বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১০

ইচ্ছা মৃত্যু

ইচ্ছা মৃত্যু 

সেই কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকাল
গায়ে জড়ানো সাধারণ শাল
হেদুয়ার সেই বিবেকানন্দ রোডে
তুমি পথ চেয়ে ছিলে, সেই নীম গাছ,
অমলতাস কী শিরীষ কিংবা হয় ত 
কৃষ্ণচূড়া,পার্কের বেঁচে বসে অনেক ক্ষণ 
গল্পের মাঝে জেনেছিলাম যে 
তুমি আমায় ভালবাসতে, 
ট্রাম বাসের চলাচল সে দিন ছিল কম
মনে হয় সে দিন ছিল রবিবার,
ঢেউ খেলানো চুলের মাঝে 
কিছু অতীতের পৃষ্ঠে ছিল 
লুকানো রজনীগন্ধা, মেঘবিহীন
নযনাকাশে সে দিন ও ছিল প্রেমাঞ্জন,
আমি চেয়ে ছিলাম  পড়তে বহু দিন পরে 
পুরাতন অভিলেখের ভাষা,
তুমি নিস্তেজ চোখে চেয়ে ছিলে শুন্যে, 
ধুম্র্ময় আকাশে সূর্য্য তখন ও  অস্পষ্ট
ভাস্যমান, কী হলো কোথায় যে হারিয়ে গেলে?
অপ্রত্যাশিত তোমার উত্তরে আমি খুঁজেছিলাম 
প্রণয়ের লুপ্তপ্রায় বিশাল উপত্যকা 
যুগে যুগান্তর ধরে যথাবত 
যেন পরিপূর্ণ স্থির গভীরতম জলরাশি,
অনন্ত সলিলা,কিন্তু সচক্ষে কেও সে দেখি নি 
নীচে গড়ানো শাল, হাতে তুলে আমি শুধুই 
তোমার মৃতপ্রায় দেহে আসতে জড়াতে গিয়ে 
নিজেকেই মৌন প্রশ্ন করলাম -
প্রেমের কী ইচ্ছা মৃত্যু সম্ভব !
-- শান্তনু সান্যাল 
 painting - kanchanmala ghosh     

বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১০

ভালই ছিলাম

বেশ ভালই ছিলাম 
পুকুর পারে কলমির গন্ধে 
টিয়া রঙের কদলী পাতায় 
শালিকের আপন মনে, চাতালে 
বসে একাকী ভিন্ন ভাষী গল্পের মাঝে,
বাজের মত ধুসর ডানায়
কে যেন ঢিল ছুড়ল, শান্ত মনে -
দ্বিপ্রহরের ঘুমে ওই ছিঁটে ফোঁটা
বর্ষায়, হটাত তোমার প্রেমের চিরকুট 
উড়ে আসে ভেজা দালানের গায়ে, 
আমি পড়তে চাই নি এটাও মিথ্যে 
কিন্তু ভিজতে দিতে চাই নি ওটাও সত্যি 
আদ্র সাঁঝের সঙ্গে বৃষ্টি ও কেঁপে উঠলো 
অর্ধ উলঙ্গ যেন কোনো বৈরাগী, 
মিষ্টি অনুভূতির সেই চিঠির নৌকা 
না চেয়ে ও ভাসিয়ে দিলাম
অজানা নদীর ধারে,
কবে যে ভিজে গেছি মনে নাই 
নৌকা ভাসানোর ব্যথা নিয়ে বুকে 
আজ ও বসে আছি সেই শঙ্খ ঝিলের তীরে 
বর্ষা থেমে গেছে বহু দিন আগে, 
আকাশের গায়ে রঙ্গ ধনু যেন আবছা 
ধুয়ে গেছে ভালবাসা //
---- শান্তনু সান্যাল  

মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১০

প্রেমের মায়া

নীলাভ তিমিরে সাঁঝের আলেয়া, ভেসে উঠে অসংখ্য 
প্রাচির গগনে, দেখি ত্বম অপরূপ দিব্য  প্রেমের মায়া,
মন্থর গতি লয়ে বহে যায়, দুই নদীর সুপ্তময়  কিনারা 
বহু দূর ক্ষিতিজে মিশে একাকার,স্নিগ্ধ দুটি মূর্ত ছায়া ,
মালবিকা বনে চন্দ্রিমা ঢেলে যায় অবিরল প্রণয় সুধা,
অনন্ত কালে পরিণিত মুক্ত ছন্দ, আজ যেন একান্ত কায়া,
অজ্ঞাত বৃক্ষে রয়েছে,স্বপ্নময়ী কৃষ্ণচুড়ার অগনিত কুড়ি
 মধুমাস পলাশের সন্ধানে, আজি বেয়ে যায় জীবন খেয়া,
সুদূরে জোনাকিদের দ্বীপে, বাউলের লেগেছে মস্ত  মেলা,
একতারায় মহামিলনের গান, হৃদয়ের শুধু নেয়া দেয়া, 
প্রাচির গগনে, দেখি ত্বম অপরূপ দিব্য প্রেমের মায়া //
---- শান্তনু সান্যাল  

সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১০

সুপ্রভাত

সুপ্রভাত
কাঁচা হলুদ রঙ্গে, ভোরের আলো
শুভ্র চন্দ্রমল্লিকার বুকে সজল কম্পন,
তুমি কী ঘুমিয়ে আছো এখনো
হৃদয় দিয়ে যায় সমানে ডাক, শুনো নি,
শরত সকালে মিলনের প্রতিশ্রুতি  ?
শ্রাবনের মেঘ নিশ্চই জানিয়েছে!
প্রেমের আমন্ত্রণ, সঘন আকাশে
লিখে যায় নি সৌদামিনী স্বরলিপিকা!
স্মরণে দোলা দিয়ে যায় না
মালতি গন্ধে ভরা প্রথম যুগ্ম অধর
নিশ্বাস বিনিময় শিহরিত আলিঙ্গন,
সাড়া দিয়ে যায় অবশ্যই
দেহের বিশ্রঙ্খলিত আবেগ, উন্মুক্ত চেতনা,
কই  বেলা গড়িয়ে গেল তুমি দ্বার  যে
খুলতে ভুলেই গেছ, মনে হয় বিহানের
স্বপ্ন এখনো তোমায় বুকে জড়িয়ে রয়েছে,
গলিয়ে গেলাম দরজার নিচে দিয়ে কিছু
অশ্রু ভেজা পুষ্প গুচ্ছ -- শুভেচ্ছা সহ /
--- শান্তনু সান্যাল
photo - Nkhilesh Sanyal - Dacca

শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১০

ডুবে গেছে ভালবাসা

ডুবে গেছে ভালবাসা 
১ -অসময় কড়া নাড়ার শব্দ 
    শব্দে মনে হলো শুনেছি সে 
    বহু কাল আগে, রহস্য ও 
    কৌতুহলের মাঝে, দরজা 
    খুলে দিলাম, গাল ভরা দাড়ি 
    কঙ্কাল দেহে রয়েছে কিছু 
    ক্ষত, ঘায়ের অমিট দাগ 
    কলিঙ্গ বিজয়ী যেন মহা যোদ্ধা 
    নিরস্ত্র দাড়ায়ে আছে সম্মুখে 
    নিখোঁজ আমার প্রতিচ্ছায়া 
     ফিরে পেলাম কোন অরণ্য পথে,
     আজ আমি নিজেই নিহত 
     বাহিরে উল্লসিত বৃন্দ গান 
     জানি না কোন পন্থের অনুযায়ী 
      আগে তো আর তাদের দেখি নাই, 
      সমানে গেয়ে চলেছে অজানা 
      ভাষায় অবিরাম একসুরে,
      আত্ম উত্থানের বিস্মৃত গান 
      আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন 
      কে জানে কোথায় বয়ে যায় 
      আনন্দ ধারা --------------
২  এই কোলাহলের মাঝে প্রতিধ্বনি বিলুপ্ত 
     শিশুরা খেলছে নদীর চরে
      লিখছে কিছু হারিয়ে যাওয়ার কবিতা 
     ওই মাঠের শেষে কিছু ছায়া 
      সহসা উধাত যেন অজ্ঞাত মায়াজালে 
      বহু দূরে মনে হয় তাহারা খেলে 
      লুকুচুরি, 
      চেয়ে ছিলাম থামাতে ঢেউর অশান্তি 
      সাগর সৈকতে তুমি আর পথ 
       চাও নি, উদাস মনে ফিরে গেছি,
       জানি তুমি আর সে তুমি নও 
       প্রতিধ্বনির পথে হয় তো 
       জেগে উঠেছে ঘুমন্ত পাহাড় কিংবা 
       রমনীয় পর্যটক স্থল
       এক ঝিলিক রোদে ডুবে গেছে 
       ভালবাসা 
     -- শান্তনু সান্যাল  
      

শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১০

অহম অনন্ত স্বপ্ন পশ্যামি

অদ্ভুত নীলাভ ওই দৃষ্টি 
শুন্য নিয়ে উঠে আসে অন্তরীক্ষে 
জীবনের অবুঝ প্রহর
গতিমান, চিরস্থায়ী, চিরন্তন 
প্রশ্নের আলো ছায়ার মাঝে 
নিয়তির ধুম্র বলয় নিমিষে নিজের 
খেলা নিঃশব্দে দেখিয়ে যায় 
শুধু রয়ে যায় এক শ্বেত দীর্ঘ রেখা 
উর্ধমুখী বিলীনতার দিগে 
আকাশ অবাক যেন বুঝতে চায় 
মিসরের অজ্ঞাত চিত্র লিপি 
কিংবা ভাগ্য লিখন গভীর ভাবে 
এখানে জীবনের উদ্গম এখানেই 
মৃত্যুর মহাপ্রস্থান ও শেষে 
অহম অনন্ত স্বপ্ন পশ্যামি -
--- শান্তনু সান্যাল 

সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১০

হিন্দী গজলের বাংলা অনুবাদ


হিন্দী গজলের বাংলা অনুবাদ

মেঘ দল বর্ষণ করে কবে যে হারিয়ে গেছে , জানি না
মন যেন এখন তৃপ্ত
পাহাড়ের গায়ে উঠছে কুহাসা
মনের কোলাহল থেমে গেছে যেন
তৃষিত হৃদয় খুবই অশান্ত ছিল
অশ্রু ঝরার আগে,
আদ্র নয়ন পাতে, ঝরিত জল বিন্দু
আজ সুন্দর মখমলি সন্ধ্যা লাগে
সুকনো ফুলের অবশেষ, এখন রয়েছে
জীবন নিখুঁত নয় বন্ধু
আলোর শহরে হারিয়ে গেছে
সে যে আমার আঁধারের বন্ধু
আইনা প্রমাণ চাহে
আমার মুখ অনাম, অচেনা লাগে
চিঠি এখন ও রয়েছে
অবশ্যই লিখন মিটে গেছে
স্পর্শ করলে যেন এক মিষ্টি ভাব
মনের নিকটে সেই নাম রয়ে গেছে
ওই আসরে বহুবার নিজের ছায়া কে
আমি বাঁচিয়েছি
প্রেয়সী পূজক, আরো জানি না কত
অভিযোগ তাহারা দিয়েছে
বিক্ষিপ্ত দশায় মরা ও মুশকিল
আবার বাঁচার উত্কন্ঠা মনে জাগে
প্রারন্ভ আর মনে নেই
শেষের তীক্ষ্ণ তীব্রতার, আর ভয় নাই /
-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১০

মোহভঙ্গ


মোহভঙ্গ

অন্তহীন অন্তর্দ্বন্দের মাঝে পেয়েছি তোমায়
ফিরে যাওয়া সমস্ত উচ্চ নিম্ন ঢেউর গায়ে
লেখা ছিল প্রেমের ইতিকথা তীরের পৃষ্ঠে ,
এখনো রয়েছে চাবুকের দাগ, দিয়ে গেছ -
পরিপূর্ণ দংশ সুন্দর ভাবে নিরন্তর ছোবলে,
তটের সীমাবর্তী, অনাম চারা গজিয়ে উঠেছে
হয় তো পুষ্প ও ফুটবে একদিন, ভ্রুণ গুলো
হয়েছে স্বপ্ন, তোমার গর্ভের বাইরে ও নিশ্বাস
নিতে পারে তারা, তুমি নিশ্চই তা জানো,
পুনঃ সমর্পনের জন্য তোমার আসতে ই হবে
পুর্ণিমা নিশা আর মোহভঙ্গ, প্রতিদংশ অবশেষে
ফিরে যেতে পারবে কি মাঝ দরিয়ায় ?
-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১০

হলুদ রাঙ্গা পাখি


হলুদ রাঙ্গা পাখি
পাহাড়ের গায়ে, শ্রাবনী মেঘদল যখন ভেসে যেত
সেই আঁকা বাঁকা অরণ্য ফুলের বীথি
বউ কথা কও- ডাকে ভরে উঠত বন প্রান্তর
ঠিক তোমার মধুরিম হাসি সম
স্মৃতির কাঁচঘরে যেন মুখরিত মৌনপ্রনয়
আন্দোলিত হৃদয় ছুঁয়ে যেতে চায়
মহানগরের আকাশী রহস্য, কিছু চিরকুট মেঘ
আজ ও হলুদ রাঙ্গা পাখির কাতর ডাক
মাঝে মধ্যে বেদনা ছড়িয়ে, জানি না কোন
দিগন্তে উড়ে যায় নিমিষে
রামধনু আজ ও উঠে ধুম্রময় আকাশে
সপ্তরঙ্গ মনে হয় আবছা আবছা
বর্ষার জলে যেন ভিজে উঠেছে প্রেমপত্র
-- শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১০

নিখোঁজ নিজেই ছিলেম, খুঁজে পেলাম তোমায়
এখানে শিরীষ ঝরে নিশব্দে,কে যেন গান গেয়ে
যায় রাত্রিশেষে, আঁখিতে ভালবাসার রঙ্গ ঝরে ,
অবশ্যই জানালার পারে তুমি প্রায় দাড়িয়ে রও
ইঙ্গিতে জানিয়ে দিতে চাও জ্বলন্ত সীমারেখা,
আমি সহজে তোমার বর্চস্ব মানতে চাই না /
-- shantanu sanyal
/

বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১০

পুনরায় বলিদান

আদ্রা নক্ষত্রে,তমস ঘন, শ্রাবনের সেই তুমুল বর্ষনে

তুমি দিয়ে ছিলে অভয়দান, আমি চেয়ে ছিনু ভয়ে 

শুধুই আশ্রয়, মাত্র এক ভয়াবহ নিশিথের  প্রতিদান /

জেনে ও যে, আমি এক  শত্রু দেশের পলাতক সৈনিক 

রুধির ঝরিত বাহুতে,তুমি বেঁধে ছিলে প্রেমাঞ্চল 

করুণাধারায় পরিতৃপ্ত হল, মম আহত দেহ প্রাণ /  

বুদ্ধবিহারে উঠে ছিল,অভিযোগ সমবেত কন্ঠে

সংঘ প্রমুখ দিয়ে ছিল, তোমায় মৃত্যু উপহার

দুই প্রাঞ্জল নেত্রে, ছিল মুক্তি, করেছি মুক্তিস্নান /

নিশান্তে, সমস্ত ভিক্ষু জড়িত ছিল চৈত্য প্রাঙ্গনে

লাঞ্ছিত, অপমানিত, তেজস্বিনী মুখে ছিল হাসি,

হাতে বিষ পাত্র, নিয়ে বললে এটা নব অবসান /

হে! তথাগত, মানব প্রেমে নিও পুনরায় বলিদান //

-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০১০

পাষাণী স্রোত

কহিতে পারি নি, মনেই ভস্মিভূত রইলো প্রণয়ের অগ্নিশিখা,

দিও না পুনরায় আভাস, দক্ষিনা বাতাস মম  সুপ্তান্তরে   /

হারানো সুর খুঁজে স্বরলিপি, আহত  সর্ব প্রেমানুভূতি,

দু দিগে বহে নীল জলধারা, মৌন বেদনা মধ্যান্তরে /

জীবনের প্রতিচ্ছবি অঙ্কিত ছিল বহু খন্ডিত প্রাচীরে,

খসে পড়েছে প্রস্তর রঙহীন, বিলুপ্ত ভিত্তি  ও কালান্তরে /

প্রাচীন একাকী দেউল রয়েছে কী এখন অরণ্যের মাঝে,

শুনেছি অতৃপ্ত পাষাণী স্রোত, বহে যায় তাহার সমানান্তরে /

পলাশময় ছিল মনের বাতায়ন, বন্য কুসুমিত ভালবাসা ,

ভুলে গেছি রহস্যময় সে বন পথ, ক্রমশ সময়ান্তরে //

-- শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০১০

শশিবিম্ব

নির্ঝর হাসির সঙ্গে ছিল, কিছু মিলিত পুরাতন  অশ্রু বিন্দু 

ধুম্র উঠে ছিল বহু কাল আগে, আজ ও কেন সজল আঁখি /

ভুলিতে গিয়ে জড়িয়ে এলে, যেন বন বল্লরী কেতকী অঙ্গে

অবাক চেয়ে রয় শশিবিম্ব, কি ভাবে হৃদ কম্পন ঢাখি /

মেঘবিহীন আকাশ, বিস্তৃত নীলাঞ্চল যেন মহা জলধি

মনের পৃথিবী উধ্বস্ত, দিবা নিশি বয়ে যায় কালবৈশাখী //

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০১০

মোহভঙ্গ,

অন্তহীন অন্তর্দ্বন্দের মাঝে পেয়েছি তোমায় 

ফিরে যাওয়া সমস্ত উচ্চ নিম্ন ঢেউর গায়ে 

লেখা ছিল প্রেমের ইতিকথা তীরের পৃষ্ঠে ,

এখনো রয়েছে চাবুকের দাগ, দিয়ে গেছ -

পরিপূর্ণ দংশ সুন্দর ভাবে নিরন্তর ছোবলে, 

তটের সীমাবর্তী, অনাম চারা গজিয়ে উঠেছে

হয় তো পুষ্প ও ফুটবে একদিন, ভ্রুণ গুলো

হয়েছে স্বপ্ন, তোমার গর্ভের বাইরে ও নিশ্বাস

নিতে পারে তারা, তুমি নিশ্চই তা জানো,

পুনঃ সমর্পনের জন্য তোমার আসতে ই হবে

পুর্ণিমা নিশা আর মোহভঙ্গ, প্রতিদংশ অবশেষে

ফিরে যেতে পারবে কি মাঝ দরিয়ায় ?

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

কোন অভিসারে

হাস্নুহানার গন্ধে মিলিত তোমার সেই গভীর নিশ্বাস,


কম্পিত অধরে আজ ও সুপ্ত, নিমগ্ন রয়েছে -

অনুত্তরিত চোখের কিছু প্রশ্ন খুবই জটিল রহস্যময়ী,

হৃদয়ের লাজুক পাতায় গুপ্ত, সংলগ্ন রয়েছে -

প্রথম মিলনের রোমাঞ্চ ভরা, মধুর অনুভূতি

থম থমে আকাশের গায়ে মুক্ত, ভগ্ন রয়েছে -

সাঁঝের বাউল মন উড়ে যায় যেন কোন অভিসারে

স্মৃতির অমূল্য মেঘদল বুকে যুক্ত, মগ্ন রয়েছে //

-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আর লজ্জা দিও না

কলঙ্ক যখন বয়ে চলেছি মাথায়, আর লজ্জা দিও না ,


এখানে সবাই নির্বস্ত্র, বরঞ্চ আবরণ মুক্ত করে নিও /

মুখোসের আড়ালে কত দিন, দিয়ে যাবে সতত ফাঁকি,

দর্পণ জানে ভালই ভাবে, লোম-প্রতিলোম রহস্য

মানুষ ছিলে কী এত দিন? অবশেষে গন্ধ ভরে নিও /

সুগন্ধে না কী ,কুত্সিত ভাবনায় পবিত্রতা আনে,

চন্দন বৃক্ষ বিষ মুক্ত, বিষধর লতিয়ে থাকার সত্তেও

সুতরাং কালরাত্রির পুর্বে, সহস্ত্র পুষ্পে মন ভরে নিও /

পাপ পুন্যে, দেয়া নেওয়া দুই জনের মাঝে- গুপ্ত সন্ধি,

নির্ভয়ে চরিত্রবান সেজে, ভিড় সরিয়ে মন্দিরে যেও //

-- শান্তনু সান্যাল

প্রেমের বৃতে

দেখেছি ত্বম রূপ, পূর্ণ শশি সম, শরতের নীলাম্বরে -


ডানপিঠে শিশুর উন্মুক্ত হাসির মাঝে খুঁজেছি

হারানো কিছু জীবনের পৃষ্ঠ, নিরুদেশ্য পথের ধারে,

শুনেছি ত্বম প্রণয়গান, জলপ্রপাতের বিহঙ্গম প্রবাহে

মহুয়া বনে শুনেছি, চেনা নিশি ডাক বহু বারে,

প্রতিচ্ছায়া মম, শুন্য নিয়ে করে কত আলোচনা,

আহত কবিতার অংশ, জেগে উঠে মৃদুল প্রহারে,

প্রেমের বৃতে ছিল অসংখ্য বিন্দু অবহেলিত -

বুকে লিপ্ত রয়েছে স্বপ্ন, , নগ্ন দেহ যেন আঁধারে,

- shantanu sanyal

সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত

ওরা আছে দেবতা কিম্বা দানব তারাই জানে


হাড় মাংসর শরীরে মানুষ থাকে এটাই সত্য,

চলন্ত জীবনে শুধুই দুই বেলার ক্ষুধার ছাড়া

অনেক কিছু দরকার, শ্বানসম জীবন বৃথা,

সহস্ত্র শতাব্দীর সভ্যতা ও সংস্কৃতির হ্বাসের পথে

ওরা এখন ও মুখোস নিয়ে কথা কয়,

চন্ডিমন্ডপে কর বদ্ধ প্রণাম করে, আবার

বিধর্মীর সম্মেলনে নিজেকে নাস্তিক বলে,

গাঙ্গেয় স্রোতের মাঝে সহস্ত্র হাত উঠে রয়েছে

তারা শান্তি চায়, অতৃপ্ত আত্মা পরিত্রাণ চায়,

শুধুই দেউলের বুকে অগ্নি, সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত !

তারা দানব কি মানব সময়ের হাতে,

অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্য চাই

যদি বাঁচতে চাও, মানবতা বাঁচাতে চাও,

হিংস মানুষ কিম্বা দানবের অস্তিত্ব

এই ধরা হইতে অভিশাপ মুক্ত কর --

জন অবতার দরকার, এক কৃষ্ণ, এক অর্জুন

না, কোটি কোটি অভিমন্যুর দরকার এই পথে //

-- শান্তনু সান্যাল







মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১০

মহাকাল রাত্রি

মহাকাল রাত্রি, তমস ঘন চত্বরে


অগ্নি পুরুষের আর্বিভাব -

ধ্বংস দেবালয়ে সহস্ত্র কন্ঠে নির্ভয়

সান্ধ্য পূজার কর আব্হান,

ত্রিশুল, খড়গ, হস্তে মুখে জয়ঘোষ

মহালয়ার নিশীথে অগ্নি ছুঁয়ে -

নিও আজ সপথ, দিও দেহদান,

তুমি কৃষ্ণ, তুমি সব্যসাচী, তোমার-

বীর্যে আছে জাতি অভিমান,

শাক্ত পন্থীর আবার মৃত্যু ভয় -

পুরুষ যদি আছ, আজ দিও প্রমান,

হে ভারত মায়ের গর্বিত সপুত

কুরুক্ষেত্রে আবার করো প্রস্থান,

দুর্যোধন, দুশ্শাসনের কুচক্রের হউক অন্ত

দ্রৌপদীর এলোচুলে আবার যেন

সাজে পদ্ম, শতদল ফুটুক পূর্ণ চন্দ্র

সম, হে ভরতবংশী করো আজ অগ্নিস্নান //

-- শান্তনু সান্যাল





 


