শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

কোন অভিসারে

হাস্নুহানার গন্ধে মিলিত তোমার সেই গভীর নিশ্বাস,


কম্পিত অধরে আজ ও সুপ্ত, নিমগ্ন রয়েছে -

অনুত্তরিত চোখের কিছু প্রশ্ন খুবই জটিল রহস্যময়ী,

হৃদয়ের লাজুক পাতায় গুপ্ত, সংলগ্ন রয়েছে -

প্রথম মিলনের রোমাঞ্চ ভরা, মধুর অনুভূতি

থম থমে আকাশের গায়ে মুক্ত, ভগ্ন রয়েছে -

সাঁঝের বাউল মন উড়ে যায় যেন কোন অভিসারে

স্মৃতির অমূল্য মেঘদল বুকে যুক্ত, মগ্ন রয়েছে //

-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আর লজ্জা দিও না

কলঙ্ক যখন বয়ে চলেছি মাথায়, আর লজ্জা দিও না ,


এখানে সবাই নির্বস্ত্র, বরঞ্চ আবরণ মুক্ত করে নিও /

মুখোসের আড়ালে কত দিন, দিয়ে যাবে সতত ফাঁকি,

দর্পণ জানে ভালই ভাবে, লোম-প্রতিলোম রহস্য

মানুষ ছিলে কী এত দিন? অবশেষে গন্ধ ভরে নিও /

সুগন্ধে না কী ,কুত্সিত ভাবনায় পবিত্রতা আনে,

চন্দন বৃক্ষ বিষ মুক্ত, বিষধর লতিয়ে থাকার সত্তেও

সুতরাং কালরাত্রির পুর্বে, সহস্ত্র পুষ্পে মন ভরে নিও /

পাপ পুন্যে, দেয়া নেওয়া দুই জনের মাঝে- গুপ্ত সন্ধি,

নির্ভয়ে চরিত্রবান সেজে, ভিড় সরিয়ে মন্দিরে যেও //

-- শান্তনু সান্যাল

প্রেমের বৃতে

দেখেছি ত্বম রূপ, পূর্ণ শশি সম, শরতের নীলাম্বরে -


ডানপিঠে শিশুর উন্মুক্ত হাসির মাঝে খুঁজেছি

হারানো কিছু জীবনের পৃষ্ঠ, নিরুদেশ্য পথের ধারে,

শুনেছি ত্বম প্রণয়গান, জলপ্রপাতের বিহঙ্গম প্রবাহে

মহুয়া বনে শুনেছি, চেনা নিশি ডাক বহু বারে,

প্রতিচ্ছায়া মম, শুন্য নিয়ে করে কত আলোচনা,

আহত কবিতার অংশ, জেগে উঠে মৃদুল প্রহারে,

প্রেমের বৃতে ছিল অসংখ্য বিন্দু অবহেলিত -

বুকে লিপ্ত রয়েছে স্বপ্ন, , নগ্ন দেহ যেন আঁধারে,

- shantanu sanyal

সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত

ওরা আছে দেবতা কিম্বা দানব তারাই জানে


হাড় মাংসর শরীরে মানুষ থাকে এটাই সত্য,

চলন্ত জীবনে শুধুই দুই বেলার ক্ষুধার ছাড়া

অনেক কিছু দরকার, শ্বানসম জীবন বৃথা,

সহস্ত্র শতাব্দীর সভ্যতা ও সংস্কৃতির হ্বাসের পথে

ওরা এখন ও মুখোস নিয়ে কথা কয়,

চন্ডিমন্ডপে কর বদ্ধ প্রণাম করে, আবার

বিধর্মীর সম্মেলনে নিজেকে নাস্তিক বলে,

গাঙ্গেয় স্রোতের মাঝে সহস্ত্র হাত উঠে রয়েছে

তারা শান্তি চায়, অতৃপ্ত আত্মা পরিত্রাণ চায়,

শুধুই দেউলের বুকে অগ্নি, সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত !

তারা দানব কি মানব সময়ের হাতে,

অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্য চাই

যদি বাঁচতে চাও, মানবতা বাঁচাতে চাও,

হিংস মানুষ কিম্বা দানবের অস্তিত্ব

এই ধরা হইতে অভিশাপ মুক্ত কর --

জন অবতার দরকার, এক কৃষ্ণ, এক অর্জুন

না, কোটি কোটি অভিমন্যুর দরকার এই পথে //

-- শান্তনু সান্যাল







মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১০

মহাকাল রাত্রি

মহাকাল রাত্রি, তমস ঘন চত্বরে


অগ্নি পুরুষের আর্বিভাব -

ধ্বংস দেবালয়ে সহস্ত্র কন্ঠে নির্ভয়

সান্ধ্য পূজার কর আব্হান,

ত্রিশুল, খড়গ, হস্তে মুখে জয়ঘোষ

মহালয়ার নিশীথে অগ্নি ছুঁয়ে -

নিও আজ সপথ, দিও দেহদান,

তুমি কৃষ্ণ, তুমি সব্যসাচী, তোমার-

বীর্যে আছে জাতি অভিমান,

শাক্ত পন্থীর আবার মৃত্যু ভয় -

পুরুষ যদি আছ, আজ দিও প্রমান,

হে ভারত মায়ের গর্বিত সপুত

কুরুক্ষেত্রে আবার করো প্রস্থান,

দুর্যোধন, দুশ্শাসনের কুচক্রের হউক অন্ত

দ্রৌপদীর এলোচুলে আবার যেন

সাজে পদ্ম, শতদল ফুটুক পূর্ণ চন্দ্র

সম, হে ভরতবংশী করো আজ অগ্নিস্নান //

-- শান্তনু সান্যাল





 


