মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০১০

বোবা মানবতা - -

চেয়েছিল তারা এক সুন্দর ছবি আঁকতে
পদ্ম ভরা পুষ্করিণী, মধু মালতির
স্নিগ্ধতা, বিধর্মী বলে সরিয়ে
দিলে সহজে হাত, শরতের
পূর্ণ চন্দ্র, সিউলির
মাদকতা, নদ
নদীর উত্তল
তরঙ্গে,
মায়ের ভাষা তারা ভাসিয়ে এলো ব্যথিত
হৃদয়ে, ভাঙ্গা জীর্ণ শীর্ণ স্বপ্নের মন্দিরে
জানি আর সান্ধ্য প্রদীপ জ্বলে না,
জোছনা রাতে সুনেছি ঘৃনা
ঝরে কিছু চিত্রকর
অবশেষে,
 রাস্তার
মাঝে
মারা যায় প্রতিবেশী বন্ধুর হাতে, ভালই
হত যদি মায়ের ভাষা মৌন হয়ে
যেত এক দিন, বোবা মানবতা
বুকে লয়ে কত দিন দুনিয়া
বাঁচবে জানি না - -
- - শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০১০

সান্ধ্য প্রদীপ - -

সান্ধ্য প্রদীপ জ্বলে আজ ও অজানার
পথ চেয়ে, কোন উজানের পথে
হারালে প্রণয় নৌকা বেয়ে,
 শঙ্খ বেলায় ঈশান
কোনে মেঘের
উত্পাত,
পুনরায় কাটবে যামিনী শুন্য গগন
চেয়ে, সুদূর আম্রকুঞ্জে, প্রবাসী
পাখিরা ফিরে গেছে, নিরব
কোকিল, হিয়া কম্পিত
বিলম্বিত লয়ে, স্মৃতি
এখনো গাহে
প্রতিশ্রুতি  
ঈমন
রাগে, ভালোবাসার কিংশুক কুসুম
ঝরেছে অসময়ে - -
- - শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০১০

কাচা প্রেম


তোমার কাচা প্রেম, ফুলদানি তে সাজিয়ে
ভুলে গেছি বহু দিন,
কখন যে রজনীগন্ধা শুকিয়ে
হারিয়ে গেছে স্মৃতি গন্ধ বাতাসে
ঠিক ঠিক আন্দাজ করা আজ মুশ্কিল,
বাসিফুলের সাথে নদীর ধারা
কখন যে হলো দিশাহারা
না আমিই জানি না তুমিই খোঁজ নিলে,
ফুলদানির উদাস মুখ
আর সইতে পারি নি
গত শীতের এক নিঝুম সন্ধ্যায়
হটাত দেখি সে দরজায় হাজির
হাতে সদয় প্রস্ফুটিত নিশিগন্ধা
মুখে রহস্যভরা হাসি
সে ফুলদানি নিজের হাতেই
সযত্নে সাজিয়ে গেল,
বাসী ফুলের গন্ধ,তুমিই জানো-
ব্ত্রিষ্ণা ভরিয়ে আনে বাতায়নে //
--- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০১০

অদৃশ্য রঙ্গমঞ্চ


অদৃশ্য রঙ্গমঞ্চ,মুখোশের খেলা
শ্রোতা দর্শক বিহীন, গভীর অন্ধকার
মাঝে মধ্যে অসামান্য চিত্কার
ধারাবাহিক নাটক, রাতের শেষ প্রহরে
রক্তিম ভোরে -
শ্বেত লাল রঙের কনা
ছেঁড়া অধবস্ত্র অশ্রু বিন্দু
নিভানো সিগারেট,রিক্ত মদ পাত্র
সাত সকালে, যত সব বিশ্রী গল্প
অভিব্যক্তি, অনুভূতি, সান্ত্বনা
পুলিসের ডায়রি,
সূর্যের আলোয় অভিনেতার
মহিলা কল্যাণ গৃহের উদ্বোধন ---
--- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০১০