ছদ্ম আবরণ

না হয় কিছু মিথ্যে, সাজিয়ে বলে যেতে


মধু মালতি লতার মাঝে কিছু নকল

পুষ্প ঝুলিয়ে যেতে, জানি যে প্রণয়ের

সুরভি চায় অনুতপ্ত, দগ্ধ, এক হৃদয় -না

হয় শুধু হাসির জালে ভুলিয়ে যেতে,

সজল নয়নে চেয়েছিলেম প্রতিশ্রুতি -

ফিরে আসবে বলে, পৃথিবী তো চাই নি

না হয় ছদ্ম আবরণ জড়িয়ে যেতে,

স্বপ্নময় ছিল যে অজানা জগতের রূপ

প্রেমের কল্পতরু কুসুমিত যেন শাখায়

শাখায়, না হয় নির্মম স্পর্শে সমস্ত

ভাবনার শিশির ঝরিয়ে যেতে,

রামধনু রঙ্গ চাই নি আমি কোনদিন,

না হয় ধুসর আকাশের কিছু ছায়া

জ্বলন্ত বুকে ভরিয়ে যেতে //

-- শান্তনু সান্যাল

রিক্ত নদীর ধারে

রিক্ত নদীর ধারে
বসে আছি একাকী সেই অনাম রিক্ত নদীর ধারে ,

শৈল চিত্রে কী কোন অজ্ঞাত ভাষায়, কবিতা

লিখে ছিলে, পড়তে গিয়ে দেখি বয়স কবে যে

অস্তাচলের পথে, সন্ধ্যা ত আর অপেক্ষা করে না

আঁধারে উড়ে যায় কিছু স্বরলিপি , সুর খুঁজে -

বেড়ায় মন,কার ভাসা ভাসা কন্ঠে এখন ও ,

শুনি মুখরিত রয়েছে ভালবাসার কিছু গান -

কে যেন ডাক দিয়ে যায়, অবশ্যই দ্বার গুলো

উন্মুক্ত রয়েছে, যুগ যুগান্তর ধরে সমান ভাবে -

জীর্ণ নিশিগন্ধার গায়ে ছোঁয়া ছোঁয়া মিষ্টি গন্ধ

হটাত উর্ধ মুখী, ধুপ যেন ছড়িয়ে ছে শেষ

জ্বলন্ত বুকে লয়ে মধুর আভাস, বেমৌসুম

বৃষ্টি ঝরে যায় নিস্তব্ধ রজনীর বৃক্ষে ,শেষ

প্রহরে সুকনো নদী সহসা যেন মহা প্লাবিত //

-- শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০

প্রতিদান

অশ্রুময় চোখে দিও না অর্ঘ্য


গহন আঁধারে কিছু দীপ ভাসিয়ে

ঘাটের চাতালে একাকী বসে

পথ চেয় না আমার,

শেষ নৌকার যাত্রী ফিরেছে কবে

মন্দিরে এখনো বৃন্দ গান

যেন উঠেছে ঝঞ্ঝা তুমুল কন্ঠে

প্রেমের আহুতি, ভষ্ম দেহ ও প্রাণ

নির্বন্ধ ছিল লুকোনো অনুরাগ

নদীর উতল ধারায় বিসর্জিত হলো

যুগের তৃষিত মান অভিমান

তুমি ছিলে, তুমি আছ, জানি একদিন

উদ্বেলিত মন পাবে অবসান

ফিরে যাও নীড়ে ক্ষনিক আবেশে

দিও না বন্ধু মহা প্রতিদান //

-- শান্তনু সান্যাল

হিংস দর্শন

আসন্ন প্রলয়ন্কারী চক্রবাতে


তুমি থাকবে মাঝ নদীর বুকে,

নৌকা ডুবির আগে যদি পারো

ঝাপ দিও, সুদূর তীরে পরিত্রাণ

পাবে, মুক্তির শিখা নিভি নি, এখনো

নদীর দুই ধারে আকাশ ভেঙেছে,

অনুতপ্ত মেঘের, বহু খন্ডিত দেউল,

বজ্রপাত থামি নি এখনো, ভাঙা

প্রতিমার অঙ্গে প্রতিশোধের অগ্নি

অবিরাম, সহস্ত্র দহনে জেগে আছে,

তোমার রচিত আগ্নেয় বলয়

প্রথমে তোমায় গ্রাস করবে,

হিংস মানুষের বলিদান চায়

মৌন সমস্ত দেব দেবীর আত্মা,

খুঁজে দেখো পূনর্জীবনের অমৃত,

যদি পেয়ে থাকো বাঁচিয়ে নিও

নিজের হিংস দর্শন --------------

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আসক্ত হৃদয়,

আসক্ত হৃদয়, মায়া মুক্তির পথে,


প্রাণের বাঁধন খুলতে দ্বিধা বোধ করে,

এখানে নিশ্বাস,দীর্ঘ রাতের পরে

কিছু খন থেমে থাকতে চায়,

সকালের বাতাসে প্রেমের কিছু গন্ধ,

অন্তরে ভেসে যায় মধুর পরিবেশে,

অর্ধ বিকশিত ফুলে, কার যেন

প্রতিচ্ছবি, অদৃশ্য শিকল পায়ে জড়িয়ে

যায় নিমিষে, আনমনা মন

আবার নব সন্ধির পথে অগ্রসর,

জীবনের ভাঙা গড়ার কাহিনী, ভালই

লাগে, দূর পাহাড়ের আঁকা বাঁকা

অরণ্য বিথিকায়,কুহাসা ঝির ঝির -

উড়ে যায়, সদ্য উদিত, সূর্যের নরম

স্পর্শ, হৃদয় ছুঁয়ে বলে -

শীত আসছে, ভালবাসা জড়িয়ে

রেখো যেন চিরদিন //

--- শান্তনু সান্যাল



বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ডাকনামের টান

সেই স্নেহভরা হাসিতে ছিল


বেদনার কিছু বিন্দু- বিসর্গ

ডাকনামের টান ও থাকে না কী,

বুঝতে বিলম্ব হলো, ফিরে দেখি -

শিমুলের গায়ে কাঁটা ছাড়া

ছিল ক একটা সোনালী তুলো,

পল্লব বিহীন গাছের ছায়া

পাখিরা আনমনা, উড়ে যায় পাস কেটে,

জীবনের পড়ন্ত বেলায়, জানি তারা

মিথ্যা আড়ালে আবার বাসবে ভালো,

সাঁঝের আগমনী, নিস্তব্ধ

শঙ্খ ধ্বনি,ধুপের বিলীনতা,

আপনজনের মুখে নতুন অভিনয়-

জেগে উঠবে, বেঁচে থাকার অদম্য উত্কন্ঠা,

কুড়োতে চায় আবার মন

নীল সাগরের কিছু ভাঙা ঝিনুক

সাজাতে ক্ষতি কী, স্নেহভরা হাসি যে

ফুরাতেই চাহে না,ডাকনামের টান !

