তোমার ওই বুকের
অন্ধকার পথে,
যে যা
বলুক, সে মুহুর্তে আমি যেন হয়ে উঠি এক
জাগ্রত অভিশপ্ত পাথর, তোমার ওই
কুহকভরা পরশে আমার
পাঁকে -ভরা জীবন
তখন করে
ঝলমল, যেন সদ্য সংস্কারিত মরা - পুকুর
জোছনায় ভরে চলেছে ক্রমশঃ। ওই
তোমার স্নিগ্ধ ভালবাসায়,
আমি চিরতরে চাই
হারাতে।

* *
- শান্তনু সান্যাল