রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১১

আবর্তন বিন্দু


সেই আবর্তন বিন্দু তে রেখে এসেছি 
বিরোগ, নঞর্থকতা, বিদ্বেশীয় ভাবনা 
অধিকিন্তু  লেগেছি ভালবাসতে জীবন 
সেই বাঁক শীর্ষ বিন্দুতে, বর্ষার  সাঁঝে 
আদ্র  সংবেদনায় দেখেছি  কিশোর স্বপ্ন 
পরিপক্ব ভাবে সেই  উত্ফুল্ল মৃগ নয়নে  -
তড়িত আলোয়  সহসা হারিয়েছি আমি  
শিশুসুলভ  হৃদি খানি, তোমার সুক্ষ্ম হাতে 
সেই রাতে, তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে ছিল 
অন্তঃপুর , দেহ ও প্রাণ  একাকার 
লিখেছিলেম প্রথম প্রেম পত্র  অন্তে
চার দিগে ছড়ানো চিরকুটের মাঝে 
আমি জানি না  কোথায় হইতে 
এসেছিল আগুন্তুক কবিতার বাতাস 
করে গিয়ে  ছিল ঠিক ,সমস্ত  বানানের  
ত্রুটি ,শব্দে সুরুভি ও ভাসে সেই  দিন 
জেনে ছিলেম আমি, এই মিষ্টি আভাসে 
পুরুষালি বৃন্তে  ফুটে ছিল পাষাণী  ফুল  
 তোমার স্পর্শে  যেন ছিল মোহিনী মন্ত্র 
সহজে  হিংস  ভাবনারা  পোষ মেনে, করে 
ছিল আত্মসমর্পণ - - - -  
- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১১

আদ্র গোলাপ
গীত সঙ্গীত, উন্মুক্ত এক উচ্ছ্বাস
সাঁঝ হইতে বিলম্বিত যামিনী
জাদুমন্ত্রিত, আবেগময় মুহূর্ত গুলি
শেষ প্রহরে ভাঙলো নিদ্রা কোন
অজানা রঙ্গীন ক্ষিতিজে -
মধুরিম প্রভাত কি স্বপ্নের নিয়তি 
পাখিরা যায় উড়ে নতুন দিগন্তে
বিঘলিত মোম, ছাইর মিহিন গুড়ো
আর হৃদয়ের ধরাতল -
কিছু শিশির বিন্দু, নয়ন পাতে করে
ঝিলমিল, ছুঁয়ে যায় ব্যথার চিহ্নে
কিছু অতিরক্ত সময় চায় সংবেদনা, গুছিয়ে
চলেছে জীবন আবার ফুলদান
সদ্য কুসুমিত গোলাপ
উঠিয়ে রাখে মন, ভাঙা মদ পাত্র খানি
খণ্ডিত পুতুল, খুলে দেয় বাতায়ন.
--- শান্তনু সান্যাল 

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১১


ঘুমন্ত উপত্যকা 




নিশাচর পাখি, শিষের পুনারাবৃতি -
উচ্চ তরু শাখা,অনুরণন ভেঙে যায় নিস্তব্ধতা
ঘুমন্ত গভীর উপত্যকা, জ্যোত্স্না ভরা আচ্ছাদন
বাঁধে মন প্রণয়ের সেতু, অলিন্দে হইতে দেখি
সুদরে ছাড়ানো ছোট্ট স্বর্গ যেন ভেসে যায়
অন্ধকারে,রাত্রি পূর্ণতার দিগে -
 অভিলাষার শিশু খেলে হারানো প্রাপ্তির খেলা
মেঘেরা ছুঁয়ে যায় পাহাড়ের শীর্ষ, কুয়াশার ঢেউ
উদ্বিগ্ন, আদ্র ভাবনারা চায় আশ্রয়
তুমি নিঃশব্দ, নিমগ্ন চেয়ে আছো, গাছের
 রুক্ষ কান্ড খানি, জোনাকিদের সর্পিল খেলা
দীর্ঘ নিঃশ্বাস, প্রবল ঝড়ের পূর্বাভাস -
ঝিমন্ত চোখে লুকানো প্রণয়ের আন্দোলন !
আবেগের গর্ভে স্বপ্নের সাগর মন্থন
সুমেরু প্রান্তরে হিমের বিঘলন
নীলাভ আকাশে চাঁদের বিহ্বলতা
সুদূরে বিহানের পথ চাওয়া, আমি শুধুই তোমার
এই অপরূপ রূপ দেখে যাই -----
- শান্তনু সান্যাল 

সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১১

জীবনের যজ্ঞ


পাহাড়ের ব্যথা অবুঝ,অপরিভাষিত

নীলের গভীরতা ঘনিয়ে আনে রহস্য
চোখের অনুমান চির দিন কি 
প্রকৃত সত্য
নিঃশ্বাসের লেখচিত্র লিখে যায় কুয়াশা

হৃদয়ের সমীপে তোমার আবছা উপস্থিতি 
ভাবনার কম্পন, বন্য নদীর আন্দোলন
দ্বিধা গ্রসিত মনোভাব, অনিদ্রিত রাত্রি
হৈমন্তী সমীরণ, পিঙ্গল প্রণয় পত্রাবলী ঝরে
আকাশ হইতে, তিমিরময় হৃদির ভূমি
স্মৃতি কপাট খোলা রয় সারা রাত, চেয়ে
থাকে সংবেদনা, ফিরে যায় কার পদধ্বনি
ধীরে ধীরে,পাহাড় হয় উঠে তাম্র বরণী
আগুনে তপ্ত ভালবাসা,ডাকে শ্রাবনের ধারা
নিশি যায় ফুরায়ে, মেঘবিহীন নীলাম্বর
নিষ্ঠুরতার সঙ্গে করে প্রভাতের সংরচনা
রক্তিম ক্ষিতিজ, বলিবেদির দিগে অগ্রসর
পুনঃ পুনঃ জীবনের যজ্ঞ হয় উঠে জাগৃত !
-- শান্তনু সান্যাল 

রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১১

পরিপূর্ণতা

পরিপূর্ণ প্রেমের প্রত্যাশা,আত্ম বিশোধন -

অপ্রত্যাশিত আর্বিভাব, জীবনে স্বপ্নোদয়

অগাধ বৃষ্টির মেঘ, করে মন অঙ্গীকার -

আবৃত সম্পূর্ণ মরু ভূমি, আবেগ ঝরাতুর

স্বভাঙন চায় হৃদয়, বহু অংশে সম্বলিত, ভরিতে

প্রত্যেক জীবনের শুন্যতা, অঙ্গীভূত তুমি ও !

পক্ষপাত বিহীন, নীতিবোধের আদ্রভূমি

মুক্তিদান চাহে মন, উন্মুক্ত বিহগের সম যাত্রি

উপগ্রহের সৌন্দর্য্য, সম্মোহিত দেহ প্রাণ

পুষ্পের কুহক আমার অন্তর্মন, সমুদ্র

নদী, উপত্যকা যেন চুম্বকীয় ধুর্ব, শুধুই ডেকে

যায়, কর মম পার্থিব রূপ, আসক্তি মুক্ত

পূর্ণ মুক্তি চায় হৃদয়, দাও প্রিয়ে মুক্তিদান !