চিরদিন জড়িয়ে থাকতে চায় বাহুপাশে //

-- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

শব্দবিহীন অভিব্যক্তি

শব্দবিহীন অভিব্যক্তি,অনেক সময় বলে যায়


গভীর কথা, যুগল অধর শান্ত নীল সমুদ্র,

দুই নেত্র অন্তরে স্পর্শ করে অগাধ ভাবে,

উচ্চ অট্টহাসির মাঝে, মুহুর্তে শুন্যতা ছেয়ে যায় /

শীতের পড়ন্ত বেলায়, মন চায় এক মুঠো রোদ,

যেন কিছু ক্ষন জানালায়,থেমে থাকুক আপনমনে

জীবনের মধুমাস খুবই চঞ্চল, কবে, কোন পথ হইতে

বাহির যাবে, উন্মুক্ত আকাশ সর্বদা নিরুত্তর /

--- শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১০

লাজুক প্রভাত( including english translation)


লাজুক প্রভাত


হৃদয়ের কোমল তন্তুর মাঝে

মধুরিম অনুভূতি,

প্রতিপলে বিভোর পরিধানে

প্রনয় জন্ম গ্রহন করে,

কখনো ছুঁতে চায় নীলিমার

অগুনিত আকাশকুসুম,

কার যেন দুই নয়নে, মায়াভরা

সন্ধ্যা নেমে আসে, লাজুক

থেমে থেমে, পদধ্বনির মাঝে,

শিহরিত রাকা উঠে যায় অম্বরে,

চন্দ্রমল্লিকার স্নিগ্ধ সুবাসে

পুরাতন স্পর্শ ভেসে যায়

নিশিগন্ধার অর্ধ বিলসিত বৃন্তে,

কিছু স্মৃতি অবাক চেয়ে থাকে

নিস্তব্ধ সেতার সহসা ঝঙ্কৃত,

অজানা ছায়াময় ভালবাসা

দুয়ার খুলে মিষ্টি মুখে,

স্বপ্ন গুলো জেদী, শিশু সম বায়না

ধরে রয়, চাঁদের উর্মি বেয়ে

যেতে চায় বহু দূরে, কোন

মধুময় প্রান্তরে, প্রীতির শিশির

যেন ঝরে,ঘুমন্ত জীবন জেগে রয়

নতুন ভোরে, পরিতৃপ্ত আলোর সন্ধানে //

-- শান্তনু সান্যাল

translation in english

the shy morning

into the delicate nerves

sweet experience is sprouted

every moment in new shape

desires want to touch the sky-

flowers, in some one s two eyes

magical evening is appeared

walking by hesitant steps

slowly moon rises

with daizy s fragrance

familiar touching immersed

into the bunch of tuber lilies

some memories silently looking

sitar recited itself

the unknown concealed love

opens the door with lovely smile

stubborn dreams want to walk

through the moonlight

wishing to go far away

in the beautiful land

drowsy life remained awaken

in the search of new dawn ,

শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ঐতিয্য

সতী দেহ লয়ে কাঁধে, মহাকাল সম


প্রেমের পরিনিতি, ছিন্ন ভিন্ন

অঙ্গ প্রত্যঙ্গ , আকাশ পথে হইতে

ঝরেছে ধরিত্রীর বৃক্ষে

স্নায়ু, মজ্জা,হাড়, মাংস, রুধির

বিন্দু বিন্দু প্রতিটি অংশ

ভুমিশাত করেছে ক্ষুদিত

কিছু নিশাচর মানুষ,

প্রগাড় রাত্রির পার্শ্বে উল্কাপাত,

পান্থশালার অনাম নামাবলী

নিশীথে জেগে উঠে ভয়াভয় রূপে,

দেহের গিদ্ধ ভোজ সারা রাত,

অরুনোদয়ে কুলিন মুখ করবদ্ধ

কালিঘাট মন্দিরে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে

পাপমুক্ত, কোন প্রবাহে বহে জীবন স্রোত

শুধুই মহাকাল জানে --

ঘোলাটে গাঙ্গধারা, প্রতিচ্ছবি অস্পষ্ট

ঘাটে ফেলানো কিছু অতীতের প্রস্তর খন্ড

ভাঙা বুড়ো শিবের দেউল

জটাধারী বট বৃক্ষ

ভেসে যায় স্থির তরঙ্গে সব ঐতিয্য ও

অর্ঘ্যের পুষ্প,

-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ফিরে যাও বন্ধু


ফিরে যাও বন্ধু , আগ্নেয়গিরির মুখে


ভালবাসার প্রতিশ্রুতি নিও না,

এখানে ফুল, মধু, নির্ঝর কিছুই নাই

শুধু ধুম্রময় আকাশ, বিষাক্ত বাতাস

জীবনের এলোমেলো ধ্বংশ স্তূপ,

চাঁদ উঠে, আপন মনে ডুবে যায়

অরণ্য বিথী কবে যে পুড়ে গেছে,

কিছু আধজ্বালা গাছের শাখায়

ঝুলানো রয়েছে স্বপ্ন মধুর,

অতীতের কিছু মাদল আর পদচিহ্ন

পদ্ম, সেউলি, মধুমালতী - -

ফুটে নিজের মনে, সুরুভি ছড়ায়

শরতের শেষে, মহানগরের বুকে --

আবার হারিয়ে যায় নিঃশব্দে, নিখোঁজ

কিছু মুখ হাত বাড়িয়ে বাঁচতে চায়,

মরাপুকুর, শুকনো নদীর বালু চর -

তাদের ঠিকানা চিরদিনের জন্য,

ভূমিগ্রস্ত করে, বন্যা ধুয়ে যায়

সমস্ত জানা অজানা মুখ, দেহ পরিনিত

হয় নতুন শল্খে গাথা যেন সরিসর্প,

দংশিত জীবন উঠে আসে আবার গুহার মুখে

বাঁচার প্রতিযোগিতায়, জলে বাস করলে

কুমির কে বাদ দেয়া এত সহজ নয় - বন্ধু //

-- শান্তনু সান্যাল

, আগ্নেয়গিরির মুখে


ভালবাসার প্রতিশ্রুতি নিও না,

এখানে ফুল, মধু, নির্ঝর কিছুই নাই

শুধু ধুম্রময় আকাশ, বিষাক্ত বাতাস

জীবনের এলোমেলো ধ্বংশ স্তূপ,

চাঁদ উঠে, আপন মনে ডুবে যায়

অরণ্য বিথী কবে যে পুড়ে গেছে,

কিছু আধজ্বালা গাছের শাখায়

ঝুলানো রয়েছে স্বপ্ন মধুর,

অতীতের কিছু মাদল আর পদচিহ্ন

পদ্ম, সেউলি, মধুমালতী - -

ফুটে নিজের মনে, সুরুভি ছড়ায়

শরতের শেষে, মহানগরের বুকে --

আবার হারিয়ে যায় নিঃশব্দে, নিখোঁজ

কিছু মুখ হাত বাড়িয়ে বাঁচতে চায়,

মরাপুকুর, শুকনো নদীর বালু চর -

তাদের ঠিকানা চিরদিনের জন্য,

ভূমিগ্রস্ত করে, বন্যা ধুয়ে যায়

সমস্ত জানা অজানা মুখ, দেহ পরিনিত

হয় নতুন শল্খে গাথা যেন সরিসর্প,

দংশিত জীবন উঠে আসে আবার গুহার মুখে

বাঁচার প্রতিযোগিতায়, জলে বাস করলে

কুমির কে বাদ দেয়া এত সহজ নয় - বন্ধু //

-- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১০

মুখোস

