রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১১

ঘুম আসে না কেন সারা রাত

জরায়ুর অণু, পলাশ গাছের কাণ্ড
অচেতন লাক্ষ, লাস্যময় অতৃপ্ত ভাবনা
শুকের খোল ঝুলে রয়েছে ত্রিপল্লবের নীচে !
রেশমের কীট, হামা গুড়ি করে আবেগ
নাল বিছিন্ন কমল, দেবতার পদতলে -
ঝলসে যায় বৃন্ত, কেন্দ্রকে উঠে আসে স্ফীতি
ঋতুচক্র চঞ্চলমতি, ঘুরে যায় ঘড়ির কাঁটা
মস্তিষ্ক, বক্ষ, নাভি, কটিবন্ধের সীমানা
হইতে জীবনের কামনা বহমান, চিরন্তন
অবিরাম ধেয়ে যায় স্রোতস্বিনী, নিসর্গ
অবাধ্য, করে যায় প্রতিপলে নবীন সৃষ্টি
প্রেমাঙ্কুর পবিত্র কি অপবিত্র, অপরিভাষিত!
উর্ধস্থিত জলধারা নিম্নগামী শুধুই বহিতে জানে
বিপরীত স্রোতের স্বপ্ন, কুহকে কুয়াশা
ভরে যায় অন্ধকার যদ্যপি তারক খচিত
আকাশ দেদীপ্যমান, জ্যোতির্ময় আকাশগঙ্গা
জীবনের অন্ত প্রহর, দুঃখ দায়ক মায়া
সন্ধান রত ইচ্ছা, ধেয়ে যায়, সুদূরে নীল ছায়া
গড়ে মন কাল্পনিক জগত, আজন্ম বেঁচে থাকার
অদম্য, অস্বাভবিক আকাঙ্ক্ষা, খুলতে চায় না
দ্বার খানি, কড়া নড়ার শব্দে রহস্যময় আগন্তুক
রজনীগন্ধা জেগে রয় সম্পূর্ণ নিশা ----

---- শান্তনু সান্যাল


  

হোমাগ্নি

নির্বাক আরশি, অবাক পলাস্তর খসা দেয়াল
খুলে চলেছি অন্তর্বাস, কুড়িয়ে রাখি লজ্জা
বেঁচে থাকার ব্যতিক্রমিক প্রয়াস,
বেশিক্ষণ দেখো না গলন্ত ঘা, ঘৃণার পূর্বে
কর আমায় হোমাগ্নি, অদাহ্য নাভি
জঠর অনল, পরিমার্জিত, পুনর্জীবিত
করতে চেয়ো না, সব কিছু করে যাবে নিমিষে
স্বাহা, অন্তঃপ্রবাহ বহে যদি বহে যাক,
 থামিও না, উলঙ্গ জন্ম, নগ্ন মৃত্যু
নিরাবরণ জীবনের সঙ্গে করেছি সম্বন্ধ
বহুবার সে করেছে আমায় নির্বস্ত্র  
অনেক সময় নিজেই খুলে ফেলেছি ত্বক,সল্ক !
হতে চাই নি গঙ্গাপুত্র, ইচ্ছামৃত্যুর
বরদান চাহি নি কোনো দিন, নিয়তি কে
দিলাম ক্ষমা করে, কেন ঘিরে আছো
চতুর্দিগে, কি চাও পরিশেষে, রক্ত
হাড়, মাংস, বীর্য, মেধা, মজ্জা, স্নায়ু, স্পন্দন
সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ উপভোগ করেছে জীবন!
অশ্রুর লবনতায় আর ঢেকে রেখো না
মায়াবী দেহের মৃত ভূমি, অফলন গাছের
স্থিরতার কোনো অর্থ নাই, ইন্ধনে দাও কি
ঝড়ের পথ চাও! কিংবা নদীর ভাসান -
--- শান্তনু সান্যাল

পৃথিবীর বুকে 
চিলেকোঠার অন্ধকার, বেয়াড়া পড়ন্ত বেলা 
সিঁড়ির ধাপে অদৃশ্য পায়ের উদ্বিগ্ন চলা ফেরা 
ভয়াতুর স্নায়ু, নির্লিপ্ত মনে আলোর ঝিলিক -
সূর্য্য জারজ সন্তান, খুঁজতে চলেছে বংশাবলী,
সন্ধ্যা হলো বিগত ইতিহাস, রাত বিবস্ত্র হাসে !
সমুদ্র তলে,অথৈ,প্রগাঢ় আঁধারে ঘুমিয়ে আছে -
নাকি জন্মদাতা নিভৃত ভাবে,বিহান জড়িয়ে 
সমস্ত গায়ে,ঢেলে চলেছে আগুনের শুক্র, বিন্দু 
বিন্দু,তবু ত ভেসে উঠে না আগ্নেয়গিরি শিশু!
অবশেষে জরাগ্রস্ত লাট পড়ে থাকে শৈল তীরে, 
জলীয় আগাছা জড়িয়ে, অংশুমালির উদয় -
উদাসীন,বিবর্ণমুখে চেয়ে থাকে বসুধার বুক !
পৃথিবীর স্তনে বৈমাত্রেয় গ্রন্থী নাই, সে করে 
যায় গ্রহণ, গরল, সুধা, তাপ সন্তাপ, সব কিছু.
--- শান্তনু সান্যাল