রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১১


কাচা মাটির গন্ধ 
অপূরিত স্বপ্ন আমার অভিশাপিত ছিল না
ভেজা মাটির খেলা খেলেছি আমি, তাই 
ত কাদায় মাখা এই মুখ চিনতে পারো নি,
পুঁতে গেছি প্রণয়ের চারা, অঝর শ্রাবণে,
কচি ধানের গন্ধে ভাসে তোমার প্রেম কি 
অনুরাগের পরাগ কণিকা, ধরতে চায় 
মন উড়ন্ত ভালবাসা, জীবনের ত্রাসদী 
গেছে ঢেকে, সুস্থ হয় উঠেছে হয় ত -
 মাটির লেপে, ছুঁতে চেয়ে ছিলাম নদীর 
মধ্যস্থ ধারা, ঘুর্ণাবর্তের নৌকা ডুবে নি 
উড়ে গেছে ইশান কোণের আসন্ন ঝঞ্ঝা!
সিক্ত অনুরণন ভরে গেছে জীবনের -
শুন্যতা, সূর্যের রথ থেমে ছিল কিছু 
ক্ষণ অস্তাচলের পথে,সাঁঝের আকাশে 
ছিল অনেক অনাবিষ্কৃত রং, মনের -
তুলিকা ডুবতে চায় শুধুই ভালবাসার 
রঙ্গে,নিশি পুষ্পের আলোড়ন ভরে যায় 
হৃদয়ে অসমাপ্ত কবিতার মর্ম,ছুঁয়ে চলেছে 
জীবন, দেহের স্নিগ্ধ, কাচা  মাটির গন্ধ !
-- শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১১


ভাবিকথন 
দাবি ত কিছুই ছিল না তবে কেন এই 
তুমুল কোলাহল, জানতে চেয়েছি শুধুই 
জীবনের মূল্য, সত্যের অর্থোদ্ধার,যারা 
পরে আছে জয়্মুকুট,সিংহাসনে আসীন
মুখমণ্ডলে দীপ্তিময় আভা, নত জানু -
আছে কেন নিয়তির চরণে, নিরুপায় !
সত্য, প্রকাশ ও অমরত্ব প্রাপ্তির পথে -
আঁধার যদি নেমে আসে, আশ্চর্য্যর কি
বুঝে উঠি না,ওই বিজয় পতাকায় যদি 
রুধিরে লিখে থাকো জয়লাভ গাথা,
ইতিহাসে হয় ত মহান,গর্বিত যোদ্ধার
ভূমিকায় তুমি শ্রেষ্ঠ, কিন্তু নিজের 
নীতিবোধে ক্রমশঃ সশস্ত্র পরাজিত,এক 
অসহায় প্রাণী মাত্র, দুর্বল, জীর্ণ শীর্ণ 
মানুষের দেহের সেই ক্ষত বিক্ষত চিহ্ন
নামিয়ে আনবে তোমায় মৃত্য লোকে 
স্বর্গের সাম্রাজ্য চায় গণনা, হিসেব, সৎ
কুরু বংশীয় মহাসভায় হয় ত তুমি 
ঋণমুক্ত, মৃত্যুর প্রাঙ্গনে কিন্তু আসক্ত !
সোপানের সহস্ত্র হাত এবং তোমার এক 
মাত্র গ্রীবা, এখানেই পরাক্রমের অন্ত,
ময়ুর সিংহাসন উড়ে যাবে সে দিন শুন্যে !
--- শান্তনু সান্যাল 
 

বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১১


বসে আছি একাকী 

সেই অনন্তকালের যুদ্ধ নিয়ে উদ্বর্তন
প্রাণ ভরে ভালবাসতে গিয়ে দেখি -
সীসেরাঙা আকাশে কোথাও এক খণ্ড
বর্ষামুখর মেঘের হদিস নাই, অগ্রবর্তী
পদক্ষেপে গেছি মাড়িয়ে সমস্ত বিষন্নতা,
পাথর ভাঙনের শব্দ, ইঁট, সিমেন্টের
গন্ধে, ভুলে গেছি শ্রাবণের আদ্র,মিষ্টি
অনুভূতি,এখানেই ছিল হয় ত ছড়ানো
শৈশবের গল্প, কাহিনী, অনাম পুষ্পের
মাদকতা, ওই চার রাস্তার মোড়ে কে
যেন, চেয়ে থাকে উদাসীন মুখে আমায়,
খুঁজে বেড়াই চোরা গলি, মুখোমুখির -
আতঙ্কে রাত, বৈধব্য সাজ নিয়ে বসে রয়
পার্কের নিরালায়, একাকী কথা বলে -
নিজের সঙ্গে, গোনা কএক গাছের ছায়া,
খেলে অদৃশ্য শিশুর দল, সিঁড়ির উপরে পা
পিছলিয়ে পড়ে বারে বারে, সেই উঠে -
যাওয়ার সংকল্প ঘুমোতে দেয় না কোনো
ভাবে, খুঁজি অনবরত তোমার প্রেম, চাঁদ
উন্মুক্ত হাসি ভরা বিহান গাছের ফাঁকে !
এই বৃহৎ যামিনী চেয়ে ও দৃঢ়মুষ্টির স্বপ্ন 
 ভাঙতে পারে না, ভিড়ের মাঝে অবিরাম
আমি খুঁজে চলি তোমার হারানো ভালবাসা,

-- শান্তনু সান্যাল 



সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১১


গুপ্ত স্রোত

জানি ভালই ভাবে, আমার সীমা -
গণ্ডির প্রজ্বলক পাথর অচেনা নয়,
খালি পায়ে হেঁটেছি বহু বার, ওই
ছাই ভরা অরণ্যে যদি খুঁজো কোন
দিন এখনো আছে জ্বলন্ত পদ চিহ্ন,
হয় ত তুমি বুঝতে পারো নি কিংবা
বোঝার চেষ্টা কর নি, তাই চেয়ে -
আছো অমন অপলক এক দৃষ্ট চোখে,
বোধ হয় তোমার অথাহ প্রেম -
শুধুই কল্পনার তরঙ্গে ভেসে উঠতে
চায়, খেলে যাও তুমি লহরে সেই
শৈশবের খেলা,আপন মনে ভিজে -
উঠ,কভু ফেলে যাও জল স্বপ্নের দেহে,
এক মুঠো জোছনার বিনিময়ে আমি
দিতে চেয়েছি তোমায় সারাটা জীবন,
কিন্তু কোথায় যেন কার্পণ্য বাধা -
দিতে চায়, চোখের পাতায় ঢেকে
রাখো তুমি রজতনিভ গুপ্ত ভালবাসা !

-- শান্তনু সান্যাল 

শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১১


জীবনের উত্স 
অভিশপ্ত গুহার মুখে লেখা ছিল প্রবেশ -
নিষিদ্ধ, ছেঁড়া মাকড়সার জালে দেখেছি 
ঝুলন্ত জীবন, জানি না কোথায় হতে 
দুঃসাহস,বুকের পাঁজরে ভরে গেছে বেঁচে 
থাকার মহামন্ত্র, এগিয়ে চলেছি সহজে -
আঁধার পেরিয়ে গোপন গহ্বরের ভিতরে !
আজন্ম হৃদয়একগুঁয়ে শুনে না কোনো 
তর্ক বিতর্ক,মানে না কোনো ভাবিকথন,
তারা বলেছে এই পথে নাকি শুধুই বিষ - 
বৃক্ষ,পরাশ্রয়ী বন্য লতা, ভুজঙ্গের দংশ !
কাহিনী ও বাস্তবিক চরিত্রে মাঝে ছিল 
বৃহৎ গভীর খাদ, আমি খুঁজতে চেয়েছি 
সত্যের রশ্মি পুঞ্জ, জানি না কোথায় আছে 
তোমার সুজন সমাধিস্থ কি জাগ্রত, যদি 
পাই দেখা, জিজ্ঞাসার অর্ঘ্য দেবো পায়ে,
জানতে চাইব মানব রক্তের ধর্ম, জাতি !
যদি অতৃপ্ত রয়ে যায় আত্ম পিপাসা,সরিয়ে 
ফিরব সমস্ত দর্শনের জাল, লিখে আসব 
গুহার মুখে এখানেই জীবনের উত্স !
-- শান্তনু সান্যাল 

শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১১

অন্ততঃ

অন্ততঃ যুযুত্সু হয় উঠেছি আমি -
ধর্ম অধর্মের পরিভাষা তারা বুঝিয়ে
গেছে তাদের দুর্বোধ্য ভাষায়, হেলানো
মাথায় স্বীকার করে গেছি সর্ব শর্ত,
একাকী যোদ্ধার ভূমিকা সহজ ছিল কি,
বংশ রক্ষার মোহে হয়েছি সহ চক্ষু -
ধৃতরাষ্ট্র, অনন্য পথ খুঁজে পাই নি তাই,
সৎ অসতের দ্বন্দে জীবনের এই
বলিদান,তারা বলে ছিল ফিরিয়ে দেবে
সমস্ত কিছু,বাস ভূমি,অতীতের স্বর্ণিম -
যুগ,সকাল সাঁঝে সমানে দাড়িয়ে রই
হাতে নিয়ে পরিচয় পত্র, তবু তো তারা
বিশ্বাস করে না যে আমি আস্ত জীবিত !
আরশির মুখোমুখি খুঁজেছি হারানো
ঠিকানা, দিতে চেয়েছি বারংবার প্রমাণ,
মহাভারতের সকল পাত্র দেখি বেশ  
মজায় আছে,আধুনিক অট্টালিকায় বসে
অতীতের ছদ্ম ঘটনার গল্প করে -
আমি চেয়ে থাকি অস্তাচলের সূর্য্য,বুকে
নিয়ে অনন্ত কালের আঁধার, সৎপথের
পরিনিতি বয়ে চলেছি নিয়ে কাঁধে -
জানি না এই কোন নগর, কোন পথ, কি
ভাবে জানব বল, আমি যে পুরাতন
এক মিথক, কল্পিত কাহিনী, অস্তিত্বহীন !
তারা খোঁটা দেয়, অট্টহাসে বলে, ওই
যে পাগলা যিশু খুঁড়ে চলেছে অবিরাম,
পিছনের  অবোধ বাচ্চাদের দল হয়
ত কিছুই ক্ষণেই হয় উঠবে -
 রোমান যোদ্ধা, অলিন্দের বহু জানা
মুখ,অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে দেখার জন্য
সে অভূতপূর্ব দৃশ্য --
--- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১১


ঘাটের সরু পথ 
নির্বিশেষে পরাজয় আত্মসাত করা
সহজ ছিল না, অনেক সময় উপায় 
খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন, দুষ্কর -
তবু ও বাঁচতে গেলে অনিচ্ছায়ে মন 
বহু বার করে যায় আত্ম - সমর্পণ,
এখানেই জীবন নৌকার মাস্তুল যায় 
কেঁপে, কিন্তু হৃদয়ের মাঝি কোনো 
ভাবেই হার মানতে হয় না রাজি, সে 
বেয়ে যেতে চায় মুহানামুখী জলপথে,
এক  দৃষ্ট একাগ্র চিত্তে খেলে যায় -
নিয়তির খেলা,তরঙ্গের চক্রব্যুহ রচে 
মায়াবী জগত, করে ক্ষনিক বিভ্রান্ত !
অস্থায়ী মেঘেরা শেষে উড়ে যায় দূর 
অজানা দেশে, চাঁদ উঠে আসে মৌন -
শান্ত রূপে, সাজে অম্বর আবার পূর্ণ 
লাবন্যে, কার নয়নের কাজলে রাত 
এঁকে যায় স্বপ্নের কাহিনী, জোছনার 
স্পর্শ বেঁধে রাখে মন তোমার প্রেমে, 
তীরের জোনাকি হয় উঠে উজ্জ্বল - 
উড়ে যায় সকালের ডাকে বহু দূর,
ঘাটের সরু পথে ঝরে বকুল শেষে !
-- শান্তনু সান্যাল 

রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১১


অমূর্ত ভালবাসা 
বিস্মিত করে যায় লেলিহান শিখা 
বন্য আগুন সম তোমার ভালবাসা 
দাউ দাউ করে জ্বলে চলেছে, সমস্ত 
আবেগের বাঁস বন, মেঘ বরণী -
ধুম্র বলয়  উঠে  যায়  নভ মণ্ডলে,
মধুর নিঃশ্বাসে জেগে রয়  অজস্র 
নিশীথ পুষ্পের গন্ধে মাখা পরাগ -
কণিকা, উড়ে যায় স্বপ্নের পতঙ্গ 
সারি সারি, উত্সর্গের বেদিকায়ে,
আজ প্রণয়ের মহা সম্মেলন, ঝরে 
চলেছে তারকের নীলাভ আলো - 
বিন্দু বিন্দু পদ্ম পল্লবে, ভাবনার 
শিশু খেলে শিশির ভেজা হৃদয়ে,
আপনমনে গান গেয়ে যায় ওই নীল 
দীঘি, পৃথিবী অবাক চেয়ে আছে 
দুই অমূর্ত আত্মার মিলনের দৃশ্য !
-- শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১১

