তুমি বহু দিনের পরে, আবার দেখেছ আমায় ঘনিষ্ঠ ভাবে, অথচ - অতীতের জলুস নাই আমার কাছে, সব কিছু যায় হারায়ে, সময়ের অনুভাব খুবই নিষ্ঠুর, এমন কি দেহের সাথে মনের পৃষ্ঠতলেও ধরে শ্যাওলা, ওই জং-ধরা আবেগের মাঝে কোথায় যেন এখনো আছে পুরাতন প্রেমের ভূত্বক, ঠিক যেমন দহনের দাগ শরীরে ফেলে রাখে, কিছু ব্যথার অনুভূতি ! - যে কোনো দিনই সহজ মিশে যেতে চায় না চামড়ার সাথে, দেহের মধ্যে থেকে দেহের প্রতি রয় বীতস্পৃহ উদাসীন, তবুও জানি না তুমি কেন আজ ও চেয়ে আছ, আমার দিকে, নিয়ে বুকে অবুঝ তৃষিত অভিলাষ, জানা সত্তেও যে - - আমি এই মুহুর্তে আছি নিঃশেষ জ্বলন্ত কর্পূরের টুকরো, * * - শান্তনু সান্যাল
http://sanyalsplanet.blogspot.com/ art by Vladimir Maksanov
তারা সবাই ভালো আছে, নিজের - সীমাবদ্ধ পরিবেশে, তোমার চোখের নাগালে আছে শুধুই, বিবর্ণ দেয়ালে, ঝুলানো ছেঁড়া ক্যালেন্ডার, ধোঁয়ার কালচে রং, নোংরা মশারি, বর্ণহীন গুটান মাদুর, সস্তা দামের - ফার্নিচার, সমস্ত অভাব অনটনের অপর পারে ও আছে উন্মুক্ত হাসি, তার রহস্য, কি খুঁজে পেয়েছ, তোমার জগতে রয়েছে অনেক কিছু, চার দেয়ালের মাঝে - যেন আকাশের ভব্যতা, রঙীন আলোর জোয়ার, রেশমের মিহি সুতোয় গাঁথা জীবন, তা সত্তেও,আশ্চর্য্য তোমার চোখে এক মুহুর্তের ঘুম নেই, বুঝি না কেন সব কিছু পাওয়ার পরেও তুমি যেন খুবই ফাঁপা - - * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ art by Odilon Redon
সহজ নয় এক ঘাইতে সব কিছু ভেঙে দেওয়া, কিছু বাঁধন অটুট যতই চাও ভাঙতে ততই কুণ্ডলী পাকিয়ে জড়িয়ে রয় দেহ ও প্রাণে, সরল নয় এক পলকে সব কিছু ভুলে যাওয়া কিছু অদৃশ্য ছায়া অনুধাবন করে সারাটা জীবন, ওই শেষ বিচারের রাতে, খুবই মুশকিল গা ঢাকা, তার - ত্রিকাল দৃষ্টি খুঁজে আনে গভীর সাগর হতে, তার নজরে রাজন বা রঁক সব সমান, নিয়তির - দাঁড়িপাল্লা চিরদিনই যুগব্যাপী - কোনো সুপারিশ তখন কাজে লাগে না, * * - শান্তনু সান্যাল
ভাব প্রবণতার সমস্ত বাঁধন খুলে, জীবন চায় সম্পূর্ণ মুক্তি কিন্তু কোথায় যেন, কোন কুহেলি ভরা পথে, অজানা মোড়ের বিন্দু ধরে রাখতে চায় জোর করে, সদর দরজা হতে পলাতক মন ফিরে আসে চার দেয়ালের মাঝে, করে পুনরায় আপস-মীমাংসা, না কোনো প্রশ্ন উঠুক তোমার বুকে না - - কোনো উত্তরের সন্ধান আমার হৃদয়ে, কিন্তু সেটা কি সম্ভব, যত দিন নিশ্বাসের ওঠা নামা বিদ্যমান এই শরীরে, না - চাওয়ার সত্তেও মায়ার সংসার বেঁধে রাখতে চায় অদৃশ্য টানে, মোক্ষ প্রাপ্তির পথ সহজ কোথায় এক জীবনে - - * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ in the mist