মুখোস


মুখরিত উচ্চ শিখরে অনুষ্ঠান


বিদেশী আতরে ভরা প্রগতি সদন,


দামী মদের ঝাক ঝাক বোতলে সুপ্ত


বিদেশী যত সব, আয়াতীত বিচারধারা /


পাশ্চাত্য ও পুরাতন সভ্যতার মিলন বিন্দু


দীর্ঘ ভাষণের পার্শ্বে শুধুই শুন্যতা,


অবিরল এক বৃদ্ধ গেয়ে যায়


অবনতির বিজয় গাথা, দাবি করে


সমাজের উন্নতির জন্য যেন পৃথিবীর


সমস্ত সুখ ছড়িয়েছে, আবার বহু দর্শক


মুখ চাপা দিয়ে হেসেই চলেছেন /


প্রগতির দর্পণ, মুখোসের আসল রূপ


দেখে নিজেই ভেঙে বহু কোণে


এই ভাবে বিলিন হলো যে হদিস পাওয়া


মুশকিল, মানবিকতার মশাল নিভে চলেছে,


আস্তে আস্তে অনুষ্ঠান শেষ মুখী,


দর্শক বিহীন মঞ্চে রয়েছে ক একটা


পুষ্প মালা আর সহস্ত্র মুখোস //


-- শান্তনু সান্যাল



সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০

স্বপ্নবৃন্তে বৃষ্টি ঝরায় অহর্নিশি

সে অপরূপ মায়া শুধায় প্রেমের উত্সর্গ


হয় তো আজ ও রয়েছে যিশুর পৃথিবী,

পদদলিত, অসুন্দর, অবহেলিত হৃদয়ে

তুমি আছো নিরব, মানুষের মাঝে,

করুনামুখী নির্ঝর দেখেছি সজল চোখে,

পরিত্যক্ত শিশুদের হাসি, জীবনের

ইতিকথা লিখে যায় হারানো পৃষ্ঠে,

অজানা দুটি হাত সহসা উঠে আসে

ভালবাসা জড়াতে চায়, মিষ্টি শীতের

গায়ে নরম যেন দিনান্তের শেষ আলো,

বাজারের নীলাম মঞ্চে,অদৃশ্য মুখ

সহসা বুকের কাছে জড়িয়ে বলে, ভয়

নাই তোমায় বিক্রয় হতে দেব না,

অনুরাগের চিকন আবরণে, ঝরিত

অশ্রু ধারা সে আত্মসাত করে সহজে,

কেমন করে, কীভাবে সে উঠে আসে,

আমি আজ ও বুঝতে পারি নি,

তার হটাত অকস্মাত আসা, মনের

স্বপ্নবৃন্তে বৃষ্টি ঝরায় অহর্নিশি //

--- শান্তনু সান্যাল

মুক্তির পথ

নিঃশব্দ পাখিরা উড়ে যায় অন্তরিক্ষে


ছায়াময় রাত্রি ঘুমন্ত পৃথিবী,

অন্তহীন অন্ধকার, যেন অশেষ প্রাচীন

এক গুহার মুখোমুখি আমার

অস্তিত্ব, বুকে পাষাণ বয়ে চলেছে --

চন্দ্র বিহীন আকাশ, নিরবতা সঘন

তবু যেন জাদুভরা চোখে তারাদের

আলো অজানা ভাষায় গল্প করে,

গোপন এক নদী একাকী বয়ে চলেছে

গন্তব্যহীন সাগর সঙ্গমে,বহু দূর -

আমাদের বন্ধুত্ব পুরাতন, আমি এবং

নদী প্রায: গল্প করি, তার কাহিনীর

কোনো ইতি নাই, শুনতে ভালো লাগে

এক বৃদ্ধ পুরোহিত, নাকি এক দিন

নিজের শ্রাদ্ধ নিজেই করতে গিয়ে বলে-

হে নদী, ছদ্ম যত সব আত্মীয়তা ছিল

মনের মাঝে তোমার অতল জলে তিলাঞ্জলি

দিয়ে মোহপাশের বাঁধন আজ খুলে দিলাম,

নদী নাকি মৌন উত্তর দিয়ে ছিল

এতই সহজ যদি হত, মুক্তির পথ -

যুগে যুগে অভিশাপিত জলরাশির ভার

আমিও যে কেন বয়ে যেতাম,

স্বেচ্ছায় শুকিয়ে দায়িত্য মুক্ত হতাম //

- - শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০

প্রতিশ্রুতির চিঠি

অন্তর্দ্বন্দের মাঝে প্রেম যে


কখন হারিয়ে গেল নিজেই জানি না

অনুতপ্ত হৃদয়ে একাকী ফিরে দেখি

বহু দূর তুমি ছায়া সম

বিলীন হয়েছ উতলা নদীর স্রোতে

ঘাটের সোপানে প্রতিশ্রুতির চিঠি

মিষ্টি কিছু সুন্দর মুচকি হাসি

চেনা চেনা দেহের গন্ধ

হটাত যেন ভেসে ওঠে /

প্রজাপতির পাখার স্পর্শ

হাতে রয়েছে এখনো কিছু

সেউলি গন্ধে মাখা মিলন বিন্দু

সাঁঝের আকাশে মেঘের চিত্রলিপি

এলোমেলো, অন্যমনস্ক বালুর চরে

কিছু পদ চিহ্ন

হটাত যেন ভেসে ওঠে /

ঘোলাটে স্বপ্নের চক্র ধারায়

শিশুদের কাগজের নৌকায়

তোমার প্রতিচ্ছবি কিংবা

হারানো চিত্রকরের শেষ কৃতি

জানি না কি যে হয় অলস সন্ধায়

নদীর বুকে হটাত স্মৃতি গুলো ভেসে ওঠে //

-- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০

হলাহল পান

হলাহল পান করা এত সহজ নয়


সূর্যের আলো তে উলঙ্গ দেহ

বৃতৃষ্ণা জাগায় হৃদয়ে

আবার গহন আঁধারে চরিত্র

নগ্ন হয় যায় সহজে

আত্ম বিশ্লেষণ করা খুবই

কঠিন, দুরুহ প্রতিক্রিয়া

সর্বদা নিজে কে ফাঁকি দিয়ে

দর্পণ কে দোষ দেয়া চলে না

খননে অনেক সময় নিজেই

ঝাপ দিয়ে যায় মানুষ

মৃগতৃষ্ণা ও সজল নদীর

প্রবাহে তপাথ কৃতিম নয়

ফাল্গু নদীর বুকে কবে যে

আবার জল রাশি ঢেউ তুলবে

সুজন মানুষ বারে বারে ভুল করে

না, বালুর তলে জল লুকানো থাকে

সে জানে ভালো ভাবে -

সঠিক মুহুর্তে পিন্ড দান করাই বুদ্ধিমতা,

অযথা প্রেতের অভিশাপ বয়ে নেয়া মুর্খতা //

--- শান্তনু সান্যাল

শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১০

ত্রিশূলের মুখে শীষ অর্পণ করে

হে রিপুদল নাশিনী,


সহস্ত্র বাহু ধারিণী

হে মাত, অগ্নিপুরুষ জন্ম দিও

যে মেদিনীর বক্ষে আগ্নেয় গিরি সম

অধর্মির রক্তে স্নান করে

দেবালয়ের রক্ষার্থ

ত্রিশূলের মুখে শীষ অর্পণ করে

হে মহামায়া জগত জননী

অগ্নি কন্যা জন্ম দিও

যে দ্রৌপদির এলো কেশে

প্রতিশোধের আগুন সাজাতে জানে

হেয় দেবী দুগ্ধ দিও না

শিশুর মুখে যেন অমৃত পড়ে

পৃথিবীর সমস্ত ব্যথিত

প্রতারিত, অপমানিত, তৃষিত

মানুষের মুখ চেয়ে

সে যেন প্রাণ বলিদান করে

হে জগত জননী, মা ভারতী

শুধুই অগ্নি পুরুষ ও অগ্নি কন্যা

জন্ম দিও ।

-- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১০

আমিও তো স্বজাতি

এই ভাবে জীবিত থাকা আত্ম হনন ছাড়া কিছু নাই


মেরুদন্ড বিহীন, তারা বলে তুমি বাঁচতে জানো,

আমি বলি তুমি মৃত,বেঁচে থাকার অধিকার

কখন তাহারা কেঁড়ে নিয়েছে, সে জানো ?

