অগ্নি বলয়ের ওপারে
সন্ধ্যা নামার পূর্বে কপিন্জলের ডাকে
ঝিলের তরঙ্গ সহসা যেন অস্থির -
কিছু ক্ষণেই বোধ হয় বৃষ্টির
ঝাঁপ ভিজিয়ে যাবে অন্তর্মনের দহন,
মেঘেরা ভিড় করে আছে,
মালভূমির উপরে, সুদুর পাহাড়ে কি
রাত অসময়ে ঘিরে আসে ?
তোমার এই প্রশ্নের মধ্যে আমি দেখি
সহসা হয় উঠেছি ক্রুর আলফা
নেকড়ে, সিগারেটের ধোঁয়া মুক্ত করে
মন চেয়েছিল তোমার অস্তিত্ব
সম্পূর্ণ ভাবে গিলে নিতে, ঘোরের -
সান্দ্রতা তখন আঠাল, তুমি
ফেলে চলেছ টোপের অপর টোপ -
দুজনই নিজের জগতের স্বামী,
স্বয়ংভূ, বিশৃঙ্খল দুই উন্মুক্ত চরিত্র !
অভয়ারন্যে বর্ষা তখন চূড়ান্ত
ভাবে ঠেলে চলেছে শুকনো নদীর -
বালু, পাথর, তীরের অশক্ত
ঝোপ যেন নিজেই ভেসে যেতে চায়,
নুয়ে পড়ছে একের পরে এক,
তখন তুমি কিছুই শুনতে রাজি না,
আমি চাই নি বিশ্বাস কর এই
ভাবে তোমায় উধ্বস্ত করতে, কিন্তু
তুমি নিজেই চাও নিজেকে
উজাড় করতে, তাই করে গেছ সেই
মনের খুব নরম ভাগে ঘাত -
প্রতিঘাত, জাগিয়ে গেছ সুপ্ত পৌরুষ,
সেই পান্থশালায় তোমার পৃথিবী
অন্ধকার, কেড়ে নিয়েছি আনুগত্য !
জানালার কাচে তোমার আগামী
সকাল, ভিজে কাঁপছে একাকী,
আমি এখন গর্বিত পুরুষ দাঁড়িয়ে
দর্পণের মুখে নির্লজ্জ ভাবে
পরে চলেছি অধোবস্ত্র, তুমি খুঁজে
চলেছ এমন সময় বিছিন্ন
সিঁদুরের কৌটো, বিবর্ণ কাজলদানী,
মরিচিকার পথে মমতাময়ী
মরুদ্যান, আমি নিজগৃহে এখন আর্য
সুপুরুষ, ভদ্র এক জন, তুমি
শুধুই এক রাত্রির প্রহসনের অংশ -
আমার কাছে তোমার এই
পরিচয়, যবনিকা ফেলার পরে কে
তুমি, কে আমি, অনুবন্ধের
খেলা তুমি নিজেই খেলতে চাইলে এখন
বলার কিছুই নাই, মৌন অনন্ত,
-- শান্তনু সান্যাল