ফিরে তো আর কেও দেখি নি --

ফিরে তো আর কেও দেখি নি --


ময়লা মাখা ছেঁড়া কাপড় জামায়

সে রাস্তায় দাড়িয়ে যুগান্তরে

এক সুগঠিত পুরুষ হলো

কত যে পূজার মিছিল, জিন্দাবাদ -

মুর্দাবাদ, দমকলের সায়রান

হরিবলের ধ্বনি, কাছে দিয়ে

মধুরীম কিংবা বিতৃষ্ণা ভরা দিন

কি ভাবে সরে দূর হলো সে

নিজেই জানে না --

বস্তির নর্দমা, চেনা গন্ধ

কাজের মেয়েদের ইশারা

নিম্নাঙ্গে অস্থিরতা,

ঘুপ আঁধারে সে ও মধুপান

করতে চায়, কিসের অশ্লীলতা

যৌবনের পরিভাষা

কোনো শ্রেণী ভেদ জানে না

স্বপ্নে শুধুই তোমাদের দাবি কেন ?

--- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০১০

পুরাতন এলবাম

অলস পড়ন্ত বেলায় শীতের শিহরন সহজে


বেড়ে যায়, মধুর স্মৃতির ফুল ফোটানো শাল

গায়ে দিতে গিয়ে, ভালবাসা যেন ধুসর হারানো

পুরাতন এলবাম রঙ্গ বিহীন,আবছা- আবছা

বয়েসের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায় প্রণয়ের পৃষ্ঠে,

অকস্মাত বুকের ভিতরে কম্পন বেড়ে যায়

হাত দিতে যেন ভয়, যদি ছিড়ে যায় অযত্নে,

সাঁঝ নামতে না, নামতে ভগ্ন মন্দিরে জানি না

কোন অপরিচিতা প্রদীপ জ্বালিয়ে নিমিষে

সরে যায়ে রঙ্গিন মেঘের আড়ালে---

নিশীথের দাপাদাপি, মধ্যরাত্রি বিনিদ্র চোখে

পুষ্পিত শালের সব কুসুম ঝরে, বুকে আবরণ

আর দরকার হয় না,প্রেমের লেপে হারিয়ে যেতে

ভালই লাগে //

---শান্তনু সান্যাল

নিস্তব্ধ যামিনী

নিস্তব্ধ যামিনী, পিকাসোর একাকী গিটারিস্ট


মনের নিরবে আত্মমন্থন করে যায়

মোনালিসার হাসি ঝরে কোন-

সেউলি বনে, মাইকেল এঞ্জেলোর তুলিকা

কাচা ঘুম ভাঙ্গা শিশুর রোদনে, কিছু অর্থ

খুঁজে বেড়ায়, যিশুর সুপ্ত পলকে শিশির কনা

বিন্দু বিন্দু ঝরে যায়

সারি সারি সহস্ত্র মরিয়ম, হাতে মোমবাতি

ঝির ঝির আলোয় কোথায় যেন

মৌন মিছিল হেটে চলেছে-

এলোমেলো রূপে বৃদ্ধা,রুগী, পঙ্গু, জর্জরিতমুখ

সকাল এখন বহু দূর মরু প্রান্তে

রাজপথের দুই ধারে অর্ধ উলঙ্গ পুরুষ বৃন্দ

অবাক চেয়ে রয়েছে

পূর্ব আকাশ শ্যাম রক্তিম

চিরকুট মেঘের দল ছড়ানো চার দিগে //

---শান্তনু সান্যাল
পিকাসোর সেই একাকী গিটারিস্ট


নিরব ননের গভীরতায় মোনালিসার

হাসির রহস্য নিয়ে আত্মমন্থন করে যায়,

শেষ প্রহরে মাইকেল এঞ্জেলোর তুলিকা

সহসা জেগে ওঠে কাচা ঘুমের শিশুর

ব্যথাভরা রোদনে, যিশুর দুই সুপ্ত চোখে

অশ্রু, বিন্দু বিন্দু ঝরে যায় সারা রাত

দেখি নিস্তব্ধ রাজপথে সারি সারি

মরিয়মদের হাতে মিট মিট মোমবাতি,

মৌন মিছিল হেঠে চলেছে অদৃশ্য দিগন্তে

এলোমেলো বৃদ্ধা,পঙ্গু,রুগী, জর্জরিত মুখ,

সকাল এখন বহুদূর কোন মরুপ্রান্তে

রাস্তার দুই ধারে রোমনযুগীন অর্ধ উলঙ্গ পুরুষ

অবাক চেয়ে রয়েছে,

কোন দেশের যাত্রী, কী যা চায়-

---শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০১০

স্পর্শ

নিস্তব্ধ রাত্রি, নিশিডাক সুনেছি গল্পে


ছায়ারা ও কথা বলে জেনেছি

তোমায় ভালোবেসে,

নিজের প্রতিবিম্বে অনন্য ছবি

দেখেছি বিভোর মনে,

নিশিগন্ধের স্পর্শ পেয়েছি

বহুবার অন্তর বাহির অঙ্গে,

উভয় লিঙ্গী অস্তিব নিয়ে

মনের দ্বন্দ ভুগেছি

তোমায় ভালোবেসে,

---শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০১০

তোমাদের জন্য

তোমাদের জন্য আজ বাঙালিদের এই দশা


শরত -রবীন্দ্রের কুমুদিনী,সৌদামিনী

দিল্লি,নয়ডার বাংলোতে ঝি আর মুম্বাইর

মধুশালায় বার গার্ল হয়ে জীবন যাপন করে

তোমাদের জন্যই আজ লজ্জিত বাঙালর মাটি

তোমাদের জন্যই আজ আমরা হাস্যপদ

শুধুই বাস্তুহারা ছাড়া কিছুই নই

কী বিষাক্ত বিচারধারা ছড়ালে চারদিকে

ছিন ভিন্ন এক পূর্ব উন্নত সমাজ

সবুজ শ্যামল সেউলি পদ্ম সাজানো

সেই বঙ্গ ভূমি তে লাল রঙ্গ মাখিয়ে

যা উন্নতির শিখরে নিয়ে গেলে

তাহার প্রতিধ্বনি সাড়া দিয়ে যায়

বঙ্গ বনিতাদের গায়ে

তাই দেখি বিবেকানন্দ,বঙ্কিম, অরবিন্দ

কত অজানা বাঙালির চোখে

শুধুই অশ্রু ঝরে যায় //

---শান্তনু সান্যাল

সরিসর্প

আমরা বিক্ষিপ্ত,বিস্মৃত,কলঙ্কিত,


হৃদয়ে কুষ্ঠ বয়ে যাই

গায়ে গলিত অজস্র দুর্গন্ধ

বুকে যুগ যুগান্তেরের শ্লেষ্মা

ত্বকে সর্ব অঞ্চলে পোড়ানো দাগ

অস্থির নলিকায়ে বিশ প্রবাহিত

সমাজ বহিস্কৃত ধর্মবিহীন

নাভির অন্তরে আগ্নেয়গিরি

তোমরা সবাই ভ্দ্র ও সুসংস্কৃত

আমাদের জন্য নিজের কুলীনতা

বাদ দিতে যেও না

শুধুই নগ্নতা,পাশবিকতা

চিরদিনের আঁধার

সূর্যের উদয়- অস্তের প্রশ্নই ওঠে না

গহন কুহাসা মেরুদন্ডবিহীন

আমরা সরিসর্প সহজে বিলুপ্তি পাই না

বস্তির শাখা প্রশাখাযে

অরণ্য পার্বত্যে সৃষ্টির কুত্সিত সত্য

যদি পৌরষবাহী তোমাদের আত্মা থাকে

তাহলে এই জীবন অঙ্গীকার করে দেখো /

--শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০১০

তারা পৌষ মানে না


চাঁদ,পুষ্প,আকাশ, শব্দের জাদু
সবাই শুধুই স্বপ্ন দেখে যায়
জীবনের বৃষ্টি ছায়ার প্রান্তে
অভিশিপ্ত হ্রদয়ের মরুভূমি
নষ্ট মেয়ের ভাগ্য হয় যায়
লাঞ্ছনা,কলঙ্ক সমাজপতিদের
থু থু গায়ে মেখে সে এক
দিন, বহিস্কৃতবাজারু হয়ে যায়
নষ্ট ছেলেদের যে কিছুই
হারায় না, জন্মগত তাহারা
নষ্ট কর্তা,বহুগামী স্রোত
যৌন সমাগমের মহাসাগর
কোনো ভেদ বিভেদ নাই,
পুরুষালি জগতে প্রাকৃতিক
অপ্রাকৃতিক বলে কিছুই নাই
দেহ তৃপ্তির সেই বন্য আকাঙ্খা
কোনো বিচারধারা মানে না
নদীর শুধুই চায় ভাঙ্গন
কেবল ভাঙ্গন, তটভূমির বেদনা?
তার লেনাদেনা কিছুই না
সে হাহাকারে আনন্দ ভোগ করে
তারা পৌষ মানে না //
--শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০১০