আরশি ছিল যথারীতি গভীর নীরব - অভিযোগের কারণ কিছুই নেই, অনেক সময় জীবনে এই ভাবেই ঘটে, তথাকথিত আপন জন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বুঝিয়ে দিতে চায় অজ্ঞতার পরিভাষা, এক অদৃশ্য দূরত্ব রেখা টেনে যায় খুবই সহজ ও হাসি মুখে, অনেক দিন অব্দি জীবন - খুঁজে পায় না ওই উপেক্ষার কারণ, আস্তে আস্তে ভুলে যেতে চায় অনায়াসে অতীতের সব ইতিবৃত্ত, তা ছাড়া উপায় হাতে, কি বা থাকে, এক মুঠো স্বপ্ন কে যেন দিয়ে গেছে রাত্রি শেষে, ভোরের ক্ষীণ আলোয়, বন্ধ করতল - খুলতেই উড়ে গেছে সমস্ত সুখদ অনুভূতি, নিখোঁজ রাতের জোনাকির সাথে, অদৃশ্য পথে, * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ Oil paintings by Brenda Ferguson
ফেকাশে দুনিয়ার সমস্ত জাঁকজমক - যদি হৃদয়ের আকাশ চুপসান শুধুই মেঘে ঢাকা, সব কিছুই উপলব্ধ হাতের নাগালে তবুও সব কিছু কেনা যায় - না, বাস্তব প্রেমের আছে নিজস্ব মূল্য, সহজ নয় নির্ধারণ, কল্পনার বাইরে সে এক অনুভূতি, যার শীর্ষে পৌঁছিয়ে মানুষ হয় ওঠে অমূল্য পরশমণি, মাটির দেহ পড়ে রয় মাটির পৃষ্ঠতলে, পঞ্চতত্বের সাথে ক্রমশঃ যায় গলে, কিন্তু অদৃশ্য ফিনিক, চিরকাল ঘুরে পৃথিবী হতে আকাশ, সমুদ্র হতে বারিদ কণায়, শিশিরের - বিন্দু হতে ফুলের বুকে দিব্য পরাগের সন্ধানে ! * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ art by ivica-petras
যখন ঝরেছে শেষ প্রহরের নিহার কণা, তখন ছিল না একটিও নিশিপুষ্প তরু শাখার গায়ে, ওই মোড়ের আছে নিজস্ব এক কাহিনী, যেখানে মিলেছিলাম তার সাথে, হেঁটেছি কিছু দুরে, শব্দহীন ভাষায়, কথাও বলেছি তার সাথে, ওই নিস্তব্ধ মুহুর্তের স্মৃতি - গন্ধ আজও ছুঁয়ে যায় ক্ষতচিহ্ন, আজও মনে হয় সে যেন লিখতে চায়, অসমাপ্ত কবিতার উপসংহার, ওই ছন্দহীন ভালবাসার গভীরে, বহু বার খুঁজেছি - জীবনের মর্ম, আর প্রতি বার গেছি হারিয়ে নিজের প্রতিচ্ছায়া ! ছায়াচ্ছন্ন অস্তিত্ব নিয়ে বারংবার ফিরে এসেছি নিজের গৃহে, জীবন তখন অবুঝ চড়ই পাখি শুধুই ঠোকরিয়ে মরে নিজের বিম্ব, ফিরে আসে বারেবারে অলিন্দের গা ছুঁয়ে - - * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ fallen emotion
সারা রাত জোছনা, বিন্দু বিন্দু ঝরেছে অবিরল লয়ে, জনশূন্য উপত্যকার বুকে, সারা রাত কে যেন ধরে রাখতে চেয়েছে তপ্ত নিঃশ্বাসের তরঙ - নিজের সিক্ত অধর তীরে, সারা রাত - দেহের অপর পারের জগতে, নিবেছে জ্বলেছে বহু অভিলাষের শিখা কম্পিত সুরে, তার পরশের সংবেদনে ছিল প্রথম বৃষ্টির অনুভূতি, ওই ভিজা মাটির গন্ধে খুঁজে পেয়েছে মন এক অফুরন্ত আবেগের অভিজ্ঞতা, কয়েক দশকের পরিতৃপ্তি, সারা রাত ভাবনার গন্ধ কোষ হতে ঝরেছে অনন্ত প্রণয়ের সুরভি ! * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ art by laurine-baumgart
