শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

পরিপূর্ণতার দিকে প্রস্থান - -

সোদক রাত্রি, বৃষ্টিময় আঁধার, জলপূর্ণ  অভিলাষ, 
আলোপতঙ্গ খুঁজে চলেছে আত্মাহুতির পথে 
উপাসনাবেদি, ওই উত্সর্গের শীর্ষে 
আছে অমূল্য ভালবাসা, দেহ 
ও আত্মার সেই মিলন -
স্থলে, অসমাপ্ত
কাব্যের 
পংক্তি করে আহ্বান, উদ্ভাসিত স্বরলিপি গাহে প্রণয়
গান, নিশীথ রাতের নীরবতা ভেঙ্গে ভেসে 
উঠে দ্বৈত শরীরের অভিন্ন প্রাণ, 
সদ্য উদিত অর্ধচন্দ্র করে 
সুধাময় জোছনার 
অমূল্য দান,
হৃদয় রন্ধ্রে ভরে উঠে জীবনের মধুর সঙ্গীত, সারা 
রাত জেগে রয় অন্তর্মনের পুষ্পিত উপত্যকা,
সম্পূর্ণ রাত্রি সেজে রয় সুরভিত দেহ 
ও মনের অনুষ্ঠান, প্রতি মুহুর্তে 
নব আবিষ্কার, প্রতি পলে 
অর্ঘ্যের চরম বিন্দু, 
শেষ প্রহরে 
সর্বত্র বলিদান, প্রেমের পরাকাষ্ঠা, অনন্তকালের পথে 
জীবনের প্রস্থান - - 
- শান্তনু সান্যাল


অসমাপ্ত গান - -

তার নীরবতা যেন প্রাচীর ঘেরা প্রস্তর -
নগর, বুকে জমিয়ে আছে কত যে
রূপকথা, চোখের ওই আলোর
স্রোত ! ভাসিয়ে নিয়ে
যেতে চায়
জীবন বহুদূর, ঐতিহাসিক পৃষ্ঠের বাইরে,
যেখানে ঝরে হাসনুহানা সারা রাত,
আর সুরভিত জোছনায় জীবন
খুঁজে পায়, তার প্রণয়ের
বিরল সন্ধান,
তখন আমরা হয়ে উঠি পৌরাণিক কিন্তু
অধুনা দেবযানী ও কচ, যুগল রূপে
খুঁজি পরস্পরের মাঝে মৃত -
সঞ্জীবনীর মন্ত্র, সমস্ত
প্রণয়ী মানুষের
জন্য অমরত্বের প্রাপ্তি, এক এমন পৃথিবী,
যেখানে মানুষের হৃদয়ে, প্রেম সুধা
ভরে থাকে অন্তহীন ভাবে,
যেমন করে ভরে
উঠে পল্লব -
বিহীন অরণ্য বসন্তের আগমনে, বিস্তীর্ণ
রঙের আলোয় চার দিকে, জীবন্ত
বিতান গাহে জীবনের মধুর
অসমাপ্ত গান - -

* *
- শান্তনু সান্যাল
 

সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩

শূন্যতার মাঝে কলরব - -

অন্ধকারের অপর পারে এখনো রয়েছে
কিছু অর্ধ - জ্বলন্ত অনুভূতি, হাড় -
মাংসের সাথে সব কিছু কী
শেষ হয়। তোমার ওই
পরিপূর্ণ পাওয়ার
অভিলাষ,
আর
আমার সম্পূর্ণ না দেওয়ার ব্যর্থতা, যেন
কুন্ঠিত করে যায় এই সংক্ষিপ্ত জীবন,
তবুও জানি না কেন, জীবন
দিতে চায় অনেক কিছু,
কিন্তু তোমার ওই
হৃদয়ের উষ্ণ -
ভূমি,
সহজে ধরে রাখতে পারবে কী, আমার - -
চোখের অন্তহীন প্রবাহের বৃষ্টি।বলা
মুশকিল, অনেক পথের কাহিনী,
চিরকাল থাকে, যথারীতি -
মৃগতৃষ্ণার দ্বন্দ্বে হারানো
জল বিন্দুর পৃথিবী !
শূন্যতার মাঝে
কলরব !

* *
- শান্তনু সান্যাল 





রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩

মনের ভিতরে - -

সত্যের সন্ধানে নিভৃত যোগী, আজন্ম রইলো তৃষিত,
লৌকিক থেকে অলৌকিক, পৃথিবী হতে শুন্যে
শুধুই এক মরিচিকা, নিরন্তর বিচরণ,
সজল হৃদ দর্পনে সে ছিল  মৌন
অবস্থিত ! বাহ্য জগতে
চিরন্তন অনুসন্ধান,
অন্তরতম
রইলো
চির অপরিচিত, ঠিকানা নিয়ে হাতে খুঁজে সম্পূর্ণ শহরে, নজর পড়ি নি কোনো দিন নিকট -
বর্তী আঙ্গিনায়ে, ফুটে আছে কত
পুষ্প বল্লরী মনের উপবনে,
খুঁজে চলেছে অনবরত,
শাশ্বত বিম্ব, নিরব
রয়েছে বুকের
মাঝ খানে, জীবন যেন রইলো স্থির চিরদিন ওই
উদ্গম স্থানে - -
- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩

বৃদ্ধ যাত্রী

চিনার গাছের দীর্ঘ ছায়া, সূর্যের অস্থায়ী চুক্তি,
ক্লান্ত পথিকের চিঠি মেঘ কিন্তু পাই নি,
তাই পূর্বাভাস হলেও বৃষ্টি কিন্তু
হয় নি, ছায়াময় স্নেহের
ধারা গড়িয়ে গেছে
অনেক আগে,
আঁধার
নামার পরে দেখি, কড়া নাড়ার শব্দে সে ঠিক
খুলেছে দরজা, কিন্তু জানিয়ে দিয়েছে
সেই মুহুর্তে ভুল ঠিকানা, তার
মুখের ভঙ্গিমায়ে যেন
গুটিয়ে গেছে তরু
 ছায়া,
তার কথার ছন্দে ছিল নিরব এক অনভিজ্ঞতা,
অথবা দুরে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি, চিনেও
না চেনার ভান করা, মৌন বিদায় !
যেন পরজীবী ভাবনা চায়
সূর্যের আলো ধরতে,
লতিয়ে জড়িয়ে
বিরাট
বৃক্ষের শ্বাসরোধ, নিজস্ব সত্তা গড়া, আপন আর
পর অর্থহীন, যে যেমন করে দখল করতে
পারে উচ্চ শামিয়ানা, ফিরে এসেছে
মন রিক্ত হাতে, যা কিছু ছিল
কাছে রেখে দিয়েছে ছদ্ম
ভালবাসার দ্বারে,
এখন মুক্তির
পথে
ধেয়ে চলেছে জীবন, একাকী অবশ্যই, সঙ্গী বা
কেউ ছিল কোনদিন, শুধুই এক নির্মম
রাত্রি এবং পুরাতন যাত্রী, সকাল
যেন শুষ্ক নদী, বুকে নিয়ে
হাহাকার, চেয়ে রয় আকাশ পানে - - -
- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩

অসীম শূন্যতা - -

পায়ের নীচে ছিল চিরদিন শূন্য স্থান, তবুও
গুনে গেছি মাইলের পাথর, জনমের
পরেই কে যেন লিখে গেছে
ঠিক মাথার উপরে  
দুঃখের মহা -
কাব্য,
চিত্রকর হতে পারি নি, অবস্থা ছিল বর্ণান্ধ !
বিহানের সঙ্গেই যেন সূর্য্যের অবসান,
পায়ের নীচে ছিল চিরদিন শূন্য -
স্থান। প্রেমিক হতে খুব
একটা অর্থের ছিল
না প্রয়োজন,
তাই
সারাটা জীবন অপেক্ষায় রইলাম কেউ যেন
ভালোবাসে, শুধুই খুঁজেছি চেহারার মাঝে
আসল চেহারা, ভালোবাসার মুখোশ
জমে আছে জং ধরা স্মৃতির
সন্দুকে, অপরাধ জানি
না সবাই বলে আমি
এক অভিশপ্ত
পাষাণ,
পায়ের নীচে ছিল চিরদিন শূন্য স্থান - - -
* *
- - শান্তনু সান্যাল 

বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩

নয়নের ভাষা

নিষ্পলক শুধুই চেয়ে থাকা ওই তোমার দুই নয়নের ভাষা,

অভিভূত করে যেত ক্ষণে ক্ষণে সেই অপ্রতিম ভালবাসা,

আজ ও মনে হয় তোমার, বিভোর কন্ঠের মৃদু হিল্লোল,

পাহাড়ি নদী যেন শ্রাবণের আগেই, উস্কিয়েছে সুপ্ত প্রত্যাশা,

উদ্বেলিত করে যেত, মন ও প্রাণ সেই অসীম ভালবাসা,

শান্ত ঝিলের গায়ে ভাসানো, প্রেমের কবিতা গুচ্ছ, মনে আছে,

নিঝুম মধু সন্ধায়, ঝির ঝির আঁধারে লুকিয়ে দুজনের আসা,

আন্দোলিত করে যেত, লেবুফুল গন্ধে সেই মধুরীম ভালবাসা,

অভিভূত করে যেত ক্ষণে ক্ষণে সেই অপ্রতিম ভালবাসা ।

 শান্তনু সান্যাল


বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০২৩

সন্ধান - -

 

ফুল বিহীন ফুলদানি কেমন যেন চেয়ে
থাকে ভাঙা কাঁচের জানালা, তীক্ষ্ণ
কিনারে বিঁধে আছে পাখির
ডানা, বৃহৎ শব্দকোষ
খুলে রাত খেলে
শব্দ সন্ধানের
খেলা, নির্ঘুম
চোখে
জীবন খুঁজে বেঁচে থাকার ঠিকানা, এই
ভাবেই রোজ রাতে আমি পরি কাঁচের
পোষাক, নগ্ন দেহে আঁকি স্বপ্নিল
ট্যাটু, দাঁড়িয়ে থাকি অন্ধকার
গুহার মুখে, জোনাকির
টোপ দিয়ে সকালের
শিকার করি, পদে
পদে খুঁজি বেঁচে
থাকার এক
নতুন
বাহানা ।
* *
- - শান্তনু সান্যাল