ছদ্ম আবরণ

না হয় কিছু মিথ্যে, সাজিয়ে বলে যেতে


মধু মালতি লতার মাঝে কিছু নকল

পুষ্প ঝুলিয়ে যেতে, জানি যে প্রণয়ের

সুরভি চায় অনুতপ্ত, দগ্ধ, এক হৃদয় -না

হয় শুধু হাসির জালে ভুলিয়ে যেতে,

সজল নয়নে চেয়েছিলেম প্রতিশ্রুতি -

ফিরে আসবে বলে, পৃথিবী তো চাই নি

না হয় ছদ্ম আবরণ জড়িয়ে যেতে,

স্বপ্নময় ছিল যে অজানা জগতের রূপ

প্রেমের কল্পতরু কুসুমিত যেন শাখায়

শাখায়, না হয় নির্মম স্পর্শে সমস্ত

ভাবনার শিশির ঝরিয়ে যেতে,

রামধনু রঙ্গ চাই নি আমি কোনদিন,

না হয় ধুসর আকাশের কিছু ছায়া

জ্বলন্ত বুকে ভরিয়ে যেতে //

-- শান্তনু সান্যাল

রিক্ত নদীর ধারে

রিক্ত নদীর ধারে
বসে আছি একাকী সেই অনাম রিক্ত নদীর ধারে ,

শৈল চিত্রে কী কোন অজ্ঞাত ভাষায়, কবিতা

লিখে ছিলে, পড়তে গিয়ে দেখি বয়স কবে যে

অস্তাচলের পথে, সন্ধ্যা ত আর অপেক্ষা করে না

আঁধারে উড়ে যায় কিছু স্বরলিপি , সুর খুঁজে -

বেড়ায় মন,কার ভাসা ভাসা কন্ঠে এখন ও ,

শুনি মুখরিত রয়েছে ভালবাসার কিছু গান -

কে যেন ডাক দিয়ে যায়, অবশ্যই দ্বার গুলো

উন্মুক্ত রয়েছে, যুগ যুগান্তর ধরে সমান ভাবে -

জীর্ণ নিশিগন্ধার গায়ে ছোঁয়া ছোঁয়া মিষ্টি গন্ধ

হটাত উর্ধ মুখী, ধুপ যেন ছড়িয়ে ছে শেষ

জ্বলন্ত বুকে লয়ে মধুর আভাস, বেমৌসুম

বৃষ্টি ঝরে যায় নিস্তব্ধ রজনীর বৃক্ষে ,শেষ

প্রহরে সুকনো নদী সহসা যেন মহা প্লাবিত //

-- শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০

প্রতিদান

অশ্রুময় চোখে দিও না অর্ঘ্য


গহন আঁধারে কিছু দীপ ভাসিয়ে

ঘাটের চাতালে একাকী বসে

পথ চেয় না আমার,

শেষ নৌকার যাত্রী ফিরেছে কবে

মন্দিরে এখনো বৃন্দ গান

যেন উঠেছে ঝঞ্ঝা তুমুল কন্ঠে

প্রেমের আহুতি, ভষ্ম দেহ ও প্রাণ

নির্বন্ধ ছিল লুকোনো অনুরাগ

নদীর উতল ধারায় বিসর্জিত হলো

যুগের তৃষিত মান অভিমান

তুমি ছিলে, তুমি আছ, জানি একদিন

উদ্বেলিত মন পাবে অবসান

ফিরে যাও নীড়ে ক্ষনিক আবেশে

দিও না বন্ধু মহা প্রতিদান //

-- শান্তনু সান্যাল

হিংস দর্শন

আসন্ন প্রলয়ন্কারী চক্রবাতে


তুমি থাকবে মাঝ নদীর বুকে,

নৌকা ডুবির আগে যদি পারো

ঝাপ দিও, সুদূর তীরে পরিত্রাণ

পাবে, মুক্তির শিখা নিভি নি, এখনো

নদীর দুই ধারে আকাশ ভেঙেছে,

অনুতপ্ত মেঘের, বহু খন্ডিত দেউল,

বজ্রপাত থামি নি এখনো, ভাঙা

প্রতিমার অঙ্গে প্রতিশোধের অগ্নি

অবিরাম, সহস্ত্র দহনে জেগে আছে,

তোমার রচিত আগ্নেয় বলয়

প্রথমে তোমায় গ্রাস করবে,

হিংস মানুষের বলিদান চায়

মৌন সমস্ত দেব দেবীর আত্মা,

খুঁজে দেখো পূনর্জীবনের অমৃত,

যদি পেয়ে থাকো বাঁচিয়ে নিও

নিজের হিংস দর্শন --------------

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আসক্ত হৃদয়,

আসক্ত হৃদয়, মায়া মুক্তির পথে,


প্রাণের বাঁধন খুলতে দ্বিধা বোধ করে,

এখানে নিশ্বাস,দীর্ঘ রাতের পরে

কিছু খন থেমে থাকতে চায়,

সকালের বাতাসে প্রেমের কিছু গন্ধ,

অন্তরে ভেসে যায় মধুর পরিবেশে,

অর্ধ বিকশিত ফুলে, কার যেন

প্রতিচ্ছবি, অদৃশ্য শিকল পায়ে জড়িয়ে

যায় নিমিষে, আনমনা মন

আবার নব সন্ধির পথে অগ্রসর,

জীবনের ভাঙা গড়ার কাহিনী, ভালই

লাগে, দূর পাহাড়ের আঁকা বাঁকা

অরণ্য বিথিকায়,কুহাসা ঝির ঝির -

উড়ে যায়, সদ্য উদিত, সূর্যের নরম

স্পর্শ, হৃদয় ছুঁয়ে বলে -

শীত আসছে, ভালবাসা জড়িয়ে

রেখো যেন চিরদিন //

--- শান্তনু সান্যাল



বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ডাকনামের টান

সেই স্নেহভরা হাসিতে ছিল


বেদনার কিছু বিন্দু- বিসর্গ

ডাকনামের টান ও থাকে না কী,

বুঝতে বিলম্ব হলো, ফিরে দেখি -

শিমুলের গায়ে কাঁটা ছাড়া

ছিল ক একটা সোনালী তুলো,

পল্লব বিহীন গাছের ছায়া

পাখিরা আনমনা, উড়ে যায় পাস কেটে,

জীবনের পড়ন্ত বেলায়, জানি তারা

মিথ্যা আড়ালে আবার বাসবে ভালো,

সাঁঝের আগমনী, নিস্তব্ধ

শঙ্খ ধ্বনি,ধুপের বিলীনতা,

আপনজনের মুখে নতুন অভিনয়-

জেগে উঠবে, বেঁচে থাকার অদম্য উত্কন্ঠা,

কুড়োতে চায় আবার মন

নীল সাগরের কিছু ভাঙা ঝিনুক

সাজাতে ক্ষতি কী, স্নেহভরা হাসি যে

ফুরাতেই চাহে না,ডাকনামের টান !

