বুধবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১১

ভারতীয় উপমহাদ্বীপ এবং ভাষা

লঘু প্রবন্ধ -
ভারতীয় উপমহাদ্বীপ এবং ভাষা
বিশ্বের সমস্ত ভাষা, উপভাষা, বিভিন্ন হলেও পরস্পর জড়িত রয়েছে,
আসলে এক বিস্তৃত বিশ্লেষনের ভাবনা দরকার, নিজের মাতৃ ভাষা
ছাড়া ও অন্য ভাষায় কী মাধুর্য্য রয়েছে সে জানার জন্য, সে ভাষার
প্রতি সম্মান, আগ্রহ জরুরি, অধিকাংশ সময়ে আমরা সে এড়িয়ে যাই /
সংক্ষিপ্ত ভাবে ভাষার বিশ্লেষণ, শ্রেণী তালিকা ও উদ্ভবের দৃষ্টি তে
নিম্ন রূপে বিশ্বের ভাষার বিভাজন করা হয় -
১ . সেমেটিক ভাষা - আরবী, আহারামিক, হিব্রু ( মধ্য পূর্ব এশিয়া )
২. ইনডো ইউরোপিয়ান - ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত উপমহাদ্বীপ
             প্রায় সমস্ত ভারতীয় ভাষা এই শ্রেণী তে বিদ্যমান রয়েছে /
৩. দ্রাবিড়  - দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা
৪. চিনা তিব্বতীয় - দক্ষিন পূর্ব, সকল মোঙ্গলজাতীয়
ইনডো ইউরোপিয়ান ভাষার শ্রেণী তে সংস্কৃত, বাংলার সঙ্গে উড়িয়া, অসমীয়া,
হিন্দী, গুজরাটি, মারাঠি, ভোজপুরি, মৈথলী, অবধি,ব্রজ,রাজস্থানী,
ছত্তিসগড়ি, পাঞ্জাবি, নেপালী, মগহী, মাগধী, উর্দু, কাশ্মিরি, সিন্ধি ইত্যাদি
জড়িত রয়েছে / এই সমস্ত ভাষার নিজস্ব মাধুর্য্য বৈশিষ্ট্য আছে /  এক উন্নত
সাহিত্য ও ইতিহাস রয়েছে / ভারতীয় উপমহাদ্বীপের অধিকাংশ ভাষার
জন্ম প্রাচীন শাস্ত্রীয় এবং গ্রাম্য ভাষার দ্বারা হয়েছে - অর্থ হলো আমাদের
সবাইর বাসার গোড়ায় রয়েছে তিনটি বিশেষ স্থম্ভ - সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত /
যদি পাঠক বৃন্দ হিন্দী জানেন তাহলে  তারা বুঝতে পারেন যে কত শব্দের মিল
 আছে বাংলার সঙ্গে, উদাহরণস্বরূপ - বলদ শব্দ রাজস্থানী ভাষায় ও আছে /
সেই প্রচলিত অর্থের সঙ্গে / পাঞ্জাবি তে কোল শব্দের প্রারূপ কোড হয়েছে,
পাঠনো - এই শব্দ ব্রজ, মারাঠি, ভাষায় সম অর্থে প্রয়োগ হয়ে থাকে,আসলে
সম্পূর্ণ উত্তর পূর্ব, উত্তর পশ্চিম, মধ্য, উত্তরাঞ্চলের বৃহদ ভাগের ভাষার ভিত্তি
একেই রয়েছে, কালান্তরে ভাষা গুলোর রূপ বদলিয়েছে, বিদেশী ভাষীদের সম্পর্কে
এসে ভারতীয় ভাষায় আরবি, ফারসি, ইংরেজি, ইত্যাদি ভাষার প্রভাব ও ঘটেছে /
উর্দু কে নিয়ে নানান ভ্রান্তি আমাদের মনে থাকে, আসলে উর্দুর ফারসি লিপির
জন্য অনেক জন ভাবে যে এটা বিদেশী ভাষা কিন্তু সে টা পূর্ণ মিথ্যা, উর্দু পূর্ণ
রূপে ভারতীয় ভাষা, শুধুই তপাথ রয়েছে শব্দকোষে যে হেতু এই ভাষাটি মুসলিম
দের মধ্যে প্রচিলিত, আরবি ও ফারসি ভাষার অত্রিক্রমন বিপুল সংখ্যায় রয়েছে /
শুধুই উর্দুতে আরবী ও ফারসি ভাষার প্রভাব দেখা যায় না, বাংলা, হিন্দী ও
অনন্য ভাষায় এই ভাষাদের স্পষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয় / আসলে ভারতীয় কোনো
ওভাষা পরিপূর্ণ রূপে বিশুদ্ধ নয় / সংস্কৃত আসলে বিশুদ্ধ ভাষা কিন্তু সে সীমাবদ্ধ
রয়ে গেল, পন্ডিতদের বর্চ্স্বের জন্য সংস্কৃত পিছিয়ে পড়ল, কিন্তু সে সমস্ত ভারতীয়
উপ মহাদ্বীপের ভাষার জননী, সংস্কৃত কে সরানো সহজ নয়, সংস্কৃতের প্রভাব, গ্রীক
লাটিন,রোমন ভাষায় বিস্তৃত ভাবে দেখা যায় / বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতের শোধ ও অনু-
সন্ধান অবিরাম ভাবে চলছে / ভারতীয় দর্শন ও ধর্ম নিয়ে পূর্ণ বিশ্ব যেন চিন্তনশীল /
ইউরোপিয় দেশের প্রতি ভারতীয় সংস্কৃতি যেন মরু উদ্যান, তাহারা নাস্তিকবাদ এর
দুনিয়া থেকে বেরিয়ে হিন্দুত্ব কে গ্রহন ও আবিষ্কার করতে চায়, এটাই সংস্কৃত ভাষার
অবদান / আমাদের নিজের সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতি গর্ভিত হওয়া উচিত / ভারতীয় -
বিভিন্ন ভাষা ভাষী আসলে এক, শুধুই ভারত কেন - বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা,
এই ভাষার দৃষ্টিতে পৃথক নয়, তাহারা স্বাধীন ভূভাগ হলেও ভারতীয় সংস্কৃতি কে কোনো
ভাবেই বাদ দিতে পারবে না, তারা অপ্রত্ক্ষ্য রূপে আমাদের অভিন্ন অঙ্গ / এখানে ধর্ম
একান্ত নিজস্ব শ্রদ্ধা, কিন্তু সংস্কৃতি অনন্ত, সেটা সহজে পরিবর্তিত হয় না /
--- শান্তনু সান্যাল
 