--- শান্তনু সান্যাল

অসমাপ্ত ইচ্ছা 

অসীম প্রণয়ের আহুতি
বেগবান প্রবাহিত 
আকাশিয় জলরাশি 
ধায়িত জন্ম জন্মানন্তরে 
অদম্য দাবাগ্নি অবিরাম 
মরু, সাগর, নদী, পাহাড়, 
 উপত্যকা অপার 
হইতে ফিরে
ফিরে আসে জীবনের 
অন্তবিহীন 
প্রতিধ্বনি নিসর্গ ভরে যায়
দিবস রজনী 
চিরকাল রং, রূপ, গন্ধের 
মাধুরী, চন্দ্র সূর্য্য 
ঢেলে রয় উষ্মা অশেষ 
মনের সেই বন্য মাদকতা 
খুঁজে সমর্পনের আদ্র ভূমি 
মহাকায় তরু শাখা উর্ধ্বকার 
ছুঁয়ে মেঘের সীমানা 
প্রাণ বায়ুর ইতস্তত ছাড়িয়ে
 দেওয়া স্বপ্নের বীজ
ঘুমিয়ে পড়ে সুকনো পল্লবের 
আঁধারে, সকালের 
প্রথম আলোয় 
ভাঙে কিশলয়ের তন্দ্রা 
অঙ্কুরিত প্রণয়শিশু জড়াতে চায় 
উচ্চতম সবুজ শামিয়ানা
কান্ডের রুক্ষ দেহে 
উঠে আসে 
জীবন সোপান, কোমল 
লতিকা
জীর্ণ শীর্ণ ঝরিত 
পাতার মধ্যেও  
ঠিক খুঁজে নেয় কান্ডের 
 উত্পত্তি!
আত্মসাত করে সূর্যের 
প্রথম কিরণ, অসমাপ্ত কামনা 
অম্বর মুখী অগ্রসর যাত্রা -----
---- শান্তনু সান্যাল

অনন্ত পথে ----


অন্তিম নিমজ্জন
থাম কিছু ক্ষণ
আবেগের বান
ভাঙুক ---
চোখের আলো
চুষে নিক গহ্বর
আন্ধারের আবেশ
বাড়ুক ---
অন্তর্মনের কৃষ্ণকলি
ফুটুক পূর্ণ ভাবে
বিন্দু বিন্দু ঝরুক
ঘনীভূত নিঃশ্বাস
হৃদয়ের জুয়ার উঠুক
ছুঁয়ে যাক তৃষিত
মরু নীলিমা ----
চাঁদ ডুবুক নিজের
মনে বক্ষের ঝিলে
নেমে আসুক মেঘের
উদ্দীপনা তড়িত বেয়ে
বহিয়া যাক শ্রাবণ
আমার দেহ হইতে
তোমার আত্মার কোষে
ঘটে যাক প্রলয়ের তান্ডব
এই নিশীথে জ্বলুক
চন্দন বন ভরে যাক
জীবনে অশেষ সৌরভ
বিহান থেমে থাকুক
ক্ষিতিজের কোণে ----
ধরে রাখো মেরুদন্ডের
অনল মণিরেখা
প্লাবিত হোক পৃথিবী
ডুবে যাক চন্দ্র সূর্য্য
দেউলের চূড়া উচ্চ গুম্বদ
ভাসুক জলে বিশ্বের
দর্শন, মহা শাস্ত্র খানি
জড়িয়ে বুকে যাব তবু
সুরসরি পার হয়ে
স্বর্গের অপার প্রণয়ের
অন্তঃপুরে দুজনে ----
---- শান্তনু সান্যাল 
 

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১১

অভিমানী সুর



প্রতিশ্রুতির সাঁঝ গেছে ঢলে,

ঘনিয়ে গেছে অপেক্ষার আঁধার
 সরোবর, কমলিনী, ভাশ্যমান পূর্ণ শশি
তরু ছায়া, নিঃস্তব্ধ জল রাশি   
হারানো প্রতিধ্বনি, মধ্য রাত্রি
প্রগাঢ ঘুম, আবেগে প্লাবিত বর্ষা বন
 স্বপ্ন জাল, নীহারিকার বিলীনতা
আকাশ গঙ্গার মরিচিকা,বিচলিত মনের
দশা, হস্ত রেখায় ভাগ্যের শিহরণ
নয়নের গভীরতা,লিখে গেছ তুমি হৃদয়ে
অজ্ঞাত ভাষায় মহা কাব্য খানি !
প্রাচীরের গায়ে শেওলা,বনলতার নেমে -
উঠা, সিঁড়ি ভেঙে জোছনার ছাতে
যাওয়া, বাহুপাশে তোমায় পাওয়া
প্রহরী নিশি পুষ্পের ঘুম ভাঙানি !
সুরুভীর ঢেউ বহিয়ে নিয়ে যায় সুদুর
ফাল্গুনী পাহাড়ের দেশে, মৌ ঝরে -
অধর নদীর তীরে, চন্দ্র যায় ডুবে
অরণ্যের পথ হারানো, জড়িয়ে আনে
অন্তিম প্রহরে, তোমার অভিমানী সুর !
--- শান্তনু সান্যাল



শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১১


--
গ্রীষ্মের এক রাত্রি 
লালচে

গ্রীষ্ম 
লালচে বাদামী পাহাড়, পল্লববিহীন তরু শাখা 
ধুসর ছাই আকাশ, জনশূন্য ভূমি, সাঁঝের জাদু 
গেছে হয়ে শেষ, গ্রীষ্মের অনুসরণ করে জীবন !
বিষুবত রাতে তুমি রয়েছে কাছে, এই কি নয় এক 
অপ্রত্যাশিত উপলব্ধি, দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছুঁয়ে 
তোমার অধর খানি, যায় জীবন পূর্ণতার পথে 
নীবিড় আঁধার যেন অদৃশ্য আলোকিত আপনমনে! 
তোমার নত বর্ষিত মুখ বক্ষে যায় হয় বিলীন
পিপাসার্ত ক্ষীন শ্বেত মেঘের দল ধেয়ে যায় 
নভের পথে শিশির সন্ধানে ! অভ্র মরিচিকা 
 সাগরের বিচলিত বাষ্প পুঞ্জ উঠে উর্ধ্বকার 
নীলিমার বুকে সহস্ত্র উপত্যকা, যায় তারা হারিয়ে 
শহরান্তে জল সমীর করে যায় একান্তের 
নিয়ম উল্লংঘন, ঘুরে বেড়ায় যাযাবর রূপে 
চায় এক রাত্রির আশ্রয় স্থলি ! উড়িয়ে আনে 
মধুমাসের শেষের কিছু গন্ধ খানি 
পথ চেয়ে থাকে জানালার কাচে, আদ্র কণিকা
রূপে, আস্তে -- বাহু বন্ধ সরিয়ে তোমার 
জানালার পট খুলে দেওয়া, স্বপ্নের আগমন -
ভরে যায় জীবনে ঘুমের মায়াবী জগত,
 মোরা যাই হারিয়ে বর্ষা বনে, অনাম
নদীর বিস্তীর্ণ ধারায়, বহে যাই অবিরাম 
শুধুই বহে যাই -- দুরে বহু দুরে 
--- ---- বাদামী পাহাড়, পল্লববিহীন তরু শাখা 
---ধুসর ছাই আকাশ, জনশূন্য ভূমি, সাঁঝের জাদু 
গেছে হয়ে শেষ, গ্রীষ্মের অনুসরণ করে জীবন !
বিষুবত রাতে তুমি রয়েছে কাছে, এই কি নয় এক 
অপ্রত্যাশিত উপলব্ধি, দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছুঁয়ে 
তোমার অধর খানি, যায় জীবন পূর্ণতার পথে 
নীবিড় আঁধার যেন অদৃশ্য আলোকিত আপনমনে! 
তোমার নত বর্ষিত মুখ বক্ষে যায় হয় বিলীন
পিপাসার্ত ক্ষীন শ্বেত মেঘের দল ধেয়ে যায় 
নভের পথে শিশির সন্ধানে ! অভ্র মরিচিকা 
 সাগরের বিচলিত বাষ্প পুঞ্জ উঠে উর্ধ্বকার 
নীলিমার বুকে সহস্ত্র উপত্যকা, যায় তারা হারিয়ে 
শহরান্তে জল সমীর করে যায় একান্তের 
নিয়ম উল্লংঘন, ঘুরে বেড়ায় যাযাবর রূপে 
চায় এক রাত্রির আশ্রয় স্থলি ! উড়িয়ে আনে 
মধুমাসের শেষের কিছু গন্ধ খানি 
পথ চেয়ে থাকে জানালার কাচে, আদ্র কণিকা
রূপে, আস্তে -- বাহু বন্ধ সরিয়ে তোমার 
জানালার পট খুলে দেওয়া, স্বপ্নের আগমন -
ভরে যায় জীবনে ঘুমের মায়াবী জগত,
 মোরা যাই হারিয়ে বর্ষা বনে, অনাম
নদীর বিস্তীর্ণ ধারায়, বহে যাই অবিরাম 
শুধুই বহে যাই -- দুরে বহু দুরে 
-- শান্তনু সান্যাল 

বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১১


অনাসক্ত গন্তব্যস্থান


অনাসক্ত পৃথিবী, জ্বলে বৃহদ আগুন 
দিবা নিশি আমি চলি সেই অনবলোকিত শিখায়
অনুসরণ কর না, বেদনার শুধুই আমন্ত্রণ
এখনো যদি ভাবো, যাও বদলিয়ে ভিন্ন দিশা 
 ঘিঞ্জি পরিবেশ, এখানে করে বাস দেবতার 
কুতিসিত প্রণয়নের শিশু, ঘৃণিত, লাঞ্ছিত
বর্তমান, ভবিষ্যতের বাহিরে
শ্যাম ধুসর কিছু চেহারা ঘুরে ফেরে 
মৃত ভাবনার জন্ম, উলঙ্গ বিছিন্ন জীবন  
অযাচিত লোকের বসবাস এই অন্ধ গলি 
ফেলানো আত্মার সংসৃতি, কঠিন বড়ই, প্রিয়তমা!
এস না পিছনে, যাও ফিরে
শোষিত, কল্পনা ঘুমিয়ে রয় কবরের নীচে
সমাধি স্থল, স্মারকহীন, অশ্রুবিহীন 
হতভাগাদের এই শয়ন ভূমি
দুর্ভাগ্যের শিশুরা খেলে লুকোচুরি, ক্লান্ত 
দেহেরা ঘুমিয়ে পড়ে কঙ্কালের বুকে !
দুঃস্বপ্নের ছড়ানো আঁধার, বিলুপ্ত স্বপ্ন যায় 
হারায়, সুদূরে সঘন কুহেলিকা, ক্রোস বহু ক্রোসে
দিপ্তিবিহীন জীবনের বন পথ 
প্রিয় ! অপর পার্শ্ব হইতে ভালোবেসো না আমায় 
এখানেই বিদায়,বিপরীত পথে যাও এগিয়ে 
নিয়ে সিক্ত আবেগ !ক্ষনিক অশ্রু জলে
দিও না প্রেমের তিলাঞ্জলি
দীর্ঘ গ্রীষ্ম,সম্ভ্রান্ত মেঘেরা চায় না মিশতে
তারা উড়ে যায় সহজে মাড়িয়ে
স্বপ্ন ছায়া, আমি উদাস চেয়ে থাকি
উলঙ্গ আকাশের ছেঁড়া হাসি !
-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০১১