এই দেশে,পূর্বে তুমি বাঁচার জন্য

নিজের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তিত,

একই দেশে পশ্চিমে উন্নতির উদয়

তারা অনুদান দিয়ে গর্ভিত --

কারা বাঁচতে জানে আর কে প্রতি মুহুর্তে

মৃত্যু মুখী নিজেরাই বিচার কর,

যদি না, তাহলে পুড়িয়ে দাও সমস্ত ইতিহাস,

ভুলে যাও রবি, বঙ্কিম, শরত

তাহাদের আত্মা দুঃখ পাবে

যে জাতি নিজের অবন্নতি কে নিয়তি বলে

তাহাদের জন্য আত্মঘাত ছাড়া কোন

পথ নাই,চল আমিও বিষ পান করি - - -

আমিও তো স্বজাতি -- তা ভুলতে তো পারি না //

-- শান্তনু সান্যাল

পরজীবী


পরজীবী অমর বেল,ছদ্ম অনুরাগ



সহজে দেহচ্যুত করা যায় না


বট বৃক্ষ বাঁচাতে হলে, বন্য লতা

কেটে ফেলতে হয়, এটাই নিয়ম,


বন্য মোষ দল বেঁধে যদি এক হয়


সিংহ কুটুম্ব পথ খুঁজে পায় না,


মানুষ এখনো বিলুপ্ত হয় নি


পৃথিবীর বুকে রাজত্ব চরাচর,


মহাভারত মিথক তোমার চোখে

সাধারণ মানুষ অন্তরে কুরুক্ষেত্র


লয়ে বেঁচে আছে দিবা নিশি,


দাবানল বিক্ষিপ্ত পথিক অবিরাম


যদি ছড়ায় ভালো মন্দ ভুঝে না,


পথের সমস্ত বাধা সমুল নষ্ট করে


যায় নিমিষে,প্রকৃতির এটাই নিয়ম,


বৃহত কোন দর্শনের দরকার বৃথা //
-- shantanu sanyal

সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০১০

সতত অনুসন্ধান

নিস্তেজ, ভাষাহীন, দুটি অপলক চক্ষু


কী যেন খুঁজে সারাটা সময়,

রেলএর লাইনে,রাস্তার দু ধারে,

মন্দিরের ভাঙা সোপানে, শুধুই খুঁজে যায়

মানুষ কিম্বা অমানুষ, কেও হাসে, কেও দুঃখিত,

গ্রীষ্ম, শীত অথবা কাল বৈশাখী -- দুই নয়নে

ঝরে যায় প্রাচীন জমানো ব্যথা -- অবশ্যই

অশ্রু ধারার চিহ্ন নাই, অদৃশ্য জল স্রোত --

ভুমিকম্পিত স্মৃতির প্রান্তর, লোকেরা বলে

পাগল মহিলা, বলা তো সব থেকে সহজ

শুনেছি না কি, কুলীন কোন বংশের বধু

ছেলে আমেরিকায় কী লন্ডনে ----

সবাই তো আছে, শাখা -প্রশাখা

জানি না কী যে হারিয়ে গেছে ওনার,

নিস্তব্ধ মুখে তবু ও কোন অনুতাপ দেখি না

শুধুই খুঁজেন কখনো মাটিতে আবার

কখনো নীল আকাশে, সতত অনুসন্ধান //

---- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১০

নিজস্ব বলে কিছুই নাই

নিজস্ব বলে কিছুই নাই


প্রতিবন্ধিত রেল লাইনের দুই ধারে

কিছু চেনা অচেনা মুখ, জর্জরিত, ক্লান্ত

শুন্য চোখে শুধুই চেয়ে থাকে -

ঝগ ঝগ সুন্দর এক উচ্চ অট্টালিকা

প্রাঙ্গনে মৌসুমী ফুলের বাহার,

বস্তির সীমান্তে গর্বিত মুদ্রায়-

দাপটের সঙ্গে দাড়িয়ে আছে /

এলোমেলো, অস্পষ্ট চোখের ভাষা

তারা যেন কিছু বলতে চায়

কিম্বা কিছু ভুলতে চায়

ওদের নিজস্ব বলে তো আর

কিছু নাই,যা হারিয়ে গেলে দুঃখ হবে /

কখনো মনে হয় -- বিলুপ্ত প্রাণীর

অস্তিত্ব থাকা বা না থাকা, কোন

প্রশ্নই উঠে না, কার এত ফেলানো সময় আছে /

রাস্তার মাঝে,উড়ান পুলের নিচে,

ভাঙা ফুট পাথে,বৃহত ভাঙান গায়ে জড়িয়ে

সাঁঝের শেষে, পুরাতন কাগজের বিছানা

তারা ঘুমিয়ে পড়ে,

স্বপ্ন মিছিল ফিরে যায় মধ্য নিশীথে,

নিজস্ব বলে তো আর কিছু নাই-

তারা স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়েছে -

বহু কাল আগে //

-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০১০

উদ্ঘোষিত আর্যবৃত - -

এই ভগ্ন দেবালয়ের প্রস্তর
আবার হউক জাগৃত,
গোধুলি তে শঙ্খ ধ্বনি
তুলসী তলে পঞ্চ প্রদীপ
নির্ভয় সান্ধ্য বন্দনা
উদ্ঘোষিত আর্যবৃত
গুঞ্জরিত বিজয় গান,
মহাসিন্ধুর উচ্চ তরঙ্গে
ঋচা অভিমন্ত্রিত বহে
জ্ঞানামৃত - -
- - শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ১৬ আগস্ট, ২০১০

মেরু দন্ড বিহীন সমাজ

মেরু দন্ড বিহীন সমাজ


পুর্বাগ্রাহে গ্রসিত

এক পথিক বহু মুখী বিষধর

পূজা স্থলে করবদ্ধ

জীবন দানের করুনামুখি

...দিগ ভ্রমিত দর্শন

উন্মাদিত অনুযায়ী

রক্ত ও গরল অবিরাম প্রবাহিত

অদৃশ্য শক্তির জন্য

মানব রুধির

জানি না কি ভাবে

ঈশ্বর মহান ----

মানুষ মানুষের জন্য

মায়ের ভাষা এক দিন বলেছিল

আজ এই পথে ছড়ানো রক্ত

তোমায় প্রশ্ন করে -- কোথায়

দেখি তোমার মহান ঈশ্বর

যে করুনা করে -- জবাব চাই //

-- শান্তনু সান্যাল

বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০১০

বিরল কুসুম


বিরল কুসুম



যা ছিল কাছে দেহ ও প্রাণে


সবটাই তো দিলাম তোমায়


অবশেষ কিছুই নাই ----


ওই যেখানে আকাশ ও ধরণী মিলে


মহাসাগর হারায় বহু উচ্চ তরঙ্গ


ঝিনুকের বুকে লিখে যায়


প্রনয় লিপি -- অদৃশ্য অশ্রু বিন্দু,


পাহড়ের গায়ে ফাল্গুনী অগ্নিশিখা


দগ্ধ পায়ে খুঁজেছি বিলুপ্ত হৃদ,


সে এক বিরল বন্য কুসুম


অজস্র প্রনয় সুগন্ধে ভরা


যুগ যুগান্তরে ও যার অশেষ সুরুভি


নভ- জল - ভূ কে সুবাসিত করে,


খুঁজেছি অবিরাম--


যদি পেতাম তোমায় অবশেষে


প্রীতি শুভেচ্ছা সহ দিতাম /


--- শান্তনু সান্যাল



মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০১০

বোবা মানবতা - -

চেয়েছিল তারা এক সুন্দর ছবি আঁকতে
পদ্ম ভরা পুষ্করিণী, মধু মালতির
স্নিগ্ধতা, বিধর্মী বলে সরিয়ে
দিলে সহজে হাত, শরতের
পূর্ণ চন্দ্র, সিউলির
মাদকতা, নদ
নদীর উত্তল
তরঙ্গে,
মায়ের ভাষা তারা ভাসিয়ে এলো ব্যথিত
হৃদয়ে, ভাঙ্গা জীর্ণ শীর্ণ স্বপ্নের মন্দিরে
জানি আর সান্ধ্য প্রদীপ জ্বলে না,
জোছনা রাতে সুনেছি ঘৃনা
ঝরে কিছু চিত্রকর
অবশেষে,
 রাস্তার
মাঝে
মারা যায় প্রতিবেশী বন্ধুর হাতে, ভালই
হত যদি মায়ের ভাষা মৌন হয়ে
যেত এক দিন, বোবা মানবতা
বুকে লয়ে কত দিন দুনিয়া
বাঁচবে জানি না - -
- - শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০১০