পারস্পরিক সমীকরণের বাইরেও আছে, কিছু চেনা অচেনা জীবন্ত জ্যামিতি, কোনো এক সন্ধ্যার ঝাপসা আলোয়, যদি সম্ভব খুঁজে দেখো সজল চোখের গভীরতা, আমার অভিলাষের - পরিধি, কেন এত উন্মুক্ত প্রায়ই ভাবে মন, কোনো এক মুহুর্তে যদি সম্ভব বুঝে দেখো ব্যথিত হৃদয়ের মৌন কবিতা, তোমার প্রেমের পরিণতি কিছুও হতে পারে, বিরহের দুঃখ শুধুই নয় অন্তিম ব্যথা ! দ্বৈত বিষণ্নতার বাইরে ও আছে কত - - যে অদেখা সিক্ত স্পর্শানুভূতি, যদি সম্ভব কোনো এক দিন সংকুচিত বৃত্তের বাইরে এসে দেখো জীবনের বিভিন্নতা, * * - শান্তনু সান্যাল
সব কিছুই যখন নিমিষের খেলা তখন এত মান অভিমানের কিসের জন্য, পৃথিবী আকাশ, সাগর মরুভূমি সমস্ত কিছু রইলো ক্ষণিক মৌন অবস্থায়, যখন অন্তিম নিঃশ্বাস, ছাড়ল দেহের আঙুল, আপন জনের ওই হাটে ছিলাম আমি তখন খুবই অপরিচিত, নেয়া দেয়ার চুক্তি গেল - এক পলকে ভেঙে, ফিরে আর - চায় নি কেউ, সন্ধানের প্রশ্ন ওঠে কোথায় সবাই তখন নিজের মাঝে যথারীতি গেছে হারিয়ে, প্রকৃত সত্যের আগে সব কিছুই ছিল পরিষ্কার কাচের মায়া ধরতে কি কেউ পারে, দৃষ্টির সর্বশেষ প্রান্তে ছিল কেবল এক সঘন ভাসন্ত কুয়াশা ! তার তথাকথিত আত্মীয়তার রেশমী সুতোর সৃষ্টি খুলে গেছে ক্রমশঃ, তীব্র বেগে এলোমেলো ভাবে - - * * - শান্তনু সান্যাল
নিজস্ব সহিষ্ণুতায় আমার ভীষণ - সম্ভ্রম ছিল, জানি না আজ, কি যে হলো, চোখের বাঁধ সহসা ভেঙে গেল, বুকে জমানো মেঘের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ছিল, জানি না আজ, সন্ধ্যার আবছা আলোয় কি যে হলো দমকা হাওয়ার সাথে নয়নকোণ হতে বিন্দু বিন্দু ঝরে গেল, জীবনের ঊষর ভূ - ভাগের জন্য আমার হৃদয়ে খুবই দুর্বলতা ছিল, আজ - রাতের রহস্যময়ী আঁধারে জানি না কি যে হলো, তার প্রণয়ের প্লাবনে সমস্ত দগ্ধ ভাবনার কোটর ক্রমে ক্রমে ভরে গেল - - * * - শান্তনু সান্যাল
মৃগতৃষা অথবা জাগরস্বপ্ন, যা কিছুই ছিল তার ওই প্রণয়ী আভাস, জীবনের পথে, কিছু ক্ষণের জন্য ভরে গেছে পরিত্যক্ত ভাবনার আগ্নেয়গিরি গহ্বর, শেষ প্রহরের সুরভিত - জাগরণ কিংবা চোখের পাতায় শিশিরের ফোঁটা, যা কিছুই ছিল তার বুকের কাছে আসা - দেহ ও প্রাণের দহনে, কিছু মুহুর্তের জন্য ঝরিয়ে গেছে অনাহুত বৃষ্টি ! জীবনের পরিভাষা হঠাৎ ভাবে গেছে সে বদলিয়ে - - * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ reflection of depth
কিছু স্মৃতির ছায়া ঘিরে রয় পার্শ্ববর্তী দেয়ালে, কিছু ভালবাসার ছবি অ্যালবামের বাহিরে খুঁজে সতেজ নিঃশ্বাস, অরণ্য নদীর কিনারা ছিল হয়' ত - - তাদের অনুরাগের সীমানা, গ্রীষ্মকালের শিখরে ক্রমশঃ গেছে সঙ্কুচিত হয়ে, অভিযোগের কারণ এই মুহুর্তে কিছুই নেই, কপালের ভাঁজে গেছে গুটিয়ে, সমস্ত কুটুম্বিতার দাবি ! ধরে রাখতে চেয়ে ছিলাম খুব করে, বুকের অভ্যন্তরে, তাদের ওই তথাকথিত ঘনিষ্ঠতা, শীতের কচি রোদের মত কবে যে উধাও নিজেই জানি না, খোলা করতলে ছিল কেবল কিছু জোনাকির উজ্জ্বল ছাপ, আঙ্গুলের ফাঁক হতে বোধ হয় বেরিয়ে গেছে আলোর - - পাখি ডানা মেলে, বহু দূর কুয়াশা ভরা অরণ্য পথে, * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ memory on wall
