রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১২


নিরবতার চুক্তি 

কলরবের মাঝে খুঁজে পেয়ে  ছিলাম তার আর্তনাদ 
তাই খরতার আন্দাজ করতে পারি নি, বুকে 
টানি নি, শুধুই বিষন্ন তারের মত চুলে 
হাত বুলিয়ে বলেছিলাম - আমি
তো আছি, চিন্তা কিসের, 
জীবন তখন এক 
হারানো 
শিশু, সরল মনে ধরে ছিল  মধ্যমাঙ্গুলি, হয় ত 
বুঝতে পারি নি কত মুশকিল ধোঁয়া 
ভরা পথে হাঁটা, ওই বোতাম 
ভাঙ্গা শার্ট টেনে সে 
দুই ভাঙা
দাঁতের মাঝে হেসে ছিল মিষ্টি হাসি, দুই ছোট্ট
চোখে দেখি জোনাকির ঝিলিক, 
উড়তে চেয়ে ছিল সে 
তখন, আমার 
অস্তিত্ব 
ডিঙিয়ে বহুদূর, যেন গাঙ চিলের ডিগবাজি 
হাতছানি দিয়ে ছিল তাকে, কিন্তু 
সে কোনো দিনই হাত 
ছাড়িয়ে যেতে 
পারি নি, 
সরে যাওয়া কি এতই সহজ, সে আজ ও করে 
ছটপট, ধরতে চায় প্রজাপতির রং,
ছুঁতে চায় স্বপ্নের গন্ধ, বায়ুর 
রূপ, জলের অণিমা, 
জানতে চায় 
ফোঁকলা মুখের দুগ্ধদাত্রী গন্ধের ভবিষ্যত,জানি 
না কে যেন অদৃশ্য হাতে মনের আঁচলে 
বেঁধে রাখে দিবা নিশি, সে যেন 
চেয়ে ও হতে পারে না 
গৌতম, সে জানে 
তার সঙ্গে 
জড়িত আছে কোলাহলের নিরব থাকার চুক্তি, 

-- শান্তনু সান্যাল
lonely_boy -painting by  Juan Lopetegui


  

কিছুই ব্যতিক্রমী নয় 

প্রত্যাশা বিহীন ভালবাসার কাহিনী সে শুরুতেই 
বাতিল করে দিয়েছে, যেন ভুল ঠিকানার 
চিঠি ফিরে এসেছে আবার মূল 
বিন্দুর কাছে, লাল রঙ্গে 
বক্ররেখা টি  
বুঝিয়ে
দিয়েছে পরিষ্কারভাবে ওই অমুক দুর্লভ বস্তুর 
অস্তিত্ব নাই, কল্পনা, সম্ভাবনার  জায়গা 
শুধুই স্বপ্নের মাঝে, দুই জৈবিক 
রসায়নের সম্মিলনে 
কবিতা কি 
জন্মায়, 
ওই যুক্তির আগে বলার কিছু ছিল না সুতরাং 
বাস্তবিকতা কে গ্রহণ করে গেছে মন,
তার প্রয়োজনের ফর্দে যুক্ত করে 
এসেছে, প্রেমের স্থানে দেহের 
নামকরণ, হয় ত পরে 
সময় অন্তরে 
যখন 
ওই লেখাটি হয় উঠবে ফেকাশে, চুপটি করে 
লিখে দেবে শাশ্বত প্রেমের নিখুঁত  বানান, 
কৃষ্ণচুড়ার  ফুল  ভরলো শাখার  প্রতি 
বৃন্তে, পাতার মাঝে যেন অগ্নি -
শিখার মধুরিম দহন, 
সাময়িক প্রজ্বলন
মৌসুমী 
মেজাজের সঙ্গে কবে যে গেছে নিভে কেউ টের
পাই নি, যখন  ঝরে গেছে সমস্ত ফুল ও 
মিহি পাতার শামিয়ানা, দেহের 
বানান হয় উঠেছে  পল্লব 
বিহীন বৃক্ষ, হাড়
মাংসের এক 
স্থুল 
ফলক, কুত্সিত  ঝুলন্ত  চামড়ার  মানবীয় গঠন,
যেন ঝুলে রয়েছে, শুধু শুকনো শিমের
সহস্ত্র  গুচ্ছ সারা অঙ্গ জুড়িয়ে, 

- শান্তনু সান্যাল
broken glass - sherry c. nelson