চিরদিন জড়িয়ে থাকতে চায় বাহুপাশে //

-- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

শব্দবিহীন অভিব্যক্তি

শব্দবিহীন অভিব্যক্তি,অনেক সময় বলে যায়


গভীর কথা, যুগল অধর শান্ত নীল সমুদ্র,

দুই নেত্র অন্তরে স্পর্শ করে অগাধ ভাবে,

উচ্চ অট্টহাসির মাঝে, মুহুর্তে শুন্যতা ছেয়ে যায় /

শীতের পড়ন্ত বেলায়, মন চায় এক মুঠো রোদ,

যেন কিছু ক্ষন জানালায়,থেমে থাকুক আপনমনে

জীবনের মধুমাস খুবই চঞ্চল, কবে, কোন পথ হইতে

বাহির যাবে, উন্মুক্ত আকাশ সর্বদা নিরুত্তর /

--- শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১০

লাজুক প্রভাত( including english translation)


লাজুক প্রভাত


হৃদয়ের কোমল তন্তুর মাঝে

মধুরিম অনুভূতি,

প্রতিপলে বিভোর পরিধানে

প্রনয় জন্ম গ্রহন করে,

কখনো ছুঁতে চায় নীলিমার

অগুনিত আকাশকুসুম,

কার যেন দুই নয়নে, মায়াভরা

সন্ধ্যা নেমে আসে, লাজুক

থেমে থেমে, পদধ্বনির মাঝে,

শিহরিত রাকা উঠে যায় অম্বরে,

চন্দ্রমল্লিকার স্নিগ্ধ সুবাসে

পুরাতন স্পর্শ ভেসে যায়

নিশিগন্ধার অর্ধ বিলসিত বৃন্তে,

কিছু স্মৃতি অবাক চেয়ে থাকে

নিস্তব্ধ সেতার সহসা ঝঙ্কৃত,

অজানা ছায়াময় ভালবাসা

দুয়ার খুলে মিষ্টি মুখে,

স্বপ্ন গুলো জেদী, শিশু সম বায়না

ধরে রয়, চাঁদের উর্মি বেয়ে

যেতে চায় বহু দূরে, কোন

মধুময় প্রান্তরে, প্রীতির শিশির

যেন ঝরে,ঘুমন্ত জীবন জেগে রয়

নতুন ভোরে, পরিতৃপ্ত আলোর সন্ধানে //

-- শান্তনু সান্যাল

translation in english

the shy morning

into the delicate nerves

sweet experience is sprouted

every moment in new shape

desires want to touch the sky-

flowers, in some one s two eyes

magical evening is appeared

walking by hesitant steps

slowly moon rises

with daizy s fragrance

familiar touching immersed

into the bunch of tuber lilies

some memories silently looking

sitar recited itself

the unknown concealed love

opens the door with lovely smile

stubborn dreams want to walk

through the moonlight

wishing to go far away

in the beautiful land

drowsy life remained awaken

in the search of new dawn ,

শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ঐতিয্য

সতী দেহ লয়ে কাঁধে, মহাকাল সম


প্রেমের পরিনিতি, ছিন্ন ভিন্ন

অঙ্গ প্রত্যঙ্গ , আকাশ পথে হইতে

ঝরেছে ধরিত্রীর বৃক্ষে

স্নায়ু, মজ্জা,হাড়, মাংস, রুধির

বিন্দু বিন্দু প্রতিটি অংশ

ভুমিশাত করেছে ক্ষুদিত

কিছু নিশাচর মানুষ,

প্রগাড় রাত্রির পার্শ্বে উল্কাপাত,

পান্থশালার অনাম নামাবলী

নিশীথে জেগে উঠে ভয়াভয় রূপে,

দেহের গিদ্ধ ভোজ সারা রাত,

অরুনোদয়ে কুলিন মুখ করবদ্ধ

কালিঘাট মন্দিরে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে

পাপমুক্ত, কোন প্রবাহে বহে জীবন স্রোত

শুধুই মহাকাল জানে --

ঘোলাটে গাঙ্গধারা, প্রতিচ্ছবি অস্পষ্ট

ঘাটে ফেলানো কিছু অতীতের প্রস্তর খন্ড

ভাঙা বুড়ো শিবের দেউল

জটাধারী বট বৃক্ষ

ভেসে যায় স্থির তরঙ্গে সব ঐতিয্য ও

অর্ঘ্যের পুষ্প,

-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ফিরে যাও বন্ধু


ফিরে যাও বন্ধু , আগ্নেয়গিরির মুখে


ভালবাসার প্রতিশ্রুতি নিও না,

এখানে ফুল, মধু, নির্ঝর কিছুই নাই

শুধু ধুম্রময় আকাশ, বিষাক্ত বাতাস

জীবনের এলোমেলো ধ্বংশ স্তূপ,

চাঁদ উঠে, আপন মনে ডুবে যায়

অরণ্য বিথী কবে যে পুড়ে গেছে,

কিছু আধজ্বালা গাছের শাখায়

ঝুলানো রয়েছে স্বপ্ন মধুর,

অতীতের কিছু মাদল আর পদচিহ্ন

পদ্ম, সেউলি, মধুমালতী - -

ফুটে নিজের মনে, সুরুভি ছড়ায়

শরতের শেষে, মহানগরের বুকে --

আবার হারিয়ে যায় নিঃশব্দে, নিখোঁজ

কিছু মুখ হাত বাড়িয়ে বাঁচতে চায়,

মরাপুকুর, শুকনো নদীর বালু চর -

তাদের ঠিকানা চিরদিনের জন্য,

ভূমিগ্রস্ত করে, বন্যা ধুয়ে যায়

সমস্ত জানা অজানা মুখ, দেহ পরিনিত

হয় নতুন শল্খে গাথা যেন সরিসর্প,

দংশিত জীবন উঠে আসে আবার গুহার মুখে

বাঁচার প্রতিযোগিতায়, জলে বাস করলে

কুমির কে বাদ দেয়া এত সহজ নয় - বন্ধু //

-- শান্তনু সান্যাল

, আগ্নেয়গিরির মুখে


ভালবাসার প্রতিশ্রুতি নিও না,

এখানে ফুল, মধু, নির্ঝর কিছুই নাই

শুধু ধুম্রময় আকাশ, বিষাক্ত বাতাস

জীবনের এলোমেলো ধ্বংশ স্তূপ,

চাঁদ উঠে, আপন মনে ডুবে যায়

অরণ্য বিথী কবে যে পুড়ে গেছে,

কিছু আধজ্বালা গাছের শাখায়

ঝুলানো রয়েছে স্বপ্ন মধুর,

অতীতের কিছু মাদল আর পদচিহ্ন

পদ্ম, সেউলি, মধুমালতী - -

ফুটে নিজের মনে, সুরুভি ছড়ায়

শরতের শেষে, মহানগরের বুকে --

আবার হারিয়ে যায় নিঃশব্দে, নিখোঁজ

কিছু মুখ হাত বাড়িয়ে বাঁচতে চায়,

মরাপুকুর, শুকনো নদীর বালু চর -

তাদের ঠিকানা চিরদিনের জন্য,

ভূমিগ্রস্ত করে, বন্যা ধুয়ে যায়

সমস্ত জানা অজানা মুখ, দেহ পরিনিত

হয় নতুন শল্খে গাথা যেন সরিসর্প,

দংশিত জীবন উঠে আসে আবার গুহার মুখে

বাঁচার প্রতিযোগিতায়, জলে বাস করলে

কুমির কে বাদ দেয়া এত সহজ নয় - বন্ধু //

-- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১০

মুখোস

মুখোস


মুখরিত উচ্চ শিখরে অনুষ্ঠান


বিদেশী আতরে ভরা প্রগতি সদন,


দামী মদের ঝাক ঝাক বোতলে সুপ্ত


বিদেশী যত সব, আয়াতীত বিচারধারা /


পাশ্চাত্য ও পুরাতন সভ্যতার মিলন বিন্দু


দীর্ঘ ভাষণের পার্শ্বে শুধুই শুন্যতা,


অবিরল এক বৃদ্ধ গেয়ে যায়


অবনতির বিজয় গাথা, দাবি করে


সমাজের উন্নতির জন্য যেন পৃথিবীর


সমস্ত সুখ ছড়িয়েছে, আবার বহু দর্শক


মুখ চাপা দিয়ে হেসেই চলেছেন /


প্রগতির দর্পণ, মুখোসের আসল রূপ


দেখে নিজেই ভেঙে বহু কোণে


এই ভাবে বিলিন হলো যে হদিস পাওয়া


