বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০১১

দীপ্তিময় আঁখির কোণে
জীবনের কৃষ্ণধুসর আগ্নেয় শিলা সিক্ত করে
লমহায় গ্রীষ্মের ছিঁটে ফোটা বৃষ্টি
ক্লান্ত সাঁঝের নরম রোদ আনে কিছু খবর 
বাওবাব গাছে জোনাকিদের আজ সম্মেলন
আলোর ঝরনার দোল খেলা !
প্রস্তরের শিলা খন্ডে বসে একাকী দেখি
বিস্তৃত তৃণভূমি ফেলে যায় সবুজ মায়া
নিরব স্বর্গের সে আভাস কিন্তু ক্ষণিক
ক্রমশঃ মনে ঘিরে আসে অফুরন্ত আঁধার
রহস্যময়ী ধ্বনির আন্দোলন, অদৃশ্য চোখের
ঝিকমিকানি, স্নায়ুর বিষন্নতা, জীবনের যুদ্ধ
নিরাপদ স্থানের অনুসন্ধান, মনের আতঙ্ক শীর্ষে
এই অস্থিরতা মাঝে আগামী দিনের সকাল
মাথায় বুলিয়ে হাত দিয়ে যায় কিছু স্বপ্ন
এক অর্ধ উলঙ্গ শিশু খালি পায়ে দৌড়িয়ে চলেছে
খোলা  মাসাইমারা মাঠে, ধরে ইন্দ্রধনুর ঘুঁড়ি
রং গুলো ঝরে চলেছে বিন্দু বিন্দু, সে এক
বিহঙ্গম দৃশ্য, বৃদ্ধ, নারী পুরুষ, চেয়ে রয়েছে
আকাশের ইতস্তত ছাড়িয়ে দেওয়া খুশি
সেই রাতে অপ্রাত্যাসিত ভাবে নিরব ছিল
তৃণ চারণ ভূমি, মৃগদল মনে হয় ঘুমিয়েছে
আজ শান্তিতে,বহুকালের অনিদ্রিত চোখে
তারা দেখতে চায় না নিহারিকা, ধুম্রকেতু, চন্দ্র
এই মায়াবী রাত জাগিয়ে রাখে আশ্চর্য্যভাবে
বিলুপ্ত নির্বাপিত হৃদয়ের সমস্ত আসক্তি !
--- শান্তনু সান্যাল
ঘট শ্রাদ্ধ
নিবিড়, সঘন বাঁশ বনের মধ্যখানি দিয়ে সেই সরু পথ
নেমে গেছে নদীর গায়ে যেন চুষে নিতে চায় পূর্ণ সজলতা
সন্ধ্যার আকাশে ফুটিনি একটাও নীল মণি
ঢালু পথে হাঁটতে গিয়ে দেখি গড়িয়ে চলেছে অহংকার
পৈতের গীট, গোত্রের জাল, রক্তের বিশুদ্ধতা
জাতির অভিমান, বংশের সুকনো কিংবা মরা ধারা
পিতৃ দোষ বইতে গিয়ে রাত্রি এসেছে নেমে -
সুদূর কোন অঞ্চলে ডেকে উঠেছে শৃগালের দল 
জীবাশ্ম যুগের পুরোহিত করে দিয়েছে বন্দ কপাটখানি
এই দিব্য শয়ন বেলায় আমি একাকী হেঁটে যাই নদীর তীরে
জলের অর্ঘ্য নিয়ে অমাবস্যার আকাশে খুঁজি
যাযাবর তারকদের হারানো দীপ্তি
সংকল্পের নিজের মনে পুনরাবর্তন করে যাই
মানুষ মানুষের জন্য, মাটির অঞ্জলি নদীর গায়ে দিয়ে
নিজের ঘট শ্রাদ্ধ দিয়ে উদাস ফিরে আসি !
-- শান্তনু সান্যাল