অনাম গর্ভে, অনাম শিশুর ভ্রুণ



অনাম গর্ভে, অনাম শিশুর ভ্রুণ
অবৈধ্য কিছুই না চিন্তাধারার উচ্শৃঙ্খলতা
অজ্ঞাত বিজার্পণ তিথি, বর্ষা শেষে কিংবা
শরত আগমনে, নিঝুম সন্ধ্যা অথবা শেষ নিশীথে
সহসা কোন মুহুর্তে স্খলন ঘটল
তারা আর সে সব জানে না
দুজনই বিনিদ্র আঁখি সারা রাত
জোছনা বা অমাবস্যা ছিল কে জানে?
স্নিগ্ধ সকালে আয়িনার সমুখে
সারা দেহ পরগন্ধে এলোমেলো
বুক, নাভি, বক্ষ স্থল,কটিপ্রদেশ, জঙ্ঘা,
লোম ছিদ্র পর্যন্ত ছিল মধু প্লাবিত
নতুন এক কবিতা ছড়ানো যেন
অঙ্গে অঙ্গে, ভাব তরঙ্গে,উলঙ্গ দেহে ,
এক গর্ভস্থ অনন্য পরিতৃপ্ত
অপ্রাকৃতিক কিছুই না
সৃষ্টির রচনা অবাধ্য পূর্ব অগ্রসর
চোখের সজল উর্বর ভূখন্ডে
প্রেমাঙ্কুরের কিছু কিশলয় উঁকি দিচ্ছে
মনের রিক্ত গর্ভে প্রেমের শিশুর জন্ম
প্রসব বহুদূর,শুধু এক মধুরিম অনুভূতি
---শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০১০

প্রতিধ্বনি: হারানো দিনগুলো

প্রতিধ্বনি: হারানো দিনগুলো: "অতীতের হারানো দিনগুলো আবার ভীড় করে ঈশান কোণের মেঘ ঝরে যেতে চায় যেন কোন অজানা বহুদূর, সদ্য নবোদিত পূর্ণ চাঁদের দেশে, অরন্য ঘেরা আদিবাসীদের..."

প্রতিধ্বনি: পৃথিবী স্থির ছিল এতক্ষণ

প্রতিধ্বনি: পৃথিবী স্থির ছিল এতক্ষণ: "তুমি এলে না পৃথিবী স্থির ছিল এতক্ষণ চাঁদ ছিল আকাশে মহাশুন্য সারা রাত সাগরের ঢেউ বুকে স্থির ছিল এতক্ষণ তুমিএলে না রাত্রি প্রহর অশেষ রয়ে গে..."

প্রতিধ্বনি: পরিপূর্ণ প্রাপ্তির আশায়

প্রতিধ্বনি: পরিপূর্ণ প্রাপ্তির আশায়: "পরিপূর্ণ প্রাপ্তির আশায় প্রেমের মৃত্যু আমি চাই নি নগ্ন শরীরে হাড় মাংস ছাড়া ছিল এক অমূল্য পৃথিবী তুমি তা আজ ও স্পর্শ কর নি অপারিভাশিত যৌন ..."

প্রতিধ্বনি: অঝর বৃষ্টি

প্রতিধ্বনি: অঝর বৃষ্টি: "অঝর বৃষ্টি ,ভিজেছে রাস্তা ঘাট যুগল পায়রা, খুঁজে বেডায় জানালার আডাল কাঁচের আবরণ পারদর্শী উঁকি দিয়ে যায় বিলুপ্ত স্মৃতি উদাসীন আকাশ সার..."

প্রতিধ্বনি: আত্মসাত

প্রতিধ্বনি: আত্মসাত: "সে এক রহস্যময়ী জলধারা, অগ্রগামী- উজানমুখী  আমি ভাঙ্গনের বেদন, বুকে নিয়ে শুধুই চেয়ে থাকি // বুঝি না স্রোতের মৌন অভিলাষ, প্রেম কিংবা অভিমা..."