মুশকিল, মানবিকতার মশাল নিভে চলেছে,


আস্তে আস্তে অনুষ্ঠান শেষ মুখী,


দর্শক বিহীন মঞ্চে রয়েছে ক একটা


পুষ্প মালা আর সহস্ত্র মুখোস //


-- শান্তনু সান্যাল



সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০

স্বপ্নবৃন্তে বৃষ্টি ঝরায় অহর্নিশি

সে অপরূপ মায়া শুধায় প্রেমের উত্সর্গ


হয় তো আজ ও রয়েছে যিশুর পৃথিবী,

পদদলিত, অসুন্দর, অবহেলিত হৃদয়ে

তুমি আছো নিরব, মানুষের মাঝে,

করুনামুখী নির্ঝর দেখেছি সজল চোখে,

পরিত্যক্ত শিশুদের হাসি, জীবনের

ইতিকথা লিখে যায় হারানো পৃষ্ঠে,

অজানা দুটি হাত সহসা উঠে আসে

ভালবাসা জড়াতে চায়, মিষ্টি শীতের

গায়ে নরম যেন দিনান্তের শেষ আলো,

বাজারের নীলাম মঞ্চে,অদৃশ্য মুখ

সহসা বুকের কাছে জড়িয়ে বলে, ভয়

নাই তোমায় বিক্রয় হতে দেব না,

অনুরাগের চিকন আবরণে, ঝরিত

অশ্রু ধারা সে আত্মসাত করে সহজে,

কেমন করে, কীভাবে সে উঠে আসে,

আমি আজ ও বুঝতে পারি নি,

তার হটাত অকস্মাত আসা, মনের

স্বপ্নবৃন্তে বৃষ্টি ঝরায় অহর্নিশি //

--- শান্তনু সান্যাল

মুক্তির পথ

নিঃশব্দ পাখিরা উড়ে যায় অন্তরিক্ষে


ছায়াময় রাত্রি ঘুমন্ত পৃথিবী,

অন্তহীন অন্ধকার, যেন অশেষ প্রাচীন

এক গুহার মুখোমুখি আমার

অস্তিত্ব, বুকে পাষাণ বয়ে চলেছে --

চন্দ্র বিহীন আকাশ, নিরবতা সঘন

তবু যেন জাদুভরা চোখে তারাদের

আলো অজানা ভাষায় গল্প করে,

গোপন এক নদী একাকী বয়ে চলেছে

গন্তব্যহীন সাগর সঙ্গমে,বহু দূর -

আমাদের বন্ধুত্ব পুরাতন, আমি এবং

নদী প্রায: গল্প করি, তার কাহিনীর

কোনো ইতি নাই, শুনতে ভালো লাগে

এক বৃদ্ধ পুরোহিত, নাকি এক দিন

নিজের শ্রাদ্ধ নিজেই করতে গিয়ে বলে-

হে নদী, ছদ্ম যত সব আত্মীয়তা ছিল

মনের মাঝে তোমার অতল জলে তিলাঞ্জলি

দিয়ে মোহপাশের বাঁধন আজ খুলে দিলাম,

নদী নাকি মৌন উত্তর দিয়ে ছিল

এতই সহজ যদি হত, মুক্তির পথ -

যুগে যুগে অভিশাপিত জলরাশির ভার

আমিও যে কেন বয়ে যেতাম,

স্বেচ্ছায় শুকিয়ে দায়িত্য মুক্ত হতাম //

- - শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

প্রতিশ্রুতির চিঠি

অন্তর্দ্বন্দের মাঝে প্রেম যে


কখন হারিয়ে গেল নিজেই জানি না

অনুতপ্ত হৃদয়ে একাকী ফিরে দেখি

বহু দূর তুমি ছায়া সম

বিলীন হয়েছ উতলা নদীর স্রোতে

ঘাটের সোপানে প্রতিশ্রুতির চিঠি

মিষ্টি কিছু সুন্দর মুচকি হাসি

চেনা চেনা দেহের গন্ধ

হটাত যেন ভেসে ওঠে /

প্রজাপতির পাখার স্পর্শ

হাতে রয়েছে এখনো কিছু

সেউলি গন্ধে মাখা মিলন বিন্দু

সাঁঝের আকাশে মেঘের চিত্রলিপি

এলোমেলো, অন্যমনস্ক বালুর চরে

কিছু পদ চিহ্ন

হটাত যেন ভেসে ওঠে /

ঘোলাটে স্বপ্নের চক্র ধারায়

শিশুদের কাগজের নৌকায়

তোমার প্রতিচ্ছবি কিংবা

হারানো চিত্রকরের শেষ কৃতি

জানি না কি যে হয় অলস সন্ধায়

নদীর বুকে হটাত স্মৃতি গুলো ভেসে ওঠে //

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