কে তুমি রহস্যময়ী ভালবাসা

কে তুমি রহস্যময়ী ভালবাসা
নিঃশ্বাসের ভিতর হইতে তুমি গেছ
হৃদয়ের মাঝে ছড়িয়ে পারিজাতক,
 পরশে জীবন্ত মম মরু উদ্যান, তুমি
রচিয়েছ জাগ্রত, মৃত প্রণয় ইতিহাস,
রুধিরের সেই প্রাণ কণায় তুমি ভেসে
গেছ বিলম্বিত লয়ে, ত্বক ছিদ্রে ভরেছ
রজনীগন্ধার বিন্দু বিন্দু ইমন স্রোত,
অধরে দিয়ে গেছ মৌ প্লাবিত কবিতা
সজল দুই নয়নে জ্বলে দিয়েছ সান্ধ্য দীপ,
জীবনের তমস ঘন এই অরণ্য পথে
তুমি স্বপ্ননীল প্রজ্বলিত মধু নিহারিকা,
নিদ্রিত মম ভাবনায় তুমি যে নির্ঝরিণী
দিয়ে যাও প্রতিপল নব স্বপ্ন, নব কল্পনা
সেই অমৃত ধারায় ভেসে যাও কে তুমি
অভিসারিকা,হৃদয় মঞ্চের লিখে যাও
অনন্ত স্বরলিপি, কে তুমি হে সুনায়িকা,
তোমার ছোঁয়া লেগে হয়েছে জীবন
অভিশাপ মুক্ত, কে তুমি অশরীরী মায়া,
পাষাণে ও ফুটিয়েছে অসংখ্য কুসুম
মরুতে দিয়েছ যেন অদৃশ্য প্রতিচ্ছায়া,
কে তুমি রহস্যময়ী ভালবাসা !
--- শান্তনু সান্যাল