যখন শান্ত সমস্ত অতিরিক্ত অভিলাষের অনুরণন, জীবন খুঁজে পায় আসল মুক্তির পথ, যখন সমস্ত দুঃখ যন্ত্রণা পৌঁছায় সীমান্ত পার, হৃদযে তখন ভাবনার নিস্তরঙ্গ নদী, বহে যায় সুদুর - অজানা সাগর সঙ্গমে, যখন মনে সমস্ত নেয়া দেয়ার খাতা সহসা ফাঁকা, জীবন হয় ওঠে হঠাৎ অর্থপূর্ণ, সরে যায় ক্রমশঃ মায়ার জগৎ, চেনা অচেনা সমস্ত চেহারা তখন উদ্ভাসিত, অভিযোগের তালিকা তখন অকস্মাৎ রিক্ত জীবনের তরী বহে যায় অজানা কুলের - পথে - - * * - শান্তনু সান্যাল
যাদের যা দাবি ছিল, নিল আদায় করে, - জীবনের পড়ন্ত বেলায়, অসুস্থ ভালবাসা বসে একাকী আরামকেদারায়, চেয়ে রয় শুন্য আকাশ, সুদুর পাখিদের ঝাঁক উড়ে চলেছে সাগর পার নিজের গেহে, সূর্য্য, যথারীতি কিছু ক্ষণ আগে করেছে দস্তখৎ আঁধারের সাথে, অস্বাভাবিক কিছুই নয়, সবাই নথিভুক্ত নিজের অগ্রাধিকার তালিকায়, শুধিও না আমায় হৃদয়ের গভীরতার কাহিনী, বলার এই মুহুর্তে কিছুই নেই কেবল এক গাঢ় নীল রঙ্গে, হারিয়ে যেতে চায় জীবন আস্তে আস্তে, থামানো নিঃশ্বাসের সাথে, অতল গন্তব্যের দিকে একাকী ! * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ White Vase With Flowers
আলো আঁধারের মাঝে কিছু ভেসে ওঠা রঙের খেলা, তার আনত চোখের নীচে, প্রগাঢ় অভিলাষের জোনাকিরা খুঁজে বেড়ায়, নিরিবিলির বুনো ঝোপ, কিছু আখেটক অদৃশ্য পরশ, ছুঁতে চায় হৃদয়ের নরম পৃষ্ঠতল, কুয়াশাবৎ অন্ধকারে সে ক্রমশঃ ধরে রাখতে চায় বুকের খুব কাছাকাছি, তার নিঃশ্বাসে আছে, উন্মাদিত অরণ্য ফুলের সম্মোহন, সমস্ত অস্তিত্ব তখন খুবই অসহায়, মাঝি বিহীন ভাবনার - - নৌকো, ডুবে যেতে চায় এমন সময়ে, ঠিক তার বুকের মাঝ তরঙ্গে, পূর্ণ উৎসর্গে, * * - শান্তনু সান্যাল
অতিসরল ভাবে আরশির প্রতিফলন বুঝিয়ে গেছে পুনরায় একবার, উদলা দেহের বাস্তবিকতা, তাই বিষণ্ণ মনে, জীবন খুঁজে চলেছে, মেঝের উপরে ছড়ানো ছদ্ম পরিধান, আর প্রমাণের প্রয়োজন নাই, এখান থেকে আত্ম - সংশোধনের পথ যায় মুড়ে, এখন এই সন্ধিক্ষণে দর্শনের - - পাতায় নিজেকে লুকিয়ে রাখা সহজ নয়, সমস্ত হিসেব নিকেশ আগেই লিপিবদ্ধ, শুন্য দেউলের সোপানে, পা রাখতে - গিয়ে দেখি, মুখ্যদ্বারে দাঁড়ানো পুরোহিত বলে - ঠাকুর এখন তন্দ্রাগত, যদি সম্ভব, ব্রহ্ম মুহুর্তে এক বার এসো, হয় ' ত খুঁজে পাবে হারানো পরিচয়পত্র, আমি অবাক চেয়ে থাকি তার গুরু গম্ভীর চেহারা, খুঁজে পাই হারানো মুখোশের ছায়া - - তার অর্ধ উলঙ্গ দেহের আশেপাশে স্পষ্ট ভাবে ! * * - শান্তনু সান্যাল http://sanyalsplanet.blogspot.com/ art by georgia p