হলাহল পান

হলাহল পান করা এত সহজ নয়


সূর্যের আলো তে উলঙ্গ দেহ

বৃতৃষ্ণা জাগায় হৃদয়ে

আবার গহন আঁধারে চরিত্র

নগ্ন হয় যায় সহজে

আত্ম বিশ্লেষণ করা খুবই

কঠিন, দুরুহ প্রতিক্রিয়া

সর্বদা নিজে কে ফাঁকি দিয়ে

দর্পণ কে দোষ দেয়া চলে না

খননে অনেক সময় নিজেই

ঝাপ দিয়ে যায় মানুষ

মৃগতৃষ্ণা ও সজল নদীর

প্রবাহে তপাথ কৃতিম নয়

ফাল্গু নদীর বুকে কবে যে

আবার জল রাশি ঢেউ তুলবে

সুজন মানুষ বারে বারে ভুল করে

না, বালুর তলে জল লুকানো থাকে

সে জানে ভালো ভাবে -

সঠিক মুহুর্তে পিন্ড দান করাই বুদ্ধিমতা,

অযথা প্রেতের অভিশাপ বয়ে নেয়া মুর্খতা //

--- শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ত্রিশূলের মুখে শীষ অর্পণ করে

হে রিপুদল নাশিনী,


সহস্ত্র বাহু ধারিণী

হে মাত, অগ্নিপুরুষ জন্ম দিও

যে মেদিনীর বক্ষে আগ্নেয় গিরি সম

অধর্মির রক্তে স্নান করে

দেবালয়ের রক্ষার্থ

ত্রিশূলের মুখে শীষ অর্পণ করে

হে মহামায়া জগত জননী

অগ্নি কন্যা জন্ম দিও

যে দ্রৌপদির এলো কেশে

প্রতিশোধের আগুন সাজাতে জানে

হেয় দেবী দুগ্ধ দিও না

শিশুর মুখে যেন অমৃত পড়ে

পৃথিবীর সমস্ত ব্যথিত

প্রতারিত, অপমানিত, তৃষিত

মানুষের মুখ চেয়ে

সে যেন প্রাণ বলিদান করে

হে জগত জননী, মা ভারতী

শুধুই অগ্নি পুরুষ ও অগ্নি কন্যা

জন্ম দিও ।

-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আমিও তো স্বজাতি

এই ভাবে জীবিত থাকা আত্ম হনন ছাড়া কিছু নাই


মেরুদন্ড বিহীন, তারা বলে তুমি বাঁচতে জানো,

আমি বলি তুমি মৃত,বেঁচে থাকার অধিকার

কখন তাহারা কেঁড়ে নিয়েছে, সে জানো ?

এই দেশে,পূর্বে তুমি বাঁচার জন্য

নিজের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তিত,

একই দেশে পশ্চিমে উন্নতির উদয়

তারা অনুদান দিয়ে গর্ভিত --

কারা বাঁচতে জানে আর কে প্রতি মুহুর্তে

মৃত্যু মুখী নিজেরাই বিচার কর,

যদি না, তাহলে পুড়িয়ে দাও সমস্ত ইতিহাস,

ভুলে যাও রবি, বঙ্কিম, শরত

তাহাদের আত্মা দুঃখ পাবে

যে জাতি নিজের অবন্নতি কে নিয়তি বলে

তাহাদের জন্য আত্মঘাত ছাড়া কোন

পথ নাই,চল আমিও বিষ পান করি - - -

আমিও তো স্বজাতি -- তা ভুলতে তো পারি না //

-- শান্তনু সান্যাল

পরজীবী


পরজীবী অমর বেল,ছদ্ম অনুরাগ



সহজে দেহচ্যুত করা যায় না


বট বৃক্ষ বাঁচাতে হলে, বন্য লতা

কেটে ফেলতে হয়, এটাই নিয়ম,


বন্য মোষ দল বেঁধে যদি এক হয়


সিংহ কুটুম্ব পথ খুঁজে পায় না,


মানুষ এখনো বিলুপ্ত হয় নি


পৃথিবীর বুকে রাজত্ব চরাচর,


মহাভারত মিথক তোমার চোখে

সাধারণ মানুষ অন্তরে কুরুক্ষেত্র


লয়ে বেঁচে আছে দিবা নিশি,


দাবানল বিক্ষিপ্ত পথিক অবিরাম


যদি ছড়ায় ভালো মন্দ ভুঝে না,


পথের সমস্ত বাধা সমুল নষ্ট করে


যায় নিমিষে,প্রকৃতির এটাই নিয়ম,


বৃহত কোন দর্শনের দরকার বৃথা //
-- shantanu sanyal