অগোচর তার ভালবাসা মাঝে মাঝে 
বলে যায় জীবনের বহু অনুক্ত ব্যথা,
শ্রান্ত নিয়তির অশান্ত পৃথিবী, মনের 
অগ্নিপথে জ্বলে একটানা অনন্ত রূপে,
ওই উপাসনার বেদিকাযে অমূর্ত  -
স্বরূপে তার মায়াবী জগৎ টেনে রয় 
মনের সর্ব দ্বন্দ,অধীর হৃদি স্পন্দন,
-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১১


শীর্ষক বিহীন  
মরচে পড়া দর্শন বুকে জড়িয়ে 
যাও এগিয়ে যত দূর পারো - 
খোলা আছে স্বর্গের দ্বার, রক্তের 
রঙ্গে সাজানো সিংহাসনে কি 
আছে সে পরম সত্য আসীন !
হয়ত প্রফুল্লিত চেয়ে রয়েছে মর্ত্য 
লোকের চিত্কার, অশ্রুধার, 
ছড়ানো ছিন্ন ভিন্ন দেহের কম্পন,
লিখে রেখো হিংস, ঘৃণিত ইতিহাস 
ওই তথাকথিত পবিত্র স্থানে ,
নিষ্পাপ আত্মার আশির্বাদ রয়েছে 
তোমার শীর্ষে, করে যাও ধ্বংস 
এই বিশ্ব, অন্তরিক্ষ, চাঁদ, সূর্য্য, 
করো অমরত্ব পান, হয়তো সে
 নিরাকার  ব্রহ্ম হবে আনন্দিত 
দেবে তোমায় অভয়দান, ফিরে পাবে 
পুনঃরায়ে বন্য বর্বর জীবন !
হয় ত হবে এক দিন শাপমুক্ত --
-- শান্তনু সান্যাল 


মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১১


সুরভির বৃতে
উত্সর্গের উত্সে সে বলে গেছে
প্রেমের পরিণাম
পাথর ছিল সবার হাতে ছুঁড়ে
গেছে যে যেমন পারে
রক্ত ঝরিত হাসির মাঝে ছিল না
কোনো ও অভিযোগের চিহ্ন
মনের প্রাঙ্গনে খেলে যায় নিষ্পাপ
পরিত্যক্ত নিয়তির শিশু
আপন পরের মেঘ খুঁজে পাই নি
অনাবৃত আকাশ সহজে বুঝিয়ে গেছে
জীবনের দর্শন, প্রণয়ের রহস্য -
গভীরতম,অল্প  জীবনের এই রোমাঞ্চ
থাকুক সজল নয়নের কোণে
হৃদয়ের এই বিশাল ভূ ভাগে লাগে না
ফনিমনসার চারা, এখানে ফুটে
জুঁই, নিশিগন্ধা, জড়িয়ে রাখে বুকে
তোমার আমার প্রেমের সুরভিত ধারা, 
-- শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১১


উন্মুক্ত দ্বার 
সজল সাওনের রাতি, জেগে রয়েছে 
এখনো আদ্র নিঃশ্বাসে, প্রণয়ের গন্ধ, 
আকাশে মেঘের উঠেছে আন্দোলন 
তড়িতের কম্পিত আলোয়ে দেখি -
পৃথিবী সম তোমায় অভিসারিকা !
ঝরে চলেছে আবেগের জল তরঙ্গ,
ভিজে একাকার হৃদয়ের শুষ্ক ভূমি,
ফুটতে চাহে স্বপ্নের অভিনব অঙ্কুর
ছুঁয়ে গেছে কে যেন অচেতনে, সকল 
মনের অনুদ্বিগ্ন, লাজুক ভাবনার -
স্নায়ু, জানালার কাচে ভেসে উঠেছে 
বিন্দু বিন্দু কবিতার অনুভূতি,তরু 
শাখার দেহে সাজিয়ে গেছে সিক্ত 
অধরের মধুরিম চিহ্ন, অগণিত ভাবে,
বৃষ্টির ক্ষণিক বিরতির ফাঁকে -
জোছনার পাগলামি, ভেঙে চলেছে 
ঘুমন্ত চোখের ইন্দ্রজালিক মায়া, চেয়ে 
আছে মন উন্মুক্ত দ্বারের নিরবতা !
-- শান্তনু সান্যাল  
   


মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১১

 শুন্যতা 
অবারিত হৃদয়,অনাবৃত ব্যোমের বিশালতা
জীবনের পারদর্শী দ্বার উন্মুক্ত বাহির মুখী -
এখানেই ভেসে আসে পরম সত্যের জ্যোত্স্না,
সে দাড়িয়ে ছিল অনেক ক্ষণ নিয়ে হাতে কিছু
সদ্য প্রস্ফুটিত প্রণয়ের স্বর্ণিম কমল, ভাবনার
বৃন্তে জড়ানো, আদ্র স্বপ্নের লাজুক প্রতিশ্রুতি,
অন্তর নেত্র চিনতে পারি নি, ফিরে গেছে সর্ব
প্রতিধ্বনি, নির্বাক আঁধার নিয়ে বুকে, জীবন
রইলো, অন্তহীন পথের পরিশ্রান্ত ভ্রমিত যাত্রি!
যারা ছিল ছায়া সম দিবা নিশির প্রাণবন্ধু
একে একে পথের পান্থশালায় জিরনের লাগি
থামল, আর তো দেখি না কোনো ও পথচারী,
একাকী, সুদুর পৌঁছিয়ে ফিরে তাকালাম, শুধুই -
কুয়াশার সাম্রাজ্য, চারদিকে ব্যাপক শুন্যতা,
সারি সারি অপরিচিত পদ চিহ্ন এঁকে রয়েছে
নদীর কিনারা, সবাই একই দিগন্ত মুখী, পূর্ব -
গামী, ফিরে আসার মনে হয় অবসর তারা পায়
না, কিংবা খুঁজে হদিস পায় নি হারানো প্রেমের
সেই রহস্যময়ী ঠিকানা, কোন গন্তব্যে আছে
লুকিয়ে সুজন যে  ফিরে গেছে দ্বার হইতে, যদি
আবার কোনো দিন দেখা পাই, বেঁধে রাখব
হৃদয়ের বাঁধনে,ভালোবাসবো তোমায় জীবন !

-- শান্তনু সান্যাল 

রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১১


ত্রিশঙ্কু 
জীবনের তিন বিন্দুএ ,ওই উপগ্রহটি স্থিত 
তদুপরি মহাজগতে বিপুল শুন্যতা 
তুমি,আমি ও প্রণয়,এই ত্রিকোণে ই রয়েছে 
স্বপ্ন,বস্তুবাদ,কল্পনা,ইন্দ্রজাল,আবেগ 
অশ্রু,লাবণ্যময় ভাবনা ,ভাঙা গড়ার 
কাহিনী,সুর তাল ছন্দ ,কবিতা ,হৃদয়ের 
স্পন্দন,এই ত্রিশঙ্কুর পৃথিবী কে জড়িয়ে আছে 
রঙ্গীন ক্ষিতিজ ,সমান ভাবে,আস্থা বিশ্বাসের 
অনন্ত রেখার গায়ে, এই মৌলিক সংরচনা -
মৌসুমের পৃষ্ঠে লিখে যায় জীবনের গল্প 
কাব্য, ভালবাসার ইতিহাস, দিয়ে থাকে কিছু 
নব অঙ্কুরিত কিশলয়ের রূপে নতুন প্রজন্ম 
বিচিত্র ত্রিভুজের কেন্দ্রে সমস্ত ব্রহ্মান্ড 
যেন পরিপূর্ণ রূপে সমাহিত, জীব নির্জীবের 
এখানে কোনো শ্রেণী ভেদ নাই, অণু পরমাণু
ক্ষুদ্রতম জন্তুর অস্তিত্ব, শৃঙ্খলিত স্বরূপে জড়িত 
এই তিন বিন্দুএ সৃষ্টির মহারচনা, অনাদি র পথে 
অফুরন্ত রহস্য বুকে নিয়ে বহমান, নিরন্তর 
ভবিষ্যতের  মহাযাত্রায়  অগ্রগামী  ----
-- শান্তনু সান্যাল  