স্মৃতির সরু পথে 

পরিত্যক্ত  জীবন, বন্য আগাছা, নামবিহীন  

গুল্ম ঝোপ, কিন্তু ফণীমনসা ভুলে না ফুটতে  

উধ্বস্ত ঘর, ধ্বংসিত আচ্ছাদন, ভূমিসাত দেয়াল 

স্বপ্ন এখনো উচ্ছ্বাসিত, বহুভুজ পথে 

না কোনো অনুতাপ নাহি কোনো অভিযোগ 

তোমার অবর্তমানে ও শিখেছি বাঁচতে 

তা সত্তেও, সে ছিল এক দুঃস্বপ্ন, প্রচণ্ড আতঙ্ক   

অনিদ্রিত কালরাত্রি, ভাঙা নিঃশ্বাস  

বিভ্রমিত ভাবনা, কখনো আবার ধেয়ে যাই 

স্মৃতির সংকীর্ণ গলি পথে, নিরন্তর, উদাসীন 

দেখি তুমি এখনো মনের কাছে 


জীবনের সন্নিকটে, ভুলিতে চেয়েছি বহু বার 

তোমার বর্চস্ব হৃদয়, আত্মা, দেহে একাকার 

বিভক্ত করা সহজ না, মুশকিল বটে 

বিগলিত লৌহ পথে তবু যাই আমি হেঁটে 

কি ভাবে বিমুখ করি পরিবেশের এই 

প্রফুল্লিত কুসুমের হাসি, পাখির বৃন্দ গান 

আমার জীবন চায় নতুন যাত্রা, ভিন্ন আলো

এই দুঃখের সান্দ্রতা, তীব্রতার কি মূল্য  

কত মুখে যায় হাসি হারায়ে 

চুম্বন,আলিঙ্গন, যুগল শয়ন রাত্রি, দেহের গন্ধ
  
দিলাম করে মুক্ত আসক্তির শৃঙ্খল 

পুছে নিলাম বুকের ঘনীভূত নিশ্বাসের বাষ্প,

অধর উষ্মিত দাগ, পঞ্জরাস্থির আদ্রতা 

চন্দ্রিমা দিও না উঁকি আজ আমার সোহাগের 

যামিনী !
--- শান্তনু সান্যাল



সার্থক জীবন

অবিশ্বাসের কিছু নাই, প্রিয় বন্ধু, সদ্য

কুসুমিত জীবন দেখেছি সেই নয়ন তীরে

স্বীকার কর অথবা না, সাস্বত সত্য

ভিড়ের মাঝেও তুমি একাকী, হারানো এক দ্বীপ

আপন মনে হেসে যাও শুন্যতা ঘিরে

অদৃশ্য ছায়া ঢেখে রাখে তোমার মুখ খানি

আন্দোলিত মন খুঁজে বেড়ায় শুধু আমায়

সিক্ত সমীরণ বহিয়া আনে সুরুভি

বয়ন শিল্পের প্রক্রিয়া দিবস রজনী গতিশীল

স্বপ্ন গুলো রয় ঘুমিয়ে মিহি রেশম তন্তুর মাঝে

ভাবনার গুটি জড়িয়ে রাখে হৃদয় খানি

লাজুক সংবেদনা, গোপন মন্থন

ভরে যায় জীবনে মিষ্টি রঙের বাহার

মন চেয়ে রয় মিলনের তিথি, সুপ্ত আবেগ

ছুঁতে চায় মন সুন্দর ফুল, সৃষ্টি করে পাষাণে দেবতা

অর্থ সন্ধান করে প্রতি মূর্ত অমূর্ত রূপে

শিশুর নিস্বার্থ হাসি, বিশুদ্ধ করে যায় দেহ ও প্রাণ

নিসর্গ টানতে চায় নিজের কাছে অনায়াস

মন হয় উঠে সহসা কবি অপ্রকাশিত

জীবনের মূল্য যায় হটাত বদলিয়ে, মুলায়ম


ভাব, কুতিস্ত লাগে সুন্দর, আস্তিক হয় উঠে কালা পাহাড়

জীবনের দৃষ্টিকোণে সপ্ত রঙ্গী ক্ষিতেজের উদয়


বন্য পুষ্প যেন প্রস্ফুটিত চতুর্দিগে

নব কোষে, নব পাপড়ির গায়ে  সঞ্চারিত  মধু কনিকা

মিলন বিন্দু চির সুবাসিত, অবিরল প্রহাবিত

উদ্গমবিহীন সে এক জলরাশি

মৌন বেলা শুধায় প্রেমের অনুভূতি

চন্দ্র ও চন্দ্রিমা করে অভিসার, নিশি প্রসুন

বৃন্তের বক্ষে করে আত্ম সমর্পণ
--- শান্তনু সান্যাল