সান্ধ্য প্রদীপ - -

সান্ধ্য প্রদীপ জ্বলে আজ ও অজানার
পথ চেয়ে, কোন উজানের পথে
হারালে প্রণয় নৌকা বেয়ে,
 শঙ্খ বেলায় ঈশান
কোনে মেঘের
উত্পাত,
পুনরায় কাটবে যামিনী শুন্য গগন
চেয়ে, সুদূর আম্রকুঞ্জে, প্রবাসী
পাখিরা ফিরে গেছে, নিরব
কোকিল, হিয়া কম্পিত
বিলম্বিত লয়ে, স্মৃতি
এখনো গাহে
প্রতিশ্রুতি  
ঈমন
রাগে, ভালোবাসার কিংশুক কুসুম
ঝরেছে অসময়ে - -
- - শান্তনু সান্যাল

রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০১০

কাচা প্রেম


তোমার কাচা প্রেম, ফুলদানি তে সাজিয়ে
ভুলে গেছি বহু দিন,
কখন যে রজনীগন্ধা শুকিয়ে
হারিয়ে গেছে স্মৃতি গন্ধ বাতাসে
ঠিক ঠিক আন্দাজ করা আজ মুশ্কিল,
বাসিফুলের সাথে নদীর ধারা
কখন যে হলো দিশাহারা
না আমিই জানি না তুমিই খোঁজ নিলে,
ফুলদানির উদাস মুখ
আর সইতে পারি নি
গত শীতের এক নিঝুম সন্ধ্যায়
হটাত দেখি সে দরজায় হাজির
হাতে সদয় প্রস্ফুটিত নিশিগন্ধা
মুখে রহস্যভরা হাসি
সে ফুলদানি নিজের হাতেই
সযত্নে সাজিয়ে গেল,
বাসী ফুলের গন্ধ,তুমিই জানো-
ব্ত্রিষ্ণা ভরিয়ে আনে বাতায়নে //
--- শান্তনু সান্যাল

শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০১০

অদৃশ্য রঙ্গমঞ্চ


অদৃশ্য রঙ্গমঞ্চ,মুখোশের খেলা
শ্রোতা দর্শক বিহীন, গভীর অন্ধকার
মাঝে মধ্যে অসামান্য চিত্কার
ধারাবাহিক নাটক, রাতের শেষ প্রহরে
রক্তিম ভোরে -
শ্বেত লাল রঙের কনা
ছেঁড়া অধবস্ত্র অশ্রু বিন্দু
নিভানো সিগারেট,রিক্ত মদ পাত্র
সাত সকালে, যত সব বিশ্রী গল্প
অভিব্যক্তি, অনুভূতি, সান্ত্বনা
পুলিসের ডায়রি,
সূর্যের আলোয় অভিনেতার
মহিলা কল্যাণ গৃহের উদ্বোধন ---
--- শান্তনু সান্যাল

বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০১০

ফিরে তো আর কেও দেখি নি --

ফিরে তো আর কেও দেখি নি --


ময়লা মাখা ছেঁড়া কাপড় জামায়

সে রাস্তায় দাড়িয়ে যুগান্তরে

এক সুগঠিত পুরুষ হলো

কত যে পূজার মিছিল, জিন্দাবাদ -

মুর্দাবাদ, দমকলের সায়রান

হরিবলের ধ্বনি, কাছে দিয়ে

মধুরীম কিংবা বিতৃষ্ণা ভরা দিন

কি ভাবে সরে দূর হলো সে

নিজেই জানে না --

বস্তির নর্দমা, চেনা গন্ধ

কাজের মেয়েদের ইশারা

নিম্নাঙ্গে অস্থিরতা,

ঘুপ আঁধারে সে ও মধুপান

করতে চায়, কিসের অশ্লীলতা

যৌবনের পরিভাষা

কোনো শ্রেণী ভেদ জানে না

স্বপ্নে শুধুই তোমাদের দাবি কেন ?

--- শান্তনু সান্যাল

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০১০

পুরাতন এলবাম

অলস পড়ন্ত বেলায় শীতের শিহরন সহজে


বেড়ে যায়, মধুর স্মৃতির ফুল ফোটানো শাল

গায়ে দিতে গিয়ে, ভালবাসা যেন ধুসর হারানো

পুরাতন এলবাম রঙ্গ বিহীন,আবছা- আবছা

বয়েসের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায় প্রণয়ের পৃষ্ঠে,

অকস্মাত বুকের ভিতরে কম্পন বেড়ে যায়

হাত দিতে যেন ভয়, যদি ছিড়ে যায় অযত্নে,

সাঁঝ নামতে না, নামতে ভগ্ন মন্দিরে জানি না

কোন অপরিচিতা প্রদীপ জ্বালিয়ে নিমিষে

সরে যায়ে রঙ্গিন মেঘের আড়ালে---

নিশীথের দাপাদাপি, মধ্যরাত্রি বিনিদ্র চোখে

পুষ্পিত শালের সব কুসুম ঝরে, বুকে আবরণ

আর দরকার হয় না,প্রেমের লেপে হারিয়ে যেতে

ভালই লাগে //

---শান্তনু সান্যাল

নিস্তব্ধ যামিনী

নিস্তব্ধ যামিনী, পিকাসোর একাকী গিটারিস্ট


মনের নিরবে আত্মমন্থন করে যায়

মোনালিসার হাসি ঝরে কোন-

সেউলি বনে, মাইকেল এঞ্জেলোর তুলিকা

কাচা ঘুম ভাঙ্গা শিশুর রোদনে, কিছু অর্থ

খুঁজে বেড়ায়, যিশুর সুপ্ত পলকে শিশির কনা

বিন্দু বিন্দু ঝরে যায়

সারি সারি সহস্ত্র মরিয়ম, হাতে মোমবাতি

ঝির ঝির আলোয় কোথায় যেন

মৌন মিছিল হেটে চলেছে-

এলোমেলো রূপে বৃদ্ধা,রুগী, পঙ্গু, জর্জরিতমুখ

সকাল এখন বহু দূর মরু প্রান্তে

রাজপথের দুই ধারে অর্ধ উলঙ্গ পুরুষ বৃন্দ

অবাক চেয়ে রয়েছে

পূর্ব আকাশ শ্যাম রক্তিম

চিরকুট মেঘের দল ছড়ানো চার দিগে //

---শান্তনু সান্যাল
পিকাসোর সেই একাকী গিটারিস্ট


নিরব ননের গভীরতায় মোনালিসার

হাসির রহস্য নিয়ে আত্মমন্থন করে যায়,

শেষ প্রহরে মাইকেল এঞ্জেলোর তুলিকা

সহসা জেগে ওঠে কাচা ঘুমের শিশুর

ব্যথাভরা রোদনে, যিশুর দুই সুপ্ত চোখে

অশ্রু, বিন্দু বিন্দু ঝরে যায় সারা রাত

দেখি নিস্তব্ধ রাজপথে সারি সারি

মরিয়মদের হাতে মিট মিট মোমবাতি,

মৌন মিছিল হেঠে চলেছে অদৃশ্য দিগন্তে

এলোমেলো বৃদ্ধা,পঙ্গু,রুগী, জর্জরিত মুখ,

সকাল এখন বহুদূর কোন মরুপ্রান্তে

রাস্তার দুই ধারে রোমনযুগীন অর্ধ উলঙ্গ পুরুষ

অবাক চেয়ে রয়েছে,

কোন দেশের যাত্রী, কী যা চায়-

---শান্তনু সান্যাল

সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০১০

স্পর্শ

নিস্তব্ধ রাত্রি, নিশিডাক সুনেছি গল্পে


ছায়ারা ও কথা বলে জেনেছি

তোমায় ভালোবেসে,

নিজের প্রতিবিম্বে অনন্য ছবি

দেখেছি বিভোর মনে,

নিশিগন্ধের স্পর্শ পেয়েছি

বহুবার অন্তর বাহির অঙ্গে,

উভয় লিঙ্গী অস্তিব নিয়ে

মনের দ্বন্দ ভুগেছি

তোমায় ভালোবেসে,

---শান্তনু সান্যাল