শনিবার, ২ জুলাই, ২০১১


চন্দ্র বিহীন রাত্রি 
একত্রে বোনা প্রেম কি আরাধনা
পথহারা সে এক সন্ধানী, ভরা 
দ্বিপ্রহরে সন্ধ্যার অবতরণ, করে 
যায় ভাবনার বিচিত্র রোমন্থন,
সৌর গ্রহণে যেন ভ্রমিত খগ বৃন্দ, 
আলো ও আঁধারের চিরন্তন ক্রীড়া  
অন্তর্নিহিত,অসমাধিত, প্রাচীনতম
উপভাষা নয়নে ভেসে উঠে সহসা,
অলির  উন্মাদ ও কাগজের পুষ্প ! 
সেই উপসংহারের স্পর্শ, হৃদয়ে এঁকে
যায় অমূর্ত,অপরিভাষিত চিত্রাবলী,
লবনীয় তরঙ্গে জেগে উঠে সমুদ্রের 
অশেষ তৃষা, উদ্দীপ্ত হৃদয়ের নদী -
উপনদী চমকপ্রদ যেন চঞ্চল হরিণী, 
আবেগময় অগ্নিগর্ভে বিস্ফোরণের 
পূর্বাভাস,অকল্পনীয় অনুভূতির মহা - 
প্রাদুর্ভাব ঘটে চলে যেন শিরায় শিরায়,
জীবন ক্রমশঃ কক্ষপথে খুঁজে, নিজস্ব 
পরিচয়, হয় উঠে কৃষ্ণ মৃগের সেই 
নয়ন কোণের রহস্যময় স্রাব  গ্রন্থী,
রচে থাকে আবেশীয় কাঁটার সীমানা,
চন্দ্রবিহীন নিশীথে জীবন খুঁজে রয় 
কস্তুরী মিলিত ভালবাসা, দৈহিক ও 
পরালৌকিকের অন্তর অর্থহীন হয় -
 উঠে নিমিষে,ছিন্ন তন্তুর ঘুড়ি দোল 
খেয়ে উড়ে যায় উন্মুক্ত আকাশে, 
নির্বাধ ভাবে দেহে ভরে যায় বন্য 
সুরভি, শ্রাবনের অঝর বর্ষণ এখানে 
পরাজিত, নিভে না অদৃশ্য দাবানল !
-- শান্তনু সান্যাল 


শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১১


পুরাতন ভালবাসা 
বাণ শয়নে শায়িত জীবনের দিনগুলি,
অপরাহ্ন বেলায় কিছুতেই ছাড়তে চায়
না মখমলি হলুদ রাঙা আলো,সবাই ত
দেবব্রত নয়, সূর্য্য  অনুরোধ রাখে না !
প্রতিচ্ছায়া, মহাকায় রূপে আঁধারের  -
আব্হান করে, নেমে আসে জীর্ণ সাঁঝ,
সিঁড়ির ধাপ ভেঙে রাত্রি উঠে চলেছে -
ছুঁতে অগনিত আকাশ কুসুম,উল্কা ও
নীহারিকার গোপন জগত, এই মায়া
ভরা রাতে, বহুকোণে ভাঙা আরশির
রূপে, তার কোঁচকানো রেখা ভরা মুখ,
শুন্যে খুঁজে হারানো মধুর দিবা রাতি,
খুলা পিঞ্জর দ্বার,হাড়ের মাঝে জড়ানো
ভালবাসা কোনো ভাবে উড়ে যেতে
চায় না,এই পুরাতন পিতলের ফুলদানি
আজ যেন চমক লাগিয়ে যায় হৃদয়ে,
ফুলেরা অল্পআয়ুর সাথী, হেসে হারিয়ে
যায় নিরালায়, উঠোনের জোছনা, আজ
ও ভুলেনা, উঁকি দিয়ে যায় দৈনিক ভাবে,
শুধিয়ে যায় রাতের গভীরতা, বলে -
ওই যে, দরজায় খিল দিতে ভুল না কিন্তু !
-- শান